স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকে একজন ব্রাদারকে মারধর করেছে বহিরাগত এক যুবক। রবিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালে কর্মরত নার্স ও ব্রাদাররা কর্মবিরতি শুরু করেন। পরে বিকেল ৫টার দিকে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করান।
জরুরি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ ব্রাদার জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি বেলা তিনটার দিকে জরুরি বিভাগের একটি টেবিলে একজন রোগীর ড্রেসিং করছিলেন। তখন সাব্বির আহমদ নামের এক যুবক বাইরে থেকে আরেকজন রোগী নিয়ে টেবিল খালি করতে বলেন। জাহাঙ্গীর কাজ করছেন জানালে সাব্বির দ্রুত কাজ শেষ করে তাকে টেবিল দিতে বলে সেখান থেকে চলে যান। মিনিট পাঁচেক পর সাব্বির আবার এসে তাকে কাজ করতে দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। জাহাঙ্গীর প্রতিবাদ করলে তাকে ঝাপটে ধরে কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন সাব্বির। পরে অন্য সহকর্মীরা এসে তাকে উদ্ধার করেন।
জরুরি বিভাগের কর্মীরা জানান, সাব্বির হাসপাতাল পার্শ্ববর্তী হাছননগর এলাকার বাসিন্দা। তিনিসহ আর কয়েকজন যুবক এখানে দালালি করেন। বাইরে থেকে রোগী নিয়ে এসে তারা নিজেরাই কখনো ড্রেসিং বা প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে টাকা নেন। এদের কাছে জরুরি বিভাগের কর্মীরা জিম্মি হয়ে আছে। কোনো কিছু বললেই বাইরে গেলে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়। গত সোমবারও হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে একজন ওয়ার্ড বয়কে মারধর করা হয়েছে। হাসপাতালের কর্মীর এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। হাসপাতালের পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। এসব অন্যায় মেনে নেয়া যায় না।
পুলিশ সুপার তোফায়েল আহাম্মেদ বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। হাসপাতালে আর কোনো দালাল ঢুকতে পারবে না।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার হাসপাতালের এক্সরে কক্ষে আগে সিরিয়াল ভেঙে এক্সরে করে না দেয়ায় একই এলাকার বাসিন্দা আপ্তাব উদ্দিনের ছেলে ফরহাদ (৩৩) ও শিমুল (২৮) সেখানে এক ওয়ার্ড বয়কে বেধড়ক মারধর করে। এ ঘটনায় পরে ওয়ার্ডবয় পিয়াল হোসেন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।