জনবল সংকটে ভুগছে হাওরের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা

শিক্ষা কর্মকর্তার ৬৩ পদের ৪৬টিই শূন্য

আপলোড সময় : ১৪-১০-২০২৫ ০৭:৫৯:৫১ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৪-১০-২০২৫ ০৮:০২:২৫ পূর্বাহ্ন
শামস শামীম::
সুনামগঞ্জে জনবল সংকটে বিঘিœত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের স্কুল পরিদর্শন কার্যক্রম। ফলে নিয়মিত নজরদারির বাইরে রয়ে যাচ্ছে স্কুলের পাঠদান ব্যবস্থাপনা। কর্মকর্তার পাশাপাশি কর্মচারী না থাকায়ও দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষকরা এসে অফিসে সময়মতো সেবা পাচ্ছেন না। এতে সময় ও অর্থ অপচয় হচ্ছে তাদের। জনবল সংকটের কারণে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ বহুমুখি সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে। বিলম্বিত হচ্ছে দাপ্তরিক কাজ।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে ২জন সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ১ জনও নেই। ১২টি উপজেলার ১২ জন শিক্ষা অফিসার থাকার কথা থাকলেও মধ্যনগর উপজেলায় কোনও শিক্ষা অফিসার কর্মরত নেই। জেলায় উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারের ৬৩টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ১৭ জন। উচ্চমান সহকারী ১২ জনের মধ্যে ২ জন, অফিস সহকারী ২৩ জনের মধ্যে ৫ জন, হিসাব সহকারী ১১ জনের মধ্যে ৯ জন কর্মরত আছেন। ১২ জন অফিস সহায়কের মধ্যে ১ জনও কর্মরত নেই। লোকবল না থাকায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসগুলো বিভিন্ন স্কুল থেকে শিক্ষক এনে অফিস সহকারীর কাজ চালাচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট স্কুলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, সুনামগঞ্জ দুর্গম জেলা। প্রতিটি উপজেলা সদরেই উপজেলা শিক্ষা অফিসের অবস্থান। দুর্গম গ্রাম থেকে বিদ্যালয়ের প্রয়োজনে অফিসে আসতে গিয়ে পুরোদিন নষ্ট হয়ে যায়। এর মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকলে সময় ও অর্থের অপচয় হয় এবং কাজও সম্পন্ন হয় না। যার ফলে একদিকে স্কুলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে জরুরি সেবাও মিলছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা নিয়মিত নিজ নিজ ক্লাস্টারে স্কুল পরিদর্শন করার কথা। স্কুলের পাঠদান ব্যবস্থাপনা, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও স্কুল পরিচালনার ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য বিষয় দেখভাল করেন তারা। কিন্তু জেলায় ৪৬ জন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। ফলে নিয়মিত স্কুল ভিজিট বন্ধ রয়েছে। পরিদর্শনের অভাবে স্কুলগুলো মনিটরিংয়ের বাইরে রয়ে যাচ্ছে। এতে নির্দেশনা থেকে পিছিয়ে আছে স্কুলগুলো।

সুনামগঞ্জ জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি হারুন রশিদ বলেন, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসগুলো জনবল সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে। এতে প্রশাসনিক কাজ বিলম্বিত হওয়ার পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শাহজাহান সিরাজ বলেন, আমরা দুর্গম এলাকায় শিক্ষকতা করি। স্কুলের জরুরি প্রয়োজনসহ অফিসের কাজেও মাঝে-মধ্যে অফিসে হয়। কিন্তু জনবল না থাকায় কাজগুলো বিলম্বিত হচ্ছে। জনবল কাঠামো অনুযায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারী না থাকায় বহুমুখি সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন অফিসগুলো।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন, আমাদের জেলায় উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের ৪৬টি পদই খালি আছে। এতে কাজ চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে আমরা নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবগত করি। আশা করি আগামী নিয়োগে এই শূন্য পদগুলো পূরণ করা হবে।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com