মহাসিং নদীর চন্ডিডহর এলাকায় একটি সেতুর অভাবে দিরাই, শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সরকারের আমলে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও ৫৪ বছরেও এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলায়নি। একটি মাত্র সেতুর অভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকা-ে পিছিয়ে পড়েছে জেলার দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল একটি জনপদ।
মহাসিং নদীর তিন মোহনা ঘিরে অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষ প্রতিদিন পারাপারের জন্য নির্ভর করেন নৌপথ ও খেয়ানৌকার উপর। বর্ষায় নদীর ¯্রােত বেড়ে গেলে সেই পথও হয়ে ওঠে ঝুঁকিপূর্ণ। স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা সময়মতো বিদ্যালয়ে পৌঁছতে পারে না, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হয় দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে। এই বাস্তবতা আমাদের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের ভয়াবহ বৈষম্যের দিকটিই তুলে ধরে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিগত সরকারের সময়ে মহাসিং নদীর তিন মোহনায় সেতু নির্মাণ ও জগদল থেকে চন্ডিডহর পর্যন্ত সড়ক উন্নয়নের জন্য ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু ‘ব্যয়বহুল’ অজুহাতে সেই প্রস্তাব অনুমোদন পায়নি। অথচ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে কোটি কোটি টাকার অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে - যা দেখলে এই অঞ্চলের মানুষের ক্ষোভ ও হতাশা অমূলক নয়।
সম্প্রতি স্থানীয়দের উদ্যোগে তিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ মানববন্ধন করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এটি তাদের ন্যায্য দাবি এবং সময়ের দাবি।
আমরা মনে করি, একটি সেতু শুধু নদী পারাপারের সুবিধাই দেয় না, এটি একটি অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনে, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে, শিক্ষার আলো ও চিকিৎসার সেবা সহজলভ্য করে তোলে।
সরকারের কাছে আমাদের জোর আহ্বান- মহাসিং নদীর চন্ডিডহর সেতু প্রকল্পটি দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। একটি সেতুর অভাবে ৫ লাখ মানুষের উন্নয়নযাত্রা থমকে থাকা মেনে নেওয়া যায় না।