মধ্যনগর প্রতিনিধি ::
মধ্যনগর উপজেলার মধ্যনগর বিশ্বেশ্বরী পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের দশম শ্রেণিতে পড়–য়া নয়ন দাস (১৫) নামের এক ছাত্রকে গামছা দিয়ে চোখ-মুখ ও রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে তাকে মারধর করে সড়কের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২ আগস্ট) রাত পৌনে আটটার দিকে উপজেলার উব্দাখালী নদীতে নির্মাণাধীন সেতুর ওপর এই ঘটনা ঘটে। আহত ওই ছাত্রকে মঙ্গলবার বিকেলে পাশের ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রের বাবা রাতেই মধ্যনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা প্রশাসন, মধ্যনগর থানা পুলিশ, শিক্ষক ও মারধরে শিকার ওই ছাত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মধ্যনগর পাবলিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে গত ২৫ আগস্ট চাপের মুখে ফেলে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে ওই শিক্ষককে বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার দাবিতে উপজেলার মধ্যনগর পাবলিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং মধ্যনগর বিশ্বেশ্বরী পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শতাধিক ছাত্র ছাত্রী গত ২৬ ও ২৭ আগস্ট উপজেলার মধ্যনগর বাজারে প্রতিবাদ মিছিল করে এবং ২৮ আগস্ট মধ্যনগর পাবলিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা এ ঘটনায় সুবিচার চেয়ে মধ্যনগরের ইউএনও’র কাছে লিখিত আবেদন করেন। শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্র নয়ন দাস। সোমবার রাত পৌনে আটটার দিকে সে নিজ গ্রামের কাছাকাছি উব্দাখালী নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর উপর বসা ছিল। এ সময় পেছন থেকে আকস্মিকভাবে ১০-১৫জন এসে প্রথমে তাকে ঝাপটে ধরে তার চোখ মুখে গামছা দিয়ে বেঁধে নেয়। পরে টেনে হিঁচড়ে তারা তাকে সেতুর মাঝামাঝি স্থানে নিয়ে গিয়ে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে দুই হাত রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে সেতুর পূর্বপাশের সেতুর সংযোগ সড়কে নিয়ে গিয়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে সড়কের নিচে ফেলে দেয়। রাত নয়টার দিকে জ্ঞান ফিরলে ওই ছাত্রটি এক শিক্ষককে ঘটনাটি জানায়। ওই শিক্ষকের কাছ থেকে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে মধ্যনগর বাজারে এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় স্বজনরা আহত ওই ছাত্রকে মঙ্গলবার বিকালে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
নয়ন দাস বলেন, শরীফ স্যারের পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেওয়ায় আমার উপর এই ঘটনা ঘটেছে। যারা আমাকে মারধর করে চোখ-মুখে গামছা ও দুই হাত রশি দিয়ে বেঁধে সড়কের নিচে ফেলে দিয়েছিল তাদেরকে আমি চিনতে পারিনি।
আহত ওই ছাত্রের বাবা নকুল চন্দ্র দাস বলেন, আমার ছেলেকে যারা প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল, আমি তাদের শাস্তি চাই।
মধ্যনগর থানার এসআই তপন চন্দ্র দাস বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।