সম্পাদকীয়::
গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪) বিকাল ৪টায় সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছনরাজা মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলার সকল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিপ্লবের পরে যখন বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে তখন আমরা ছাত্ররা দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে একটা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছি। আমরা যখন গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণা দিয়েছিলাম তখন আমরা স্পষ্ট করেছিলাম এই ফ্যাসিবাদকে আমরা বিদায় করবো এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাকে আমরা বিনষ্ট করবো। যতদিন না পর্যন্ত এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলুপ্ত হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন ও সংগ্রাম বহাল থাকবে। এর ধারাবাহিকতায় আমরা মনে করছি প্রত্যেকটা জেলায় যারা আন্দোলনে যুক্ত ছিলো তাদের সুসংগঠিত করা জরুরি। এ জন্যই আমরা প্রত্যেকটা জেলা সফর করছি। ... আজকে মতবিনিময় সভা করার উদ্দেশ্য ছিল, সবার সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেয়া- যে কিভাবে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে কাজ করা যায়।
এসময় গত কদিন আগে গঠিত ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশপ্রেমিক মানুষদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক কমিটিও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চায়। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের জন্যই এই নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই সংগঠনটির আত্মপ্রকাশের সময় তারা বলেছে তাদের লক্ষ্য তারা একটা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চায়। [...] আমরা চাচ্ছি সিস্টেমের পরিবর্তন। আর এই সিস্টেমের পরিবর্তনের জন্যই জাতীয় নাগরিক কমিটি কাজ করবে। আর কেন্দ্র থেকেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এই নাগরিক কমিটি জেলা, উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। খুব শীঘ্রই কেন্দ্রীয় কমিটি সকল জেলা-উপজেলা সফরে আসবেন এবং কমিটি দিবেন।’
এবংবিধ বক্তব্যের পর সম্পাদকীয়তে বিস্তারিত বলার কোনও অবকাশ থাকে না। বিষয়টা আসলেই জটিল আর কঠিন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তা যতো কঠিনই হোক, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আছি এবং থাকবো। কেবল বলে রাখি যে, ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটাতে হলে বিত্তবান ধনিক শ্রেণির স্বার্থ হাসিল করে যে- রাজনীতিক ধারা তার বিরুদ্ধে গিয়ে সন্ত্রাসবাদী একনায়কত্ব, গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা বিনাশী রাজনীতি তথা বলপ্রয়োগের দ্বারা জনগণের উপর শাসন-শোষণ কায়েম রাখার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে লড়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনসহ বৈষম্যবিরোধী আর্থসামাজিক ব্যবস্থার পত্তন করতে হবে। অর্থাৎ এমন রাজনীতিক ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে হবে, যে-ব্যবস্থার পরিসরে জনগণ থাকবে রাষ্ট্রশাসন ক্ষমতার কেন্দ্রে এবং আইনে বিধিবদ্ধ নাগরিকদের স্বাধীনতা ও সমানাধিকার নিশ্চিত হবে পরিপূর্ণভাবে।