
সুরমা নদীর বুকে একটি সেতু - শুনতে সহজ, কিন্তু সুনামগঞ্জের সদর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মানুষের জন্য এটি যেন অধরা স্বপ্ন। হালুয়ারঘাট-ধারারগাঁও এলাকায় একটি সেতুর অভাবে দেড় লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন নৌকায় ঝুঁকিপূর্ণ পারাপারের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, ব্যবসা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এই সেতুহীনতা তাদের পিছু টেনে ধরছে।
এই অঞ্চলের কৃষকরা সারা বছর পরিশ্রম করে ধান, সবজি ও নানা ফসল ফলালেও, বাজারজাত করতে গিয়ে খরচ ও সময়ের কারণে ন্যায্য দাম পান না। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে গিয়ে মাঝনদীতে সময় নষ্ট হয়ে যায়, অনেক সময় ঘটে দুর্ঘটনা। শিক্ষার্থীরা নৌকায় স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে ঝুঁকি নিয়ে। উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় যখন সারাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন একটি সেতুর অভাবে এই বৃহৎ জনগোষ্ঠী পিছিয়ে থাকাটা দুঃখজনক। অথচ এ অঞ্চলের সম্ভাবনা সীমাহীন। কৃষি উৎপাদন সমৃদ্ধ, পর্যটন শিল্পের জন্য রয়েছে মেঘালয় পাহাড়ের অপার সৌন্দর্য, আর সীমান্তে রয়েছে ডলুরা হাট, যা ভবিষ্যতে স্থলবন্দরে পরিণত হতে পারে। একটি সেতু হলে এই সব সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ নেবে, অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় আসবে গতি।
বিগত সরকারগুলো একাধিকবার সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আজও কাগজে সীমাবদ্ধ। নতুন সরকারের দায়িত্ব হবে এই প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করা। সেতু নির্মাণ শুধু একটি অবকাঠামো প্রকল্প নয় - এটি হবে উত্তরপাড়ের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং উন্নয়নের মূল সেতুবন্ধন।