স্টাফ রিপোর্টার ::
ইজারাবিহীন ধোপাজান-চলতি নদী বালুমহালে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে অবাধে পাড় কেটে নিচ্ছে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র। এতে হুমকিতে পড়েছে নদীতীরবর্তী গ্রামগুলো।
স্থানীয়রা জানান, রাত-দিন প্রকাশ্যে নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে বালু-পাথর লুট করছে সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা। স্থানীয় ওই সিন্ডিকেট প্রভাবশালী হওয়ায় মুখ খুলছেন না কেউই। অভিযোগ রয়েছে, রহস্যজনক কারণে পরিবেশ বিধ্বংসী এই কার্যক্রম বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এদিকে, আওয়ামী লীগ সরকার পতন পরবর্তী অস্থিতিশীল অবস্থার সুযোগে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে বালু-পাথরখেকো চক্র। তারা প্রকাশ্যে নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন শেষে নৌকায় তা লোড-আনলোড, পাচার এবং ডাম্পিং করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধোপাজান-চলতি নদীর দুইপাড়ে ড্রেজার বসিয়ে পাড় কাটছে একাধিক সংঘবব্ধ চক্র। ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত রয়েছে কাইয়ারগাঁও, ডলুরা, হুড়ারকান্দা, ভাদেরটেক, লালপুর ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের প্রভাবশালী চক্র। তারা ধোপাজান-চলতি ও সুরমা নদীতে চাঁদাবাজির সাথেও জড়িত রয়েছে। এদিকে, বালু-পাথর পাচারের নিরাপদ পথ হিসেবে গজারিয়া নদীকে বেছে নিয়েছে বালিখেকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা। গজারিয়া নদী দিয়ে খরচার হাওর হয়ে সুরমা নদীতে নিয়ে কার্গোতে লোড করা হয় এসব বালু। পরে এগুলো নির্দিষ্ট গন্তব্যে পাচার করা হয়।
এদিকে, অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু প্রায়ই জব্দ করা হলেও অসাধু সিন্ডিকেটের তৎপরতা থামছে না। গতকাল মঙ্গলবার খরচার হাওরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বালুবাহী ১৩টি বাল্কহেডকে ৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মফিজুর রহমান। নৌকায় শ্রমিক শ্রেণির মানুষ থাকায় মানবিক কারণে তাদের আটক রাখা হয়নি। তবে প্রতি নৌকার মালিকের নামে নিয়মিত মামলা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইজারাবিহীন মহালে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে প্রশাসনের অবস্থান সম্পর্কে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ কর্মবিরতি পালন করায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়। এ সময় নদীতে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের পাঁয়তারা চলে। গত রাতে বিজিবি, পুলিশ, আনসার, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটসহ অভিযান চালিয়ে ২টি ড্রেজার জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও বালু পাচার বন্ধে প্রতিদিন অভিযান অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। নদীর তীর কাটা ও বালু পাচার বন্ধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী।