
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড এ কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু সেই মেরুদ-কে শক্তিশালী করার প্রথম ধাপ, অর্থাৎ প্রাথমিক শিক্ষা আজ সুনামগঞ্জে ভয়াবহ সংকটে। জেলার ১৪৭৫টি বিদ্যালয়ে এক হাজার শিক্ষক পদ শূন্য! ৩০০-এর বেশি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই, অনেক স্কুলে একজন শিক্ষকই সব শ্রেণির পাঠদান করছেন। প্রশ্ন জাগে- এ অবস্থায় শিশুদের ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে?
অপর্যাপ্ত শিক্ষক, অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও দুর্গম ভৌগোলিক বাস্তবতায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যত ধ্বংসের পথে। হাওরাঞ্চলের স্কুলে যেখানে নৌকায় ভেসে শিশুদের যেতে হয়, সেখানে শিক্ষকের অভাবে কার্যক্রমই ভেঙে পড়ছে। শিশুরা বিদ্যালয়ে গেলেও সঠিক পাঠ পাচ্ছে না। প্রাথমিক শিক্ষার এই বিপর্যয় কেবল শিশুদের নয়, সুনামগঞ্জের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎকেও অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এতদিন কেন শিক্ষক নিয়োগ হয়নি? কেন শিক্ষকদের স্থায়িত্ব ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হয়নি? সুনামগঞ্জের মতো দুর্গম জেলায় শিক্ষক নিয়োগ মানেই কেবল কিছু পদ পূরণ নয়; এটি একটি বিশেষ সামাজিক দায়িত্ব। অথচ বছরের পর বছর কাগজে-কলমে পরিকল্পনা থাকলেও কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি।
শিক্ষক সংকট মোকাবিলায় এখন আর অজুহাত চলে না। দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম স¤পন্ন করতে হবে, সঙ্গে দিতে হবে হাওরাঞ্চলে কর্মরত শিক্ষকদের জন্য বিশেষ ভাতা ও প্রণোদনা। অবকাঠামো উন্নয়ন, নৌযান সহায়তা, আবাসন সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, শিক্ষক ছাড়া স্কুল মানেই ভবিষ্যৎহীন প্রজন্ম। সেই ভবিষ্যৎকে রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব