
মো. শাহজাহান মিয়া ::
জগন্নাথপুরে বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ে গ্রাহকেরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। এতে বিদ্যুৎ চুরিকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যখন থেকে জগন্নাথপুরে ব্যাটারি চালিত গাড়িগুলোর আগমন ঘটেছে, তখন থেকেই বিদ্যুৎ চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই গ্রাহকদের লোডশেডিং সমস্যা থেকে রেহাই দিতে বিদ্যুৎ চুরি রোধে অভিযান চলছে।
জগন্নাথপুর বিদ্যুৎ অফিস সূত্র জানান, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জগন্নাথপুর উপজেলার জন্য নির্দিষ্ট হারে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়ে থাকেন। যা দিয়ে জগন্নাথপুর বাসীর বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ হওয়া সম্ভব। তবে অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চুরির কারণে প্রতিনিয়ত বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে চাই। কিন্তু বিদ্যুৎ চুরির কারণে তা হয়ে উঠছে না। তাই বিদ্যুৎ চুরি রোধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
তারা জানান, গত প্রায় এক মাস আগে সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ চুরি আমরা শনাক্ত করেছি। এছাড়া প্রতিনিয়ত অভিযানে ছোট-খাটো বিদ্যুৎ চুরি রোধ করছি। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গত ৩ সেপ্টেম্বর তারিখ রাত ১২:৩১ মিনিটে জগন্নাথপুর পৌর শহরের হবিবপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলীর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। জগন্নাথপুর আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) আজিজুল ইসলাম আজাদের নেতৃত্বে জাহাঙ্গীর আলীর ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের চার্জিংয়ের গ্যারেজে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে ২৪টি টমটম ২টি ইজিবাইক ও ৩ টি ইলেকট্রিক কাভার্ড ভ্যানসহ ২৯টি গাড়ি অবৈধভাবে বাইপাস বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করে চার্জিংয়ের দায়ে তার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তার সংযোগে ১০ কিলোওয়াট লোড বরাদ্দ থাকলেও দীর্ঘদিনের রিচার্জ প্যাটার্ন ব্যবহৃত লোডের কোন সামঞ্জস্যতা না থাকায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে এ অভিযান চালানো হয়। ঘটনাস্থলে জাহাঙ্গীর আলী ২৯টি ব্যাটারি চালিত গাড়িতে মিটার বাইপাস করে একাধিক অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করে ভাড়ায় গাড়ি চার্জ করে হাতেনাতে ধরা পড়েন এবং তিনি দায় স্বীকার করেন। পরে বিদ্যুৎ চুরির সকল আলামত সহ জাহাঙ্গীর আলীর বিরুদ্ধে মিটার হতে রেকর্ডকৃত ডাটা নিরীক্ষা করে বিদ্যুৎ আইন ২০১৮ অনুযায়ী ২২ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৪ টাকা ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করা হয়।
এ বিষয়ে ১০ অক্টোবর শুক্রবার জগন্নাথপুর আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) আজিজুল ইসলাম আজাদ জানান, জাহাঙ্গীর আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে কিস্তির মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করছেন। এছাড়া বিদ্যুৎ চুরি রোধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।