
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সকল দলের প্রতি বিভাজন সৃষ্টি না করার এবং গণভোট বা পিআর ব্যবস্থার দাবিতে আন্দোলন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে বলেন, নির্বাচনটা হতে দেন, দেশের মানুষ বাঁচুক। দেশের মানুষকে বাঁচাতে তাড়াতাড়ি ভোট হতে দিন। নির্বাচনটা করতে দেন, নির্বাচিত সংসদ আসুক।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন ইউনিয়নে গণসংযোগের অংশ হিসেবে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে বলেন, গত ১৫ বছর তাকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাইরে থাকতে হয়েছে, জেলখানায় থাকতে হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ১১ বার তিনি জেলে গেছেন এবং সাড়ে তিন বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। তার মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ভয়ের চোখে দেখতেন বলেই তাকে কারাগারে যেতে হতো।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণ যে প্রার্থীকে ভোট দেবেন, তিনি সংসদে গিয়ে আপনাদের জন্য কথা বলবেন। এবারের নির্বাচন একটু ভিন্ন, যেখানে পার্লামেন্টে দুইটা কক্ষ থাকবে, উচ্চ ও নিম্নকক্ষ। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে নিম্নকক্ষে দলীয় মনোনয়ন ও সরাসরি ভোটে প্রার্থীরা নির্বাচিত হবেন। আর উচ্চকক্ষে আলেম সমাজ, বিজ্ঞ ব্যক্তি, হিন্দু-বৌদ্ধসহ সকল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন। তার মতে, সবাই মিলে থাকাটাই বাংলাদেশ। শত ফুল ফুটতে দাও। সকল ফুল ফুটলে সৌরভটা ছড়ায় যাবে।
তিনি হিংসার রাজনীতির বিরোধিতা করে বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান বিভেদ চাই না, সবাই মিলে থাকতে চাই। শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রই বিএনপির চাওয়া। ভাগাভাগি আর না করেন, ক্ষতি অনেক হয়েছে। সৌহার্দ্য ভ্রাতৃত্বের মধ্যে থাকতে চাই সবাই।
জুলাই সনদ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এ সনদে স্বাক্ষর করা হবে। তিনি এটাকে ‘ঘরের নতুন টিন লাগানোর’ সাথে তুলনা করেন। তার ভাষ্যে, দেশের রাজনীতি সংস্কার করতে হবে, সেজন্যই সংস্কার করছি আমরা। তিনি আরও জানান, যে প্রস্তাবগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলোতে স্বাক্ষর হবে, আর যেগুলো হয়নি সেগুলো জনগণের সমর্থন নিতে হবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ক্ষমতায় গেলে তার দল ১ কোটিরও বেশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে, ফ্যামিলি কার্ড দেবে এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে বিশেষ গুরুত্ব দেবে।
যারা পিআর বা গণভোটের দাবিতে আন্দোলন করছেন, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা ভন্ডুল করতে চায় নির্বাচনকে। সবাই ভোট দিতে চায়। দয়া করে নির্বাচনটা করতে দেন, নির্বাচিত সংসদ আসুক, পরে এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, হিংসার রাজনীতি করতে চাই না। একটা মানুষও যেনো গুলি খেয়ে না মরে।