প্রকৌশলী কামরুল হকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য স্বজনদের দাবি ‘পরিকল্পিত হত্যা’

আপলোড সময় : ০২-০৯-২০২৫ ০৯:২৯:৩২ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০২-০৯-২০২৫ ০৯:২৯:৩২ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :: সুনামগঞ্জ শহরতলির ইব্রাহিমপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত শামসুল হকের সন্তান প্রকৌশলী কামরুল হকের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্বজনদের দাবি, তার কোটি টাকার সঞ্চয়, স্বর্ণালঙ্কারসহ সম্পদের জন্যই বন্ধুদের একটি চক্র তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এই সন্দেহের কারণে মরদেহের পোস্টমর্টেম করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে, প্রকৌশলীর মৃত্যুর কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও তার বৃদ্ধা মায়ের কান্না থামছেনা। প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে প্রায়ই আহাজারি করছেন মা। গত ১৪ মে ঢাকায় প্রকৌশলী কামরুল হকের মৃত্যু হয়। তার পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রকৌশলী কামরুল হক গত সাত বছর ধরে রাজধানীর খিলক্ষেত থানা এলাকার নিকুঞ্জ-২, সড়ক নং ১০-এর ২৩ নম্বর বাসায় বসবাস করতেন। তিনি গাজীপুরের একটি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কনসালটেন্ট হিসেবেও কাজ করতেন। ভালো আয়ের কারণে তার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সঞ্চয়ও ছিল। পরিবার আরো জানিয়েছে, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এই মেধাবী জুবিলিয়ান বাংলাদেশ বিএনসিসির একজন সেকেন্ড কমিশন ছিলেন। বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন র‌্যাংকে সুযোগও পেয়েছিলেন। রাজউকে সরকারি চাকরি পেয়েও যোগদান না করে স্বাধীনভাবে কাজ করতে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। অল্পদিনে তিনি মেধার স্বাক্ষর রেখে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে আকৃষ্ট করেছিলেন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা গেছে, কামরুলের দিলখোলা ও বন্ধুবৎসল স্বভাবের কারণে তার আর্থিক স্বচ্ছলতা ও সম্পদের খোঁজ পেয়ে বন্ধুদের একটি চক্র তাকে টার্গেট করে। বন্ধুদের সঙ্গে তার বড়ো ধরনের আর্থিক লেনদেনও ছিল বলে জানিয়েছে পরিবার। জানা গেছে, গত ১৪ মে বিকেল ৫টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন কামরুল। তার বন্ধু নাঈম, রাজীব, সজল ও মামুন সুনামগঞ্জের পরিবার ও স্বজনদের খবর দেন এবং কামরুলকে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে তার বন্ধুদের আচরণ পুলিশ এবং পরিবারের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়। খিলক্ষেত থানা পুলিশ জানায়, বন্ধুদের অনুরোধ ছিল যেন পোস্টমর্টেম না করা হয়। কিন্তু তাদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে পোস্টমর্টেমের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পোস্টমর্টেম করা হয় তার মরদেহ। কামরুলের পরিবার জানায়, কামরুলের বাসায় থাকা ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং বাড়ি কেনার মোটা অঙ্কের টাকাই তার জীবনের কাল ছিল। অসুস্থতার নাম করে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলেও সন্দেহ স্বজনদের। প্রকৌশলী কামরুলের বড় ভাই নাজমুল হক জানান, মৃত্যুর খবর পেয়ে ‘হাসপাতালে গিয়ে দেখি, একটি মেয়েসহ কয়েকজন যুবক সেখানে উপস্থিত। কিছু সময় পর তারা বাসায় গিয়ে মোবাইলফোন, স্বর্ণ, নগদ টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। আমরা বিশ্বাস করি, একটি পরিকল্পিত চক্র আমার ভাইকে হত্যা করেছে।’ তিনি আরও জানান, আমার ছোট ভাই কামরুল তার পরিশ্রমের টাকা সঞ্চয় করতো। এ কারণে আমরা পরিবারের লোকজন তার কাছে আর্থিক সহায়তা নিতাম না। বন্ধুদের লোভী চক্র তার নগদ টাকা ও স্বর্ণাল্কারের দিকে নজর দিয়ে তাকে খুন করেছে। খিলক্ষেত থানার এসআই আনোয়ার বলেন, হাসপাতালে যারা কামরুলকে নিয়ে আসে, তাদের আচরণ আমার সন্দেহজনক মনে হয়। এজন্য আমরা মরদেহের পোস্টমর্টেম করাই। পরিবারের পক্ষ থেকেও হত্যা সন্দেহে অভিযোগ এসেছে। মামলা হলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com