
স্টাফ রিপোর্টার ::
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর রামসার সাইট সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর। পর্যটন বিকাশের নামে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমির জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে। পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রতি খেয়াল রেখে এখানে ইকোট্যুরিজম বিকাশের কথা থাকলেও হাওর ভ্রমণের নামে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক হাউসবোট ও ইঞ্জিনচালিত ছোট-বড় নৌকা নিয়ে ঘুরছেন-বেড়াচ্ছেন এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে।
সম্প্রতি টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে দেখা যায়, হাওরে প্রতিনিয়ত প্লাস্টিকের বোতল, চিপস, ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের চায়ের কাপ, নানা রকমের খাবারের প্যাকেটসহ বিভিন্ন অপচনশীল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে হাওরে। এ-সব প্লাস্টিকের বর্জ্য হাওরের পানিতে ভাসতে দেখা যায় নিয়মিত। এছাড়া, হাউসবোটের রান্নাঘরের উচ্ছিষ্ট, খাবারের অবশিষ্টাংশ, পচা শাক-সবজির খোসা - এই জৈব বর্জ্যগুলো সরাসরি হাওরের পানিতে ফেলা হচ্ছে। এর চেয়েও তীব্র সমস্যা হলো, হাউসবোটগুলোতে সেফটি ট্যাংক না থাকায় প্রতিদিন শত-শত পর্যটকদের পয়ঃবর্জ্য মিশে যাচ্ছে হাওর জলে। এই বর্জ্যগুলো পানিকে নিয়মিত দূষিত করছে। যার কারণে দিনদিন জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, একইভাবে, ইঞ্জিন থেকে নিঃসৃত তেল/ডিজেলসহ অন্যান্য তৈলাক্ত বর্জ্য হাওরের পানিতে পড়ে পানির উপরে একটি বিষাক্ত স্তর তৈরি করছে। এই স্তর সূর্যের আলো এবং অক্সিজেনকে পানিতে প্রবেশ করতে বাধা দেয়, যার ফলে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীরা তাদের জীবনচক্র স¤পন্ন করতে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়াও, পর্যটকদের ব্যবহৃত সাবান, শ্যাম্পু এবং ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি সরাসরি হাওরের জলে নির্গত হচ্ছে। এমনকি টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ-টাওয়ার সংলগ্ন এলাকায় পর্যটকদের গোসল করার সময় সাবান, ফেস ওয়াশ, শ্যাম্পু ব্যবহার করতে দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, এই বর্জ্যগুলো হাওরের পরিবেশের জন্য একটি নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করছে। যদি এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে দেশের এই অমূল্য প্রাকৃতিক স¤পদ তার সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য চিরতরে হারাবে। টাঙ্গুয়ার হাওরকে বাঁচাতে হলে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। স্থানীয় পরিবেশকর্মী ও মৎস্যজীবীরা বলছেন, যদি এই অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অবিলম্বে বন্ধ করা না হয়, তাহলে টাঙ্গুয়ার হাওর তার প্রাণশক্তি হারাবে। দূষিত পানির কারণে মাছের প্রজনন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তি হয়েছে। পরিবেশকর্মী মেহেদী হাসান বলেন, হাউসবোটগুলোতে পরিবেশবান্ধব পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, যেমন বায়ো-ট্যাংক বা ছোট আকারের বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করা জরুরি। এতে বর্জ্যকে সরাসরি পানিতে না ফেলে বরং পরিশোধন করে বা সংরক্ষণ করে পরে নিরাপদ স্থানে নিষ্কাশন করা সম্ভব হবে। এটি করা হলে হাওরের পানি দূষিত হবে না। স্থানীয় বাসিন্দা সাদিকুর রহমান বলেন, পর্যটকরা মূলত হাওরের স্বচ্ছ জল এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে টানেই হাওরে আসেন। কিন্তু বর্তমানে হাওরে অতিরিক্ত বর্জ্যের কারণে পানির রঙ ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে এবং দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে পানি থেকে। এতে হাওরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, যা খুবই অস্বস্তিকর। এই কারণে অনেক পর্যটক হাওরে যেতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন, যা স্থানীয় পর্যটন শিল্পের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, লাখ-লাখ টাকা খরচ করে হাউসবোট করা হয়েছে, কিন্তু সেফটি ট্যাংক রাখা হলো না কেন? ব্যবসা করাই কি তাদের (হাউসবোট কর্তৃপক্ষের) মূল উদ্দেশ্য? কোনো অবস্থায় হাওরের পানি দূষিত করা যাবে না। এবিষয়ে প্রশাসনকেও কঠোর হতে হবে। রফিকুল ইসলাম নামের এক পর্যটক বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরকে রক্ষা করতে হলে পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। এখন আমি সচেতন আছি বলে আমি পরিবেশের ক্ষতি করলাম না, কিন্তু অপর আরেক পর্যটক তো ঠিকই ক্ষতি করছেন, সেজন্য সচেতনতা মূলক কার্যক্রম চালাতে হবে। একই সাথে, স্থানীয় প্রশাসনকে হাউসবোট ও নৌকার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন করে তা কার্যকর করতে হবে। তাহলে হয়তো কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যাবে। তাহিরপুর উপজেলার লতিবপুর গ্রামের বাসিন্দা পরিবেশকর্মী আব্দুল আমীন বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের অপরিকল্পিত এবং অসচেতন আচরণের কারণে আজ হুমকির মুখে। প্রতিনিয়ত অসচেতন পর্যটকরা প্লাস্টিকের বোতল, খাবারের প্যাকেটসহ বিভিন্ন অপচনশীল বর্জ্য ফেলে হাওরের পরিবেশ নষ্ট করছেন। একই সাথে, হাউসবোট এবং নৌকা থেকে নির্গত বর্জ্য সরাসরি হাওরের পানিতে মিশে হাওরের পানি দূষিত করছে। এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখনই সময়।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় শুধুমাত্র প্রশাসন একা কাজ করে কিছুই করতে পারবে না। প্রশাসনকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। একই সাথে হাওরে আসা পর্যটকদের সচেতন থাকতে হবে। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। এই টাঙ্গুয়ার হাওর দেশের সম্পদ, এটি রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের।
হাউসবোট ওনার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, সত্যি কথা বলতে হাউসবোটগুলোতে সেফটি ট্যাংক নেই। যার কারণে মল-মূত্র সরাসরি হাওরের পানিতে মিশে যাচ্ছে। সেফটি ট্যাংক হাউসবোটে করা যায় কি-না এই বিষয়ে শীঘ্রই আমরা সিদ্ধান্ত নিবো। তবে, এক্ষেত্রে একটি ডাম্পিং স্টেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, আমরা লক্ষ করছি টাঙ্গুয়ার হাওরে আবার দূষণ বাড়ছে। অনেকেই উচ্চশব্দে গান বাজাচ্ছে, যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলছে। আমরা এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের নিজস্ব কোনো যানবাহন নেই। এই কারণে আমাদের রিকুইজিশনের যানবাহনের উপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু যেই দিন রিকুইজিশন করবো তাদেরও একটা স্বার্থ থাকে, দীর্ঘদিন আগে থেকেই তাদের হাউসবোট/নৌকা বুকিং থাকে, যার কারণে যথাসময়ে যানবাহন নেওয়া যায় না, এই কারণে আমরা সমস্যায় পড়েছি।
তিনি আরও বলেন, শুক্র-শনিবার না করে যদি অন্য কোনো দিন অভিযান করি তাহলে পর্যটকদের সচেতন করার জন্য, তারা যেন প্লাস্টিক ব্যবহার কম করে, প্লাস্টিক যেন হাওরের পানিতে না ফেলে এবং জৈব বর্জ্য যেগুলো আছে হাউসবোটগুলো যেন পানিতে না ফেলে এই কার্যক্রম আমার দ্রুত করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তারা (হাউসবোট সংশ্লিষ্টরা) এই বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করছে না। এই কারণে আমরা ভাবছি সাপ্তাহিক কর্মকালীন যে দিনগুলো আছে সেইদিনগুলোতে (রবি-বৃহস্পতিবার) অভিযান পরিচালনা করবো।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর রামসার সাইট সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর। পর্যটন বিকাশের নামে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমির জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে। পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রতি খেয়াল রেখে এখানে ইকোট্যুরিজম বিকাশের কথা থাকলেও হাওর ভ্রমণের নামে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক হাউসবোট ও ইঞ্জিনচালিত ছোট-বড় নৌকা নিয়ে ঘুরছেন-বেড়াচ্ছেন এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে।
সম্প্রতি টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে দেখা যায়, হাওরে প্রতিনিয়ত প্লাস্টিকের বোতল, চিপস, ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের চায়ের কাপ, নানা রকমের খাবারের প্যাকেটসহ বিভিন্ন অপচনশীল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে হাওরে। এ-সব প্লাস্টিকের বর্জ্য হাওরের পানিতে ভাসতে দেখা যায় নিয়মিত। এছাড়া, হাউসবোটের রান্নাঘরের উচ্ছিষ্ট, খাবারের অবশিষ্টাংশ, পচা শাক-সবজির খোসা - এই জৈব বর্জ্যগুলো সরাসরি হাওরের পানিতে ফেলা হচ্ছে। এর চেয়েও তীব্র সমস্যা হলো, হাউসবোটগুলোতে সেফটি ট্যাংক না থাকায় প্রতিদিন শত-শত পর্যটকদের পয়ঃবর্জ্য মিশে যাচ্ছে হাওর জলে। এই বর্জ্যগুলো পানিকে নিয়মিত দূষিত করছে। যার কারণে দিনদিন জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, একইভাবে, ইঞ্জিন থেকে নিঃসৃত তেল/ডিজেলসহ অন্যান্য তৈলাক্ত বর্জ্য হাওরের পানিতে পড়ে পানির উপরে একটি বিষাক্ত স্তর তৈরি করছে। এই স্তর সূর্যের আলো এবং অক্সিজেনকে পানিতে প্রবেশ করতে বাধা দেয়, যার ফলে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীরা তাদের জীবনচক্র স¤পন্ন করতে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়াও, পর্যটকদের ব্যবহৃত সাবান, শ্যাম্পু এবং ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি সরাসরি হাওরের জলে নির্গত হচ্ছে। এমনকি টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ-টাওয়ার সংলগ্ন এলাকায় পর্যটকদের গোসল করার সময় সাবান, ফেস ওয়াশ, শ্যাম্পু ব্যবহার করতে দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, এই বর্জ্যগুলো হাওরের পরিবেশের জন্য একটি নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করছে। যদি এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে দেশের এই অমূল্য প্রাকৃতিক স¤পদ তার সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য চিরতরে হারাবে। টাঙ্গুয়ার হাওরকে বাঁচাতে হলে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। স্থানীয় পরিবেশকর্মী ও মৎস্যজীবীরা বলছেন, যদি এই অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অবিলম্বে বন্ধ করা না হয়, তাহলে টাঙ্গুয়ার হাওর তার প্রাণশক্তি হারাবে। দূষিত পানির কারণে মাছের প্রজনন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তি হয়েছে। পরিবেশকর্মী মেহেদী হাসান বলেন, হাউসবোটগুলোতে পরিবেশবান্ধব পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, যেমন বায়ো-ট্যাংক বা ছোট আকারের বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করা জরুরি। এতে বর্জ্যকে সরাসরি পানিতে না ফেলে বরং পরিশোধন করে বা সংরক্ষণ করে পরে নিরাপদ স্থানে নিষ্কাশন করা সম্ভব হবে। এটি করা হলে হাওরের পানি দূষিত হবে না। স্থানীয় বাসিন্দা সাদিকুর রহমান বলেন, পর্যটকরা মূলত হাওরের স্বচ্ছ জল এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে টানেই হাওরে আসেন। কিন্তু বর্তমানে হাওরে অতিরিক্ত বর্জ্যের কারণে পানির রঙ ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে এবং দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে পানি থেকে। এতে হাওরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, যা খুবই অস্বস্তিকর। এই কারণে অনেক পর্যটক হাওরে যেতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন, যা স্থানীয় পর্যটন শিল্পের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, লাখ-লাখ টাকা খরচ করে হাউসবোট করা হয়েছে, কিন্তু সেফটি ট্যাংক রাখা হলো না কেন? ব্যবসা করাই কি তাদের (হাউসবোট কর্তৃপক্ষের) মূল উদ্দেশ্য? কোনো অবস্থায় হাওরের পানি দূষিত করা যাবে না। এবিষয়ে প্রশাসনকেও কঠোর হতে হবে। রফিকুল ইসলাম নামের এক পর্যটক বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরকে রক্ষা করতে হলে পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। এখন আমি সচেতন আছি বলে আমি পরিবেশের ক্ষতি করলাম না, কিন্তু অপর আরেক পর্যটক তো ঠিকই ক্ষতি করছেন, সেজন্য সচেতনতা মূলক কার্যক্রম চালাতে হবে। একই সাথে, স্থানীয় প্রশাসনকে হাউসবোট ও নৌকার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন করে তা কার্যকর করতে হবে। তাহলে হয়তো কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যাবে। তাহিরপুর উপজেলার লতিবপুর গ্রামের বাসিন্দা পরিবেশকর্মী আব্দুল আমীন বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের অপরিকল্পিত এবং অসচেতন আচরণের কারণে আজ হুমকির মুখে। প্রতিনিয়ত অসচেতন পর্যটকরা প্লাস্টিকের বোতল, খাবারের প্যাকেটসহ বিভিন্ন অপচনশীল বর্জ্য ফেলে হাওরের পরিবেশ নষ্ট করছেন। একই সাথে, হাউসবোট এবং নৌকা থেকে নির্গত বর্জ্য সরাসরি হাওরের পানিতে মিশে হাওরের পানি দূষিত করছে। এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখনই সময়।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় শুধুমাত্র প্রশাসন একা কাজ করে কিছুই করতে পারবে না। প্রশাসনকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। একই সাথে হাওরে আসা পর্যটকদের সচেতন থাকতে হবে। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। এই টাঙ্গুয়ার হাওর দেশের সম্পদ, এটি রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের।
হাউসবোট ওনার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, সত্যি কথা বলতে হাউসবোটগুলোতে সেফটি ট্যাংক নেই। যার কারণে মল-মূত্র সরাসরি হাওরের পানিতে মিশে যাচ্ছে। সেফটি ট্যাংক হাউসবোটে করা যায় কি-না এই বিষয়ে শীঘ্রই আমরা সিদ্ধান্ত নিবো। তবে, এক্ষেত্রে একটি ডাম্পিং স্টেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, আমরা লক্ষ করছি টাঙ্গুয়ার হাওরে আবার দূষণ বাড়ছে। অনেকেই উচ্চশব্দে গান বাজাচ্ছে, যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলছে। আমরা এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের নিজস্ব কোনো যানবাহন নেই। এই কারণে আমাদের রিকুইজিশনের যানবাহনের উপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু যেই দিন রিকুইজিশন করবো তাদেরও একটা স্বার্থ থাকে, দীর্ঘদিন আগে থেকেই তাদের হাউসবোট/নৌকা বুকিং থাকে, যার কারণে যথাসময়ে যানবাহন নেওয়া যায় না, এই কারণে আমরা সমস্যায় পড়েছি।
তিনি আরও বলেন, শুক্র-শনিবার না করে যদি অন্য কোনো দিন অভিযান করি তাহলে পর্যটকদের সচেতন করার জন্য, তারা যেন প্লাস্টিক ব্যবহার কম করে, প্লাস্টিক যেন হাওরের পানিতে না ফেলে এবং জৈব বর্জ্য যেগুলো আছে হাউসবোটগুলো যেন পানিতে না ফেলে এই কার্যক্রম আমার দ্রুত করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তারা (হাউসবোট সংশ্লিষ্টরা) এই বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করছে না। এই কারণে আমরা ভাবছি সাপ্তাহিক কর্মকালীন যে দিনগুলো আছে সেইদিনগুলোতে (রবি-বৃহস্পতিবার) অভিযান পরিচালনা করবো।