শহীদনূর আহমেদ ::
তীব্র আকার ধারণ করেছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। দিনে-রাতে কোনো সময়ই নির্বিঘেœ বিদ্যুৎ সরবরাহ মিলছে না। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সুনামগঞ্জের মানুষজন। ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যের।
ভুক্তভোগীরা জানান, শহুরে বিদ্যুৎ ভোগান্তি কিছুটা কম হলেও হাওরের গ্রামীণ জনপদে বিদ্যুতের সীমাহীন ভোগান্তি। দিন-রাত মিলিয়ে ১৪-১৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় কষ্টে আছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দারা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মানুষজন। এছাড়া কষ্ট পোহাচ্ছেন শিশুসহ বয়স্করা।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদা অনুপাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় লোডশেডিং বিপর্যয়ে পড়তে হয়েছে। সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং দেখা দিচ্ছে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় গড়ে ৪০-৫০ শতাংশ লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে গ্রাহকদের অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুতের ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ কিছুটা স্বাভাবিক রাখা হলেও গ্রাম পর্যায়ে যাচ্ছেতাই অবস্থা। তবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুতের এ সমস্যা জাতীয় সমস্যা। সিলেট অঞ্চলে সরবারহ কম থাকায় বাধ্য হয়েই লোডশেডিং বিপর্যয়ে মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৪ লাখ। গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ প্রয়োজন ৬৫-৭০ মেগাওয়াট। কিন্তু চলতি সময়ে বিদ্যুতের উৎপাদন কম থাকায় বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩০-৩৫ মেগাওয়াট। পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ চাহিদা থাকলে সরবরাহ করা যাচ্ছেনা কাক্সিক্ষত সেবা। দিনে গড়ে ৫০-৬০ শতাংশ লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার মিলন কুমার কুন্ডু বলেন, জাতীয়ভাবে বিদ্যুতের সমস্যা চলছে। তেল, গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ কম থাকায় উৎপাদন কমে গেছে, এতে বেড়েছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা। সরবরাহ কম থাকায় সিলেট অঞ্চলে বিপর্যয় বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করছি লোডশেডিং সিডিউল ঠিক রাখতে, কিন্তু পারছি না। জাতীয়ভাবে সমস্যার সমাধান না হলে এর উপায় দেখছিনা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু নুয়মান জানান, বোর্ডের আওতায় সুনামগঞ্জে গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৩৭ হাজার। যেখানে ১২-১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন সেখানে মিলছে ৮-৯ মেগাওয়াট। পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। গড়ে ৪০ শতাংশ লোডশেডিং হচ্ছে। তবে গ্রাহকদের কষ্ট কমাতে সরবরাহ অনুযায়ী বিদ্যুৎ সেবা প্রদানে আমাদের আন্তরিকতার কমতি নেই।