প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের বিবৃতি

জাতিসংঘের মানবাধিকার মিশন কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নে হাতিয়ার হবে না

আপলোড সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০৪:২৯:১২ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০৪:২৯:১২ পূর্বাহ্ন
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের অফিস স্থাপনে তিন বছর মেয়াদী চুক্তি সই করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ খবর প্রকাশের পর পরই দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংগঠন এ অফিস বন্ধ ও চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বলছে, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মিশন কোনো সামাজিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে না। এ মিশন শুধু গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের দ্বারা সংঘটিত অপরাধগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দিকেই মনোযোগ দেবে। শনিবার (১৯ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় একটি তিন বছরের সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় একটি মিশন পরিচালনা করবে, যার লক্ষ্য হবে মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নে সহায়তা প্রদান। বিবৃতিতে বলা হয়, মিশনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারি সংস্থা ও সিভিল সোসাইটি সংগঠনগুলোর প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা নিশ্চিত করা। এই সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ যেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাধ্যবাধকতা পূরণে সক্ষম হয়, সেই লক্ষ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা প্রদান করা হবে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগটি সরকারের জবাবদিহিতা ও সংস্কারের প্রতি প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, দেশের কিছু মহল জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতাদর্শগত অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ একটি গভীর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যে আস্থা রাখা সমাজ। অনেক নাগরিকই মত দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে দেশের মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। তাই এই মিশন শুধু গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের দ্বারা সংঘটিত অপরাধগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দিকেই মনোযোগ দেবে। এটি কোনো সামাজিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে না, যা দেশের প্রচলিত আইন, সামাজিক রীতি ও সংস্কৃতির বাইরে পড়ে। সরকার আশা করছে, এই মিশন সর্বদা স্বচ্ছতা বজায় রাখবে এবং স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বাস্তবতার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে কাজ করবে। সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে, দেশের স্বার্থে যদি কখনো এই অংশীদারত্ব অসামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়, তবে চুক্তি থেকে সরে আসার সার্বভৌম অধিকার বাংলাদেশ সরকারের থাকবে। সরকার আরও বলেছে, যদি পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক অফিস থাকত, যেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- ও গণহত্যা হয়েছিল। তাহলে অনেক অপরাধ তদন্ত ও প্রমাণিত করা যেত এবং বিচার নিশ্চিত হতো। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মানবাধিকার রক্ষায় বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার কেবল মতাদর্শ নয়, বরং ন্যায়ের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এই অংশীদারত্বকে সরকার একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে - সংস্থাগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধির এবং নাগরিকদের অধিকতর সুরক্ষা প্রদানের, যা হবে দেশের নিজস্ব আইন, মূল্যবোধ ও জনগণের কাছে জবাবদিহিতার ভিত্তিতে পরিচালিত।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com