
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সরকারি খাসজমি, পরিত্যক্ত হাটবাজার, পৌরসভা, পাহাড়ি অঞ্চলে ২০ হাজার ভূমিহীন, গৃহহীন, ঠিকানাহীন পরিবার পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে গুচ্ছগ্রাম-৩য় পর্যায় (ক্লাইমেট ভিকটিমস রিহ্যাবিলিটেশন প্রজেক্ট) শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পকিল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৭৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পুরো ব্যয় নির্বাহ করবে সরকার।
সম্প্রতি শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশনে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রকল্পটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কৃষি, পানি স¤পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কমিশন বিবেচনায় নিলে প্রকল্পটি শিগগির জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উত্থাপন করা হবে।
বৈঠকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি জানান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৮৮ থেকে জুন ২০১৪ পর্যন্ত মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ৮৭৩টি ছিন্নমূল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারি খাসজমিতে পুনর্বাসন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ২০ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসনের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু কোন জেলায় বা উপজেলায় কতজন গৃহহীনকে পুনর্বাসন করা হবে, তা প্রকল্পে নেই। তাই জেলাভিত্তিক ভূমিহীন ও গৃহহীনদের সংখ্যার ভিত্তিতে প্রস্তাবিত প্রকল্পের সুবিধাভোগীর সংখ্যা নির্ধারণ করা যেতে পারে।
বৈঠকের সভাপতি মত দেন, সুবিধাভোগী নির্বাচনে ভূমিহীনদের সংখ্যা এবং সরকারি খাসজমি প্রাপ্যতার হারের ভিত্তিতে জেলা ও উপজেলা ভিত্তিক সুবিধাভোগী নির্বাচন করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য ও জেলা প্রশাসনের তথ্যের সমন্বয়ের মাধ্যমে ভূমিহীনদের সংখ্যা নির্ধারণের পরামর্শ দেন।
সভায় বিস্তারিত আলোচনার পরে সরকারি খাস জমির প্রাপ্যতা এবং গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা বিবেচনায় প্রকল্প এলাকা নির্ধারণ এবং জেলা ও উপজেলা ওয়ারি সুবিধাভোগীর সংখ্যা নির্ধারণপূর্বক তা ডিপিপিতে সংযোজনের সিদ্ধান্ত হয়।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আদর্শগ্রাম প্রকল্প-১, আদর্শগ্রাম প্রকল্প-২, গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প-১ এবং গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প-২ প্রকল্প ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়ে থাকে। ইতোপূর্বে স¤পন্ন বেশ কিছু প্রকল্প নদীতে বিলীন হয়ে গেছে, আবার এমন অনেক জায়গায় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বসবাসের উপযোগী নয়।
এ প্রসঙ্গে সভাপতি প্রস্তাবিত প্রকল্পের স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে গ্রোথ সেন্টারের কাছাকাছি বসবাসের উপযোগী এবং টেকসই ও সুবিধাজনক স্থান নির্বাচনের বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। সভায় বিস্তারিত আলোচনার পরে প্রকল্প স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব গ্রোথ সেন্টারের পাশে এবং ভাঙনপ্রবণ এলাকা পরিহারের বিষয়ে একমত পোষণ করা হয়। এ ছাড়া, প্রস্তাবিত প্রকল্প স্থানের জমির নির্দিষ্ট দাগ ও খতিয়ান ডিপিপিতে সংযোজনের বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়।