
সামছুল ইসলাম সরদার ::
এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় সুনামগঞ্জ জেলার প্রতিটি কলেজে ফলাফল বিপর্যয়ে হতাশ অভিভাবক।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর সুনামগঞ্জ জেলার ১২ হাজার ৫৩৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৫ হাজার ৭৬৫ জন পাশ করেছে। পাশের হার ৪৭.৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ ফেল করেছে ৬ হাজার ৭৭০ জন শিক্ষার্থী - যা মোট পরীক্ষার্থীর ৫২.৬৫ শতাংশ। এই বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে বলা যায়, জেলার অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকের বাধা পেরুতে পারেনি। অথচ গত বছর এই পাশের হার ছিল ৮৬.৯৪ শতাংশ - এক বছরের ব্যবধানে ৩৯.৫৯ শতাংশ কমে যাওয়া দেশের কোনো জেলায় নজিরবিহীন।
ফলাফলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক - জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিকেও দেখা গেছে বড় ধস। ২০২৪ সালে সুনামগঞ্জে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪৩৬ জন, কিন্তু ২০২৫ সালে এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬০ জন। এক বছরে ৩৭৬ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর পতন - যা ৮৬ শতাংশ হ্রাস।
সেরা প্রতিষ্ঠান: জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে সবচেয়ে এগিয়ে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ, যেখানে ৩২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাশের হারে শীর্ষে দোয়ারাবাজার উপজেলার সমুজ আলী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, যেখানে পাশের হার ৯৪.৬৪ শতাংশ। উপজেলার মধ্যে শাল্লা সবার আগে পাশের হারে।
সবচেয়ে খারাপ ফলাফল: দোয়ারাবাজারের প্রগতি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ-৭৩ জনের মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ৪ জন (৫.৪৮%), দিরাইয়ের রজনীগঞ্জ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ-৪৭ জনের মধ্যে পাশ ৩ জন (৬.৩৮%), ধর্মপাশার গোলকপুর হাজী এ. হাফেজ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ-১৫ জনের মধ্যে পাশ ১ জন (৬.৬৭%) এছাড়াও জেলায় ২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশের হার ৩০ শতাংশের নিচে।
একাধিক অভিভাবক ফলাফল বিপর্যয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা অনেক আশা নিয়ে সন্তানদের কলেজ পাঠাই যাতে তারা লেখাপড়া করে ভালো রেজাল্ট করে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করে। এবারের ফলাফল আমাদের হতাশ করেছে। কারণ একজন অভিভাবক তার সন্তানের লেখাপড়ার পরিবেশ সৃষ্টি ও ব্যয়ভার মেটাতে কষ্ট করে। তাদের ভালো রেজাল্ট হলে আমাদের এ কষ্ট থাকতো না। এর আগে এমন খারাপ রেজাল্ট কখনো হয়নি। আমরা চাই ছাত্র শিক্ষক ও অভিভাবক মিলে লেখপড়ার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি এবং কলেজে রীতিমতো ক্লাস হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
এ বিষয়ে দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জীব সরকার বলেন, আশানুরূপ রেজাল্ট হয়নি। আগামীতে ভালো রেজাল্ট করতে সবাই মিলে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।