ক্রেতারা দিশেহারা

৪০০ ছাড়িয়েছে কাঁচা মরিচ, শতকের কাছাকাছি বেশিরভাগ সবজি

আপলোড সময় : ০৪-১০-২০২৫ ০৮:২৭:৩৪ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৪-১০-২০২৫ ০৮:২৭:৩৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :: সুনামগঞ্জে কাঁচামরিচের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহেও ২০০ টাকার আশেপাশে ছিল। হঠাৎ করে দামের এমন দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এছাড়া অন্যান্য সবজির দামও শতকের কাছাকাছি। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজার থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে বলেই তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে পাইকারি বিক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের বক্তব্যে দামের গড়মিল থাকার কারণে অসাধু সিন্ডিকেটের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে বৃষ্টিপাতকে দায়ী করছেন। তাঁদের মতে, টানা বৃষ্টি হওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে, যার ফলস্বরূপ কাঁচামরিচসহ অন্যান্য সবজির দাম বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতাগণ দ্রæতই দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে বলেও জানান তাঁরা। তবে বাজারে ক্রয়-বিক্রয়ের মেমো সংক্রান্ত তথ্য গোপন রাখা এবং খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের বক্তব্যে ফারাক থাকায় মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সিন্ডিকেটের কারসাজির অভিযোগ রয়েছে। পৌর শহরের কিচেন মার্কেটের খুচরা সবজি বিক্রেতা আরপিননগরের বাসিন্দা সুমন মিয়া প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন ৫০০ টাকা। তিনি জানান, শহরের পাইকারি বাজারের মাসুক মিয়ার ‘মেসার্স আজিজুল ট্রেডার্স’ থেকে তিনি পাইকারি ৪০০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ কিনেছেন। যে কারণে তিনি খুচরা পর্যায়ে ৫শ টাকা প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন। তবে কাঁচামরিচ ক্রয়ের কোনো মেমো দেখাতে পারেননি তিনি। একই চিত্র দেখা গেল জেল রোডের খুচরা সবজি বিক্রেতা লায়েক হোসেনের দোকানে। তিনি বলেন, মাসুক মিয়ার মেসার্স আজিজুল ট্রেডার্স থেকে ২ কেজি মরিচ ৮০০ টাকা দিয়ে পাইকারি এনেছি। খুচরা ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। বেশি দামে কিনতে হয় তাই বেশি দামেই বিক্রি করছি। অন্যদিকে, পাইকারি বিক্রেতা মেসার্স আজিজুল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মাসুক মিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি পাইকারি প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৩৫০ টাকা করে বিক্রি করছেন। তাঁর দাবি, অনেকেই তাঁর দোকান থেকে মরিচ না কিনলেও কেউ জিজ্ঞেস করলে তাঁর নাম বলে। জেলার কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ স¤পাদক জহির মিয়া বলেন, পণ্যের কোয়ালিটি অনুযায়ী দামের কিছুটা পার্থক্য থাকে। এজন্য কেউ ৪শ কেউ আরেকটু বেশি দামে কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন। শহরের নতুনপাড়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০ টাকা দিয়া ৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ কিনছি। গত ৩-৪ দিন আগেও ২০ টাকায় ১শ গ্রাম কাঁচামরিচ কিনছি। হঠাৎ করে দাম দ্বিগুণ হয়ে গেল। বাজারে কোনো কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখার দাবিও জানান তিনি। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচামরিচের পাশাপাশি অন্যান্য সবজির দামও চড়া। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়, টমেটো ১২০-১৪০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস (প্রকারভেদে) ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মূলা প্রতি কেজি ৭০ টাকা, কাকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাক, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, শসা ৬০ টাকা। এছাড়াও চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ডুগি প্রতি হালি (প্রকারভেদে) ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আসা ক্রেতা শহরের জামতলার বাসিন্দা আব্দুল লতিফ বলেন, শুধু কাঁচামরিচ না সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করলে এভাবে অস্বাভাবিকভাবে দাম কখনোই বাড়তো না। হাসননগরের বাসিন্দা তানজিম আহমেদ বলেন, হঠাৎ করে কাঁচামরিচের দাম এমনভাবে বেড়েছে যা একদম অস্বাভাবিক। ব্যবসায়ীরা অনেকসময় বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা লাভ করে। অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, বাজার স্থিতিশীল রাখতে নিয়মিত মনিটরিং করার পাশাপাশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। কোনো অবস্থায় সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে পণ্য বিক্রি করার সুযোগ নেই।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com