সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চলতি অক্টোবর মাসের মধ্যেই আড়াইশ আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করবে বিএনপি। কে কোন আসনে প্রার্থী হবেন - এই সময়ের মধ্যে দল থেকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে; অর্থাৎ সবুজ সংকেত দেওয়ার প্রক্রিয়া স¤পন্ন করা হবে। এতে করে দলের কোন্দল কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তফশিলের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। নানা দিক বিবেচনায় এবার সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির শীর্ষ কয়েক নেতার আসনে কাউকে সবুজ সংকেত দেবে না বিএনপি। পাশাপাশি মিত্র দল ও জোটের কয়েক শীর্ষ নেতার আসনেও একই কৌশল নেবে দলটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসাবে সোমবার মাগুরা, চট্টগ্রাম ও সুনামগঞ্জের কয়েকটি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের গুলশান কার্যালয়ে ডাকা হয়। তবে ঢাকা বিভাগ বাদে এখন যেসব আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ডাকা হচ্ছে, সেগুলোর বেশির ভাগই বিরোধ আছে। মনোনয়ন কেন্দ্র করে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা চলছে। এর আগে রোববার সিলেট বিভাগের চার জেলার মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের সঙ্গে গুলশান কার্যালয়ে মতবিনিময় করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে মনোনয়ন, নির্বাচনি প্রস্তুতি, প্রচারণাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দেন তিনি। মতবিনিময় সভায় দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, খুব শি¹িরই একক প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হবে। ঢাকা ছাড়া সব বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ডেকে এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ঢাকা বিভাগের আসনভিত্তিক সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও ডাকা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্নের জবাবে বলেন, চমক বলতে ইয়াং জেনারেশন এবার আগের চেয়ে আরেকটু বেশি অগ্রাধিকার পাবে। কারণ, তারা অনেক বেশি অ্যাকটিভ। নারীরাও যথেষ্ট অগ্রাধিকার পাবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এলাকায় সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থীরাই বিএনপির মনোনয়ন পাবেন। একই আসনে অনেক প্রার্থী থাকতে পারেন। সেগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি জনগণের কাছে কার অবস্থান ভালো। এলাকায় কে বেশি জনপ্রিয়, সেই খোঁজখবর নিচ্ছি। এজন্য তৃণমূল থেকে শুরু করে অনেকের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। সিনিয়র নেতারা যার যার দায়িত্ব পালন করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গুলশান কার্যালয়ে ডাকা অন্তত দশজন সম্ভাব্য প্রার্থী জানিয়েছেন, প্রায় প্রতিটি আসনে ৪ থেকে ৫ জন করে মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন। এর মধ্যে থেকে যাচাই-বাছাই করে ২ থেকে ৩ জন মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ডাকা হয়। সভায় বিএনপির মহাসচিব দলীয় একক প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনার জন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্দেশনা দেন।
সিলেট বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক স¤পাদক জি কে গউছ বলেন, তাদের সঙ্গে বৈঠক বলা হয়েছে একক প্রার্থী দেওয়া হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জনগণকে সন্তুষ্ট এবং ভোটারদের মন জয় করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কয়েকটি আসনে ইতোমধ্যে দলের হাইকমান্ড থেকে একক প্রার্থীকে ফোন করে মাঠে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বগুড়ার সাতটি আসনের মধ্যে পাঁচটির সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কথা বলে তাদের ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির দায়িত্বশীল এক নেতা গণমাধ্যমকে বলেন, জেন-জি ও তারুণ্যের এবার ভোট বেশি। সে বিবেচনায় এবার তরুণ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তরুণ নেতাদের প্রার্থী করা হলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত হবে। তবে প্রার্থী নির্ধারণে যদি ভুল সিদ্ধান্ত হয়, সেক্ষেত্রে ওইসব আসনে প্রার্থীর বিজয় না-ও হতে পারে।