
বিশ্বজিত রায়::
আগামী ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাবনা ঘিরে সরগরম হাওর-ভাটির জেলা সুনামগঞ্জ। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সদ্য শেষ হওয়া দুর্গাপূজায় মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে সম্প্রীতি ভাগাভাগি করেছেন প্রার্থীরা। দুর্গম হাওরাঞ্চলে গিয়েও প্রার্থীরা দিয়েছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
তথ্যানুসন্ধানে জেলার ৫টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনী তৎপরতাসহ মনোনয়ন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তরুণ ও নবীন প্রার্থীদের সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে মনে হয়েছে। যদিও দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে এখনও কাউকে কোন সংকেত দেওয়া হয়নি। তবে জামায়াতে ইসলাম, খেলাফত মজলিস তাদের একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
সে অনুযায়ী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
সুনামগঞ্জ - ১ : ধান, মাছ, খনিজ সম্পদ ও পর্যটনে সমৃদ্ধ সুনামগঞ্জ-১ আসন (জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, মধ্যনগর)। এখানে আছে বাগলি, বড়ছড়া, চারাগাঁওসহ তিন শুল্ক স্টেশন। দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাঙ্গুয়া ছাড়াও জেলার সবচেয়ে বেশি হাওর, জলমহাল ও বালুমহাল আছে এই আসনটিতে। আয়তনের দিক দিয়েও সুনামগঞ্জ-১ সিলেটের নাম্বার ওয়ান। তাই এ আসনে জনপ্রতিনিধি হতে মুখিয়ে থাকেন অনেকে। ৪ লাখ ৬২ হাজার ৭৬০ ভোটারের (সর্বশেষ জরিপ মতে) এ আসনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক চাইছেন কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নজির হোসেনের স্ত্রী সালমা নজির, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুল হক, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল, ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দী, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন। জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী জেলা আমীর তোফায়েল আহমদ খাঁন, খেলাফত মজলিসের মনোনীত প্রার্থী ফজর আলী, কমিউনিস্ট পার্টির অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদারও আছেন প্রচারণায়।
সুনামগঞ্জ - ২ : দিরাই-শাল্লা উপজেলা নিয়ে ‘হেভিওয়েট’ আসন সুনামগঞ্জ-২। যেখানে দল নয়, সর্বদা ব্যক্তি ভাবমূর্তিই প্রাধান্য পেয়েছে। হাওরাঞ্চলে ‘জাল যার জলা তার’ আন্দোলনে সফল সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সেই ‘হেভিওয়েট পার্সন’। ভোটের রাজনীতিতে তুমুল জনপ্রিয় সুরঞ্জিত ছিলেন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য। এ আসন থেকে সাতবার নির্বাচন করেছেন তিনি। মৃত্যুর পরও ব্যক্তি ইমেজের ভাটা পড়েনি তাঁর। সেই সুবাদে স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্তা এই আসনে দলীয় মনোনয়নসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও একাধিকবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। ‘সুরঞ্জিতের আসন’ খ্যাত সুনামগঞ্জ-২ যতটা হেভিওয়েট উন্নয়নে ততটা ওয়েটফুল না। এ আসনের শাল্লা এখনও জেলার তলানির উপজেলা হিসেবে বিবেচিত। যোগাযোগবিচ্ছিন্ন শাল্লার উন্নয়নে সেই ‘হেভিওয়েট’ তকমা সমুন্নত রাখতে নতুন মুখ এখন মাঠে সক্রিয়। দিরাই-শাল্লার ২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৯৮ জন ভোটারের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। আলোচনার শীর্ষে আছেন জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী শিশির মনির। নতুন দল এনসিপি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রথম সারির ছাত্রনেতা অনিক রায়ও আছেন আলোচনায়। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরী, ১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে সাংসদ হওয়া বিচারপতি (অব.) মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি, যুক্তরাজ্য প্রবাসী তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেলও বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন। এছাড়া জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের নেতা ড. শুয়াইব আহমদ, খেলাফত মজলিস মনোনীত সাখাওয়াত হোসেন মোহনও গণসংযোগ করছেন।
সুনামগঞ্জ-৩: সুনামগঞ্জের আরেক হেভিওয়েট আসন সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ)। অতীতে স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী পেয়েছে প্রবাসী অধ্যুষিত এই আসন। প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ, প্রতিমন্ত্রী ফারুক রশিদ চৌধুরী ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নানের উত্তরসূরী হিসেবে বেশ কয়েকজন আছেন নির্বাচনী প্রচারণায়। বিএনপির মনোনয়ন পেতে মাঠে সক্রিয় যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ। তাঁর মনোনয়ন ঠেকাতে একাট্টা যুক্তরাজ্যের সুইন্ডন বিএনপির সভাপতি এমএ কাহারের নেতৃত্বাধীন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাদির আহমদ, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) সৈয়দ আলী আশফাক সামি বলয়। তাদের পক্ষ থেকে এই চারজনের একজনকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি থাকলেও কয়ছর এম আহমেদ বলয়ও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৪ ভোটারের এই আসনের প্রার্থী জামায়াতে ইসলাম মনোনীত সিলেট মহানগরীর পেশাজীবী শাখার আমীর অ্যাড. ইয়াসিন খান, খেলাফত মজলিস মনোনীত শেখ মুশতাক আহমদ, জমিয়তে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা হাম্মাদ আহমদ গাজীনগরী, সাবেক এমপি মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী।
সুনামগঞ্জ-৪ : সংসদীয় ৩০০ আসনের একটি সুনামগঞ্জ-৪ (সুনামগঞ্জ সদর-বিশ্বম্ভরপুর)। জেলা শহর সুনামগঞ্জ এই আসনের অন্তর্ভুক্ত। মরমি কবি হাসন রাজার স্মৃতিধন্য সুনামগঞ্জ হাওরাঞ্চলের অঘোষিত রাজধানী। সম্ভাব্য নির্বাচনের ঢেউ লেগেছে হাওর পারের সেই রাজধানীতে। বাদ যায়নি বিশ্বম্ভরপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলও। গণসংযোগে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের নজরদারিতে রাখছেন এখানকার ৩ লাখ ৪১ হাজার ৮৩৩ জন ভোটার। এ আসনে ধানের শীষ প্রত্যাশীরা হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. ফজলুল হক আছপিয়ার ছেলে ব্যারিস্টার আবিদুল হক আবিদ, জেলা বিএনপির স্বাক্ষর ক্ষমতাপ্রাপ্ত সদস্য অ্যাড. আব্দুল হক, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নূরুল ইসলাম নূরুল, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল মনসুর শওকত। জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী আইনজীবী মুহাম্মদ শামস উদদীন, খেলাফত মজলিস মনোনীত মাওলানা আমিরুল ইসলামও আছেন আলোচনায়।
সুনামগঞ্জ-৫ : শিল্পনগরী খ্যাত ছাতক, সীমান্তবর্তী উপজেলা দোয়ারাবাজার নিয়ে সুনামগঞ্জ-৫ আসনের অবস্থান। এখানকার ছাতক উপজেলা ব্রিটিশ আমল থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ। পাশাপাশি টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ড ও মুক্তিযুদ্ধকালীন শহীদের স্মৃতি বিজড়িত দোয়ারাবাজার উপজেলা সৌন্দর্য্যরে এক লীলাভূমি। জেলার সবচেয়ে বেশি ৪ লাখ ৮৮ হাজার ১০০ ভোটারের এই আসনও সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর। সুনামগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সাংসদ কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী। মিজান ও মিলনের শক্তিশালী দুই বলয় মাঠে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী ছাড়াও প্রচারণায় আছেন খেলাফত মজলিস মনোনীত মাওলানা আবদুল কাদির, ইসলামী আন্দোলন জেলা শাখার সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা হাবিবুল্লাহ আশরাফী, খেলাফত মজলিসের (মামুনুল হক) মাওলানা সাদিক সালিম, স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব মো. জাহাঙ্গীর আলম।
আগামী ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাবনা ঘিরে সরগরম হাওর-ভাটির জেলা সুনামগঞ্জ। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সদ্য শেষ হওয়া দুর্গাপূজায় মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে সম্প্রীতি ভাগাভাগি করেছেন প্রার্থীরা। দুর্গম হাওরাঞ্চলে গিয়েও প্রার্থীরা দিয়েছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
তথ্যানুসন্ধানে জেলার ৫টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনী তৎপরতাসহ মনোনয়ন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তরুণ ও নবীন প্রার্থীদের সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে মনে হয়েছে। যদিও দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে এখনও কাউকে কোন সংকেত দেওয়া হয়নি। তবে জামায়াতে ইসলাম, খেলাফত মজলিস তাদের একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
সে অনুযায়ী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
সুনামগঞ্জ - ১ : ধান, মাছ, খনিজ সম্পদ ও পর্যটনে সমৃদ্ধ সুনামগঞ্জ-১ আসন (জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, মধ্যনগর)। এখানে আছে বাগলি, বড়ছড়া, চারাগাঁওসহ তিন শুল্ক স্টেশন। দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাঙ্গুয়া ছাড়াও জেলার সবচেয়ে বেশি হাওর, জলমহাল ও বালুমহাল আছে এই আসনটিতে। আয়তনের দিক দিয়েও সুনামগঞ্জ-১ সিলেটের নাম্বার ওয়ান। তাই এ আসনে জনপ্রতিনিধি হতে মুখিয়ে থাকেন অনেকে। ৪ লাখ ৬২ হাজার ৭৬০ ভোটারের (সর্বশেষ জরিপ মতে) এ আসনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক চাইছেন কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নজির হোসেনের স্ত্রী সালমা নজির, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুল হক, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল, ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দী, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন। জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী জেলা আমীর তোফায়েল আহমদ খাঁন, খেলাফত মজলিসের মনোনীত প্রার্থী ফজর আলী, কমিউনিস্ট পার্টির অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদারও আছেন প্রচারণায়।
সুনামগঞ্জ - ২ : দিরাই-শাল্লা উপজেলা নিয়ে ‘হেভিওয়েট’ আসন সুনামগঞ্জ-২। যেখানে দল নয়, সর্বদা ব্যক্তি ভাবমূর্তিই প্রাধান্য পেয়েছে। হাওরাঞ্চলে ‘জাল যার জলা তার’ আন্দোলনে সফল সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সেই ‘হেভিওয়েট পার্সন’। ভোটের রাজনীতিতে তুমুল জনপ্রিয় সুরঞ্জিত ছিলেন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য। এ আসন থেকে সাতবার নির্বাচন করেছেন তিনি। মৃত্যুর পরও ব্যক্তি ইমেজের ভাটা পড়েনি তাঁর। সেই সুবাদে স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্তা এই আসনে দলীয় মনোনয়নসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও একাধিকবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। ‘সুরঞ্জিতের আসন’ খ্যাত সুনামগঞ্জ-২ যতটা হেভিওয়েট উন্নয়নে ততটা ওয়েটফুল না। এ আসনের শাল্লা এখনও জেলার তলানির উপজেলা হিসেবে বিবেচিত। যোগাযোগবিচ্ছিন্ন শাল্লার উন্নয়নে সেই ‘হেভিওয়েট’ তকমা সমুন্নত রাখতে নতুন মুখ এখন মাঠে সক্রিয়। দিরাই-শাল্লার ২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৯৮ জন ভোটারের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। আলোচনার শীর্ষে আছেন জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী শিশির মনির। নতুন দল এনসিপি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রথম সারির ছাত্রনেতা অনিক রায়ও আছেন আলোচনায়। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরী, ১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে সাংসদ হওয়া বিচারপতি (অব.) মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি, যুক্তরাজ্য প্রবাসী তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেলও বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন। এছাড়া জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের নেতা ড. শুয়াইব আহমদ, খেলাফত মজলিস মনোনীত সাখাওয়াত হোসেন মোহনও গণসংযোগ করছেন।
সুনামগঞ্জ-৩: সুনামগঞ্জের আরেক হেভিওয়েট আসন সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ)। অতীতে স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী পেয়েছে প্রবাসী অধ্যুষিত এই আসন। প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ, প্রতিমন্ত্রী ফারুক রশিদ চৌধুরী ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নানের উত্তরসূরী হিসেবে বেশ কয়েকজন আছেন নির্বাচনী প্রচারণায়। বিএনপির মনোনয়ন পেতে মাঠে সক্রিয় যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ। তাঁর মনোনয়ন ঠেকাতে একাট্টা যুক্তরাজ্যের সুইন্ডন বিএনপির সভাপতি এমএ কাহারের নেতৃত্বাধীন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাদির আহমদ, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) সৈয়দ আলী আশফাক সামি বলয়। তাদের পক্ষ থেকে এই চারজনের একজনকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি থাকলেও কয়ছর এম আহমেদ বলয়ও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৪ ভোটারের এই আসনের প্রার্থী জামায়াতে ইসলাম মনোনীত সিলেট মহানগরীর পেশাজীবী শাখার আমীর অ্যাড. ইয়াসিন খান, খেলাফত মজলিস মনোনীত শেখ মুশতাক আহমদ, জমিয়তে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা হাম্মাদ আহমদ গাজীনগরী, সাবেক এমপি মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী।
সুনামগঞ্জ-৪ : সংসদীয় ৩০০ আসনের একটি সুনামগঞ্জ-৪ (সুনামগঞ্জ সদর-বিশ্বম্ভরপুর)। জেলা শহর সুনামগঞ্জ এই আসনের অন্তর্ভুক্ত। মরমি কবি হাসন রাজার স্মৃতিধন্য সুনামগঞ্জ হাওরাঞ্চলের অঘোষিত রাজধানী। সম্ভাব্য নির্বাচনের ঢেউ লেগেছে হাওর পারের সেই রাজধানীতে। বাদ যায়নি বিশ্বম্ভরপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলও। গণসংযোগে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের নজরদারিতে রাখছেন এখানকার ৩ লাখ ৪১ হাজার ৮৩৩ জন ভোটার। এ আসনে ধানের শীষ প্রত্যাশীরা হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. ফজলুল হক আছপিয়ার ছেলে ব্যারিস্টার আবিদুল হক আবিদ, জেলা বিএনপির স্বাক্ষর ক্ষমতাপ্রাপ্ত সদস্য অ্যাড. আব্দুল হক, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নূরুল ইসলাম নূরুল, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল মনসুর শওকত। জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী আইনজীবী মুহাম্মদ শামস উদদীন, খেলাফত মজলিস মনোনীত মাওলানা আমিরুল ইসলামও আছেন আলোচনায়।
সুনামগঞ্জ-৫ : শিল্পনগরী খ্যাত ছাতক, সীমান্তবর্তী উপজেলা দোয়ারাবাজার নিয়ে সুনামগঞ্জ-৫ আসনের অবস্থান। এখানকার ছাতক উপজেলা ব্রিটিশ আমল থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ। পাশাপাশি টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ড ও মুক্তিযুদ্ধকালীন শহীদের স্মৃতি বিজড়িত দোয়ারাবাজার উপজেলা সৌন্দর্য্যরে এক লীলাভূমি। জেলার সবচেয়ে বেশি ৪ লাখ ৮৮ হাজার ১০০ ভোটারের এই আসনও সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর। সুনামগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সাংসদ কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী। মিজান ও মিলনের শক্তিশালী দুই বলয় মাঠে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী ছাড়াও প্রচারণায় আছেন খেলাফত মজলিস মনোনীত মাওলানা আবদুল কাদির, ইসলামী আন্দোলন জেলা শাখার সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা হাবিবুল্লাহ আশরাফী, খেলাফত মজলিসের (মামুনুল হক) মাওলানা সাদিক সালিম, স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব মো. জাহাঙ্গীর আলম।