সাকির আমিন
আলহাজ্ব মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক, শিক্ষাবিদ ও দানবীর। সিলেট তথা বাংলাদেশের এক কৃতী সন্তান। দান ও সাহায্যের ক্ষেত্রে তিনি অনন্য।
দীর্ঘ সময় জাহাঙ্গীর আলম বিলেতে বাস করেন। অল্প সময়ের মধ্যে বিলেতে অত্যন্ত সফল একজন ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। কিন্তু দেশমাতৃকার টানে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিলেতের অনেকটা আরাম-আয়েশের জীবন ত্যাগ করে তিনি বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে ফিরে আসেন। এরপর জন্মস্থান ছাতক-দোয়ারার মাটি ও মানুষের জন্য তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে যা করেছেন এবং অদ্যাবধি করে যাচ্ছেন তা প্রশংসার দাবি রাখে।
কঠোর পরিশ্রম, কঠিন সংকল্প ও পাহাড়সম প্রতিজ্ঞা জাহাঙ্গীর আলমকে অল্পদিনের মধ্যে পরিণত করে দেশের অন্যতম সেরা শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে। ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন ছাতক দোয়ারার শিল্পপতিদের অন্যতম। যে দিকে তিনি হাত দিয়েছেন সেদিক থেকেই এসেছে তার অভূতপূর্ব ও অচিন্তনীয় সফলতা। তিনি ছাতক জাবা মেডিকেল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা পুরোধা। তার প্রতিষ্ঠিত জাবা মেডিকেল আজ দেশের প্রাইভেট মেডিকেল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর অন্যতম। তার প্রতিষ্ঠিত এই মেডিকেল একদিকে যেমন ছাতক-দোয়ারার স্বাস্থসেবায় নিত্যসঙ্গী, ঠিক অপরদিকে লাখো রোগী প্রতি বছর সহনীয় খরচে চিকিৎসাসেবা নেয়া হচ্ছে। ছাতক-দোয়ারায় সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল প্রচারিত জাবা তার হাত দিয়েই গড়া। জাহাঙ্গীর আলম প্রতিষ্ঠিত জাবা কুরআনিক গার্ডেন দেশের অন্যতম সেরা প্রাইভেট দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে শীঘ্রই চালু হচ্ছে। তিনি বহু প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত।
সমাজ উন্নয়নে জাহাঙ্গীর আলমের ভূমিকা অতুলনীয়। তিনি ব্যাপক সামাজিক উন্নয়ন, অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মসজিদ,মাদরাসা, এতিমখানায় সহযোগিতা ও জাবা নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন চ্যারিটেবল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান জাবা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট। তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মসংস্থান হচ্ছে অসংখ্য মানুষের। অপরদিকে গরীব, দুঃস্থ, অভাবীদের দুহাতে দান করে যাচ্ছেন এই কর্মবীর। বহু ঘটনা এমন আছে যেখানে অভাবীরা এসেছেন তার কাছে একটু সাহায্যের জন্য, কিন্তু এমন ঘটনা আছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে শুধু তাদের অভাবটুকু দূর করে দেননি, বরং বিভিন্নভাবে তাদের জীবনের উপায় ও স্বাবলম্বী করে দিয়েছেন। তার দান ও সাহায্য এমন ব্যাপক ও গভীর যে ধীরে ধীরে তিনি সাধারণ জনতার কাছে হয়ে উঠেন “দানবীর জাহাঙ্গীর আলম” হিসেবে।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে জাহাঙ্গীর আলম স্থাপন করেছেন অসংখ্য টিউবওয়েল। তিনি নিজ অর্থ ব্যয়ে আশ্রয়হীন ও গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছেন। স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ ও বিভিন্ন ধর্মীয় কাজে তিনি সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
জাহাঙ্গীর আলম প্রতি বছর দুই ঈদে নিয়মিতভাবে হতদরিদ্র ও এতিমদের জন্য নগদ আর্থিক অনুদান ও বস্ত্র বিতরণ করে আসছেন। এতিম ও দরিদ্র পরিবার পরিজনদের জন্য বিনাখরচে তার প্রতিষ্ঠিত জাবা মেডিকেল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্বাস্থ্যসেবা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছেন।
জাহাঙ্গীর আলম তার দীর্ঘ জীবনে দেশে-বিদেশে পেয়েছেন অনেক সম্মাননা ও পুরস্কার। তার কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন, পেয়েছেন অগণিত মানুষের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। তার জীবন ও কর্ম নিয়ে প্রকাশ হয়েছে ‘জাহাঙ্গীর আলম, সময়ের সাহসী কণ্ঠসুর’।
জাহাঙ্গীর আলম একজন সহজ সরল ও উদার মনের মানুষ। তিনি নিজেকে নিজস্ব পরিম-লে রেখে জীবনে শুধু অর্থ কামানো ও মুনাফা বানানোকে ব্রত বানিয়ে এগিয়ে যাননি। বরং একজন সাধারণ বাঙালি হিসেবে দেশের সার্বিক কল্যাণে বহুমাত্রিক কর্মকা-ে নিয়োজিত হয়ে সমাজ উন্নয়নে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। তার জীবনের অর্জিত সব স¤পদ থেকে জনকল্যাণে প্রতিনিয়ত ব্যয় করছেন। ব্যক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে তার অবদান দেশের ইতিহাসে অনন্য দৃষ্টান্ত। এমন একজন মানুষ আমাদের সুনামগঞ্জবাসীর গর্ব। আমরা তার দীর্ঘায়ু কামনা করি।