চার উপজেলায় এসিল্যান্ড নেই, দুর্ভোগে সেবাপ্রত্যাশীরা

আপলোড সময় : ১৩-০৭-২০২৫ ০৮:১৮:০৪ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৩-০৭-২০২৫ ০৯:০২:১৫ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ::
জেলার বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা - এই চারটি উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ডের পদ শূন্য রয়েছে।
এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ সেবাপ্রত্যাশীরা। মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রম- নামজারি, দলিল নিবন্ধন, ভ্রাম্যমাণ আদালত, হাটবাজার মনিটরিংসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কার্যক্রম। একইসাথে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
বিভিন্ন উপজেলার সংশ্লিষ্ট সূত্র ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসিল্যান্ড না থাকায় মাসের পর মাস নামজারি আবেদন ঝুলে থাকছে। ভূমি সংক্রান্ত কাজ করতে এসে অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। মাঠ প্রশাসনের একাধিক দায়িত্ব একসাথে পালন করতে গিয়ে ইউএনওদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জানাযায়, ধর্মপাশা ভূমি অফিসে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অলিদুজ্জামান গত ২৯ জানুয়ারি পদোন্নতি পেয়ে বদলি হয়ে গেলে পদটি শূন্য হয়। তখন থেকে ইউএনও জনি রায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করলেও সেটি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় এসিল্যান্ড শিল্পী রানী মোদক মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় ইউএনও মফিজুর রহমান দায়িত্ব পালন করতেন। তবে তিনিও বদলি হয়ে গেছেন। নতুন ইউএনও’র ওপর এখন দায়িত্ব বর্তেছে।

তাহিরপুর উপজেলায় ২০২৪ সালের ৩ মার্চ যোগ দেওয়া এসিল্যান্ড শামস সাদাত মাহমুদুল্লাহ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বদলি হয়ে যাওয়ার পর থেকে ইউএনও আবুল হাসেম অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গত ২৯ মে পদোন্নতি পেয়ে হবিগঞ্জে যোগদানের নির্দেশ পেলেও এখনও দায়িত্বে রয়েছেন।
জামালগঞ্জ উপজেলায় এসিল্যান্ডের পদ দীর্ঘ দেড় বছর ধরে শূন্য। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন। সেবাগ্রহীতাদের ক্ষোভ : জামালগঞ্জ উপজেলা সদরের বাসিন্দা শফিক মিয়া জানান, এসিল্যান্ড না থাকায় চরম দুর্ভোগে আছি। প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাগণ আরও বেশি দুর্ভোগে আছেন। ভূমি সংক্রান্ত কাজে এসে ফিরে যাচ্ছে চরম ক্ষোভ নিয়ে।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কাটাখালি গ্রামের বাসিন্দা কয়েস মিয়া জানান, এসিল্যান্ড না থাকায় নামজারিসহ ভূমি সংক্রান্ত অন্যান্য কাজে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। যেহেতু এসিল্যান্ড মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন তাই এখানে একজন অতিরিক্ত দায়িত্ব দিলেও কিছুটা হলে স্বস্তি পেতাম। তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা শাকিল মিয়া জানান, এসিল্যান্ড না থাকায় নামজারী করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছি। ইউএনও সাহেব অফিসিয়াল নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় প্রত্যন্ত এলাকার থেকে আসা মানুষ হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরছে।
দলিল লেখক আলাউদ্দিল জানান, এসিল্যান্ড না থাকায় নামজারী করা যাচ্ছে না। এতে করে জমি বিক্রি কমে গেছে। আগে সপ্তাহে দলিল হতো ৭০-৮০টি, এখন হচ্ছে ৪০-৫০টি। অনেকেই ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারছে না। এতে করে সরকারের রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে অপরদিকে জনগণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
তাহিরপুরের ইউএনও আবুল হাসেম জানান, এসিল্যান্ড না থাকা ও জনবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ধর্মপাশার ইউএনও জনি রায় জানান, এসিল্যান্ডের পদ না থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে। ফলে সেবা গ্রহিতাগণকে যথাযথ সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, জনবল সংকটের কারণে ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। এসিল্যান্ডগণ ট্রেনিংয়ে রয়েছে, যার ফলে সংকট রয়েছে। ট্রেনিং শেষ করে যোগদান করলে এই সমস্যার সমাধান হবে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ এখন এসিল্যান্ডের কাজ করছেন।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com