
স্টাফ রিপোর্টার ::
ধর্মপাশা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে ছুরিকাঘাতে শরীফা আক্তার (২৬) নামের এক নারীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তার প্রাক্তন স্বামী আক্তার হোসেনকে (৪০) আটক করা হয়। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
শরীফা আক্তার নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার দেওথান গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে। আক্তার হোসেন ধর্মপাশার সদর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের আব্দুল হেকিম মির্জার ছেলে।
শরীফার পরিবার জানিয়েছে, যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন আক্তার হোসেন। এ জন্য শরীফা গত ১২ জুলাই তাকে তালাক দেন। এ ঘটনার পর থেকে পারিবারিক বিরোধ চলছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার দেওথান গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে শরীফার সঙ্গে ধর্মপাশার কান্দাপাড়া গ্রামের হেকিম মীর্জার ছেলে আক্তার হোসেনের বিয়ে হয় ১০ বছর আগে। তাদের সাড়ে তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে। এক বছর ধরে পারিবারিক নানা বিষয়ে দাম্পত্য কলহ চলছিল। ছয় মাস আগে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পরে আক্তার হোসেন তার মেয়েকে নিজের হেফাজতে পাওয়ার দাবিতে গত ৮ সেপ্টেম্বর শরীফার মা, দুই বোনসহ তিনজনের নামে ধর্মপাশা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মামলার হাজিরা দিতে সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে আদালত চত্বরে উপস্থিত হন শরীফাসহ তার আত্মীয়-স্বজন। এ সময় আদালত চত্বরে আইনজীবীর পরামর্শের জন্য অপেক্ষা করছিলেন শরীফা আক্তার। একপর্যায়ে আকস্মিকভাবে পেছন থেকে এসে আক্তার হোসেন শরীফার পিঠে ছুরিকাঘাত করেন। পালানোর চেষ্টা করলে আদালত চত্বরে উপস্থিত লোকজন তাকে ধরে ফেলেন এবং পুলিশের কাছে ছুরিসহ হস্তান্তর করেন।
অপরদিকে, আহত শরীফাকে দ্রুত ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শরীফার ছোট ভাই লিমন মিয়া বলেন, হাসপাতালে বেলা দুইটার দিকে চিকিৎসকেরা বোনকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ নেওয়া হয়েছে। তিনি বোনের হত্যাকারীর ফাঁসি চান।
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, স্বামীর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত শরীফা আক্তার সোমবার বেলা দুইটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় স্বামী আক্তার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ধারালো ছুরিটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।