কী আছে জুলাই সনদে

আপলোড সময় : ১৮-১০-২০২৫ ০৭:৫৪:০৭ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৮-১০-২০২৫ ০৭:৫৪:০৭ পূর্বাহ্ন
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: ঐতিহাসিক জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এ স্বাক্ষর করেন তারা। গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম ধাপে গঠন করা ৬টি সংস্কার কমিশনের (সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে হওয়া এসব আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য হয় রাজনৈতিক দলগুলো। এরপর এই ৮৪ প্রস্তাবকে অন্তর্ভুক্ত করে জুলাই সনদের খসড়া তৈরি করে ঐকমত্য কমিশন। খসড়ার ওপর আবার আলোচনা হয়, বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হয়। সব দলের মতামত পর্যালোচনা করে অবশেষে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ লিখিত আকারে চূড়ান্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত মঙ্গলবার সনদের চূড়ান্ত কপি সব রাজনৈতিক দলকে দেওয়া হয়। শুক্রবার ঐতিহাসিক এই জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। জুলাই সনদ প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, ৪০ পৃষ্ঠার এই নথিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে- যেখানে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমল, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান উল্লেখ রয়েছে। এই সনদে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৭৫ সালে সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। সনদে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনাবলির পর ১৯৭৮ সালে বহুদলীয় ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের মাধ্যমে শুরুহওয়া ১৯৭৯ সালের সংসদীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ গণতন্ত্রে ফিরে আসে। তবে, সেই গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা স্বল্পস্থায়ী ছিল। সনদে আরও তুলে ধরা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে নির্দিষ্ট ব্যক্তি, পরিবার এবং গোষ্ঠীর পক্ষে স্বৈরাচারী অনুশীলনের আধিপত্য ছিল। এই সনদে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের টানা তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের সমালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এগুলো নির্বাচন ব্যবস্থাকে দুর্বল করেছে, বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং জনপ্রশাসনকে রাজনীতিকরণ করেছে এবং দুর্নীতিকে সহজতর করেছে। এই সনদে গত ১৬ বছরের ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতিফলনও দেখা গেছে। যার মধ্যে রয়েছে ২০১৮ সালের সড়ক নিরাপত্তা আন্দোলন, কোটা বিরোধী আন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার নেতৃত্বাধীন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানে পরিণতি লাভ করে। এই সনদে একটি সাত দফা প্রতিশ্রুতি রয়েছে, যেখানে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের এটিতে সই করার এবং গণতান্ত্রিক নীতি এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের বিদ্রোহে প্রকাশিত জনগণের ইচ্ছাকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com