
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত এ টি এম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়ে গত মঙ্গলবার রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বুধবার তিনি বাংলাদেশ মেডিকেলের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর শাহবাগে তাকে সংবর্ধনা দেয় জামায়াতে ইসলামী। তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। পরে জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহার বলেন, আজ আল্লাহর রহমতে আমিরে জামায়াতের কাছ থেকে ফুলের মালা পাচ্ছি। গলায় রশি ঝোলানোর পরিবর্তে ফুলের মালা পাচ্ছি। আজীবন যেন আমি ইসলামী আন্দোলনের জন্য শহীদ হতে পারি, সেই তৌফিক আল্লাহর কাছে চাই।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত এ টি এম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়ে গত মঙ্গলবার রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বুধবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে শাহবাগ মোড়ে অস্থায়ীভাবে নির্মিত মঞ্চে তাঁর জন্য সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনার আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী।
সংবর্ধনায় এ টি এম আজহারুল বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আমি প্রায় ১৪ বছর কারাগারে থাকার পর আজ সকালে মুক্ত হলাম। আমি এখন মুক্ত, আমি এখন স্বাধীন। স্বাধীন দেশে আমি একজন স্বাধীন নাগরিক। এর জন্য তিনি প্রথমে মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এরপর আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তারা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। এত দিন ন্যায়বিচার ছিল না, আদালতকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। আশা করি, সামনের দিনগুলোতে আদালত জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা অনুযায়ী তাঁরা যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন।
নিজের মামলায় নিয়োগ করা আইনজীবীদেরও ধন্যবাদ জানান আজহারুল। তিনি বলেন, আরও ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাদের কারণে আজকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি, সেই ৩৬ জুলাই, অর্থাৎ ৫ আগস্টের মহাবিপ্লবী নায়কদের। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছে। আমি ধন্যবাদ জানাব এ ক্ষেত্রে ছাত্রসমাজকে, যারা তাদের অতীতের গৌরব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। সেনাবাহিনীকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লা ও মীর কাশেম আলীকে ‘জুডিসিয়াল কিলিং’ করা হয়েছে বলে দাবি করেন এ টি এম আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, যারাই এসব হত্যাকা-ের সঙ্গে যেখানে যে পর্যায়ে জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার করা হোক। তা না হলে এই খারাপ সংস্কৃতি চালু থাকবে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
সংবর্ধনার এ আয়োজনে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের সম্মানিত এই ভাইয়ের (আজহারুল) বক্তব্য অচিরেই আমরা আরও বড় পরিসরে শুনব, ইনশা আলল্লহ। এই ঢাকাতেই শুনব, ইনশা আল্লাহ। আমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি যে মানুষটাকে সুদীর্ঘ ১৪টি বছর ঘাড়ের ওপর মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়ে জুলুম করা হয়েছে। আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। মহান রব তাকে আমাদের বুকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আলহামদুল্লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।