অনিরাপদ সড়ক -পর্ব-৩

সড়কে বেড়েছে রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ির দৌরাত্ম্য : লাগাম টানবে কে?

আপলোড সময় : ০৭-১০-২০২৫ ০৮:২৬:৫৬ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৭-১০-২০২৫ ০৩:১৮:৩৪ অপরাহ্ন
শহীদনূর আহমেদ ::
সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক ও অভ্যন্তরীণ উপজেলা সড়কসহ গ্রামীণ সড়কগুলোতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রেজিস্ট্রেশনবিহিনী বিভিন্ন ধরনের যানবাহন।
জেলা শহরসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দখল করে নিয়েছে অনুমোদিত সিএনজি চালিত অটোরিকসা, নিষিদ্ধ ‘রোহিঙ্গা’ সিএনজি, নিষিদ্ধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের যান। গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলাচল করছে অবৈধ ট্রলি গাড়ি। এছাড়াও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে নিষিদ্ধ পরিবহনের নিরাপদ স্টেশন হয়ে দাঁড়িয়েছে সুনামগঞ্জের সড়কগুলো।
সূত্র বলছে, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে অর্থনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে রেজিস্ট্রেশনবিহীন পরিবহন সড়কে পাচ্ছে অলিখিত বৈধতা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সুনামগঞ্জ কার্যালয় সূত্র জানা যায়, সুনামগঞ্জে রেজিস্ট্রেশনকৃত সিএনজি চালিত অটোরিকশা রয়েছে ৪ হাজার ৭২৩টি, থ্রি-হুইলার ২৫৭টি, মোটর সাইকেল ১০ হাজার ৯৪২টি, জিপগাড়ি ৫৫টি, প্রাইভেটকার মাত্র ৭টি, পিকআপ ভ্যান ৩৭ টি, ট্রাক ৪টি, বড় বাস ২টি, মিনিবাস ২৩টি, মাইক্রোবাস ১৩টি এবং ১২টি অ্যাম্বুলেন্সের রেজিস্ট্রেশন রয়েছে।
সূত্র বলছে, সরকারি হিসেব অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনকৃত বিভিন্ন পরিবহনের সংখ্যা মাত্র ১৬ হাজার ৭৫টি হলে বাস্তব রেজিস্টশনবিহীন পরিবহন রয়েছে এর কয়েক গুণ। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়কে বৈধ-অবৈধ মিলে চলাচল করছে অন্তত ১৫ হাজার সিএনজি চালিত অটোরিকশা, সমপরিমাণ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, ৪০ হাজারের বেশি মোটরাইকেল ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, ট্রলি,বাস, মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য যানবাহন রয়েছে কয়েক হাজার। তবে রেজিস্ট্রেশনবিহীন পরিহনের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বিআরটিএ, ট্রাফিক বিভাগসহ পরিবহন শ্রমিক-মালিক সংগঠনের কাছে।

সুনামগঞ্জ জেলা সিএনজি চালিত অটো রিকসা বেবী-টেক্সী ও টেক্সীকার মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের সংগঠনের অডিট চলমান আছে। অডিট শেষ হলে সঠিক তথ্য দেওয়া যাবে। আনুমানিক সিএনজি ২০০০টি রয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো যানবাহন আমাদের নেই। দিরাই, শাল্লার কিছু অংশ, সাচনা-মান্নানঘাট, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জ অংশে আমাদের পরিবহন চলে। বাকি সড়কের তথ্য আমাদের জানা নেই।
সুনামগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমদ বলেন, পাঁচটি সমিতির আন্ডারে সড়কে আমাদের ৫'শ বাস চলাচল করছে। আমাদের একটি গাড়িও রেজিস্ট্রেশনের বাইরে নেই। সড়কে চলাচলরত সিএনজি চালিত অটোরিকশার বেশিরভাগই রেজিস্ট্রেশনবিহীন। এসব পরিবহন কিভাবে চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনার কারণ সিএনজি ও ইজিবাইককে দায়ি করেছেন জুয়েল আহমদ।
এদিকে সড়কে ফিটনেসবিহীন পরিবহন, অনুমোদনহীন যান চলাচলের ফলে ঘটছে অহরহ দুর্ঘটনা। শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, পথচারী, চালকসহ অসংখ্য মানুষ জীবন দিয়ে খেসারত দিলেও টানা যাচ্ছে না এসব অবৈধ যানবাহনের লাগাম। সচেতন নাগরিকরা জানান, অবৈধ যানবাহনের কারণে জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়কসহ উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কে দেখা দিচ্ছে বিশৃঙ্খলা ও যানজট। এসব যান চলাচলে পথচারীদের দুর্ভোগ চরমে। সড়কের মোড়ে মোড়ে এবং সড়কের ওপর যত্রতত্র ইজিবাইক, সিএনজি পার্কিং করে যাত্রী ওঠানো নামানো হয়। এরা আইনকানুনের তোয়াক্কা করে না।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের টিআই মো. হানিফ বলেন, সড়কে কোনো অবৈধ পরিবহন থাকবে না। আমি এখনো সুরমা সেতুতে অভিযানে আছি। আমরা অবৈধ পরিবহনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com