
স্টাফ রিপোর্টার ::
সড়ক দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। শনিবার বেলা ১১টার দিকে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দুজন হলেন জেলা প্রশাসনের জারিকারক মো. ছমিরুল হক জুয়েল মিয়া (৩৭) ও মো. সবদর আলী (৩৭)। জুয়েল মিয়া দোয়ারাবাজার উপজেলার আমবাড়ি সাউদেরগাঁও এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহিদের ছেলে এবং মো. সবদর আলী সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগর এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
জানা যায়, সরকারি ডাকপত্র নিয়ে জগন্নাথপুর যাওয়ার পথে জয়কলস এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তারা। জুয়েল মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং তার সাথে থাকা সবদর আলীকে গুরুতর আহত অবস্থায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেটে প্রেরণ করেন এবং সিলেটে যাওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
জয়কলস হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুমন কুমার চৌধুরী জানান, শনিবার সকালে জেলা প্রশাসনের জারিকৃত নোটিশ নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে (সুনামগঞ্জ-হ-১১-৬১৬১) জগন্নাথপুরে যাচ্ছিলেন জুয়েল মিয়া ও সবদর আলী। শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস এলাকায় পৌঁছলে সিলেট থেকে আসা নাম্বার প্লেটবিহীন প্রাইভেট কারের সাথে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। এসময় সড়কে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই ছমিরুল হক জুয়েল মারা যান এবং গুরুতর আহত হন সবদর আলী। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে সিলেটে রেফার করেন। সিলেট যাওয়ার পথেই প্রাণ হারান সবদর আলী।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় একজন স্পটেই মারা যান, সিলেটে নিয়ে যাওয়ার পথে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহগুলো তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান জানান, দুজনই জেলা প্রশাসনের জারিকারক ছিলে। তারা ডাক নিয়ে জগন্নাথপুর যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। আমাদের এই দুই সহকর্মী অনেক কর্তব্যপরায়ণ ছিলেন।
এদিকে, সড়ক দুর্ঘটনায় দুই কর্মীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের। ছুটির দিন থাকলেও সহকর্মীর মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে যান জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মীরা। এসময় নিহতদের স্বজন ও সহকর্মীদের আহাজারিতে এক শোকাবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে নিহতদের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শহরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে রাতেই দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে জুয়েল মিয়াকে তাঁর গ্রামের বাড়িতে এবং সবদর আলীকে পৌরসভার কবরস্থানে দাফন করা হয়।