
স্টাফ রিপোর্টার ::
হাওরাঞ্চলের মানুষ আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে ঘিরে বেশ কিছু প্রত্যাশা নিয়ে দিন গুনছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের বাজেট প্রণয়ন থেকে এবার ঘটেছে বড় এক পরিবর্তন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পতনের পর দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের অধীনেই প্রথমবারের মতো বাজেট ঘোষণা হতে যাচ্ছে এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে প্রস্তাবিত বাজেটে কী থাকছে এবং তা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে - তা নিয়ে সচেতন হাওরবাসীর মধ্যে রয়েছে গভীর আগ্রহ ও কৌতূহল। তবে হাওরবাসীর প্রত্যাশা- আসন্ন বাজেট হবে হাওরবান্ধব এবং হাওরাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য থাকবে বিশেষ বরাদ্দ। সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল শিক্ষা, সড়ক যোগাযোগ, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। ফলে এ অঞ্চলের মানুষ আগামী বাজেটে হাওরপাড়ের উন্নয়ন এবং জনগণের স্বার্থে কার্যকর পদক্ষেপ দেখার আশা করছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওরের কৃষক মিজান মিয়া বলেন, আমরা কৃষকেরা কৃষিজ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে দেখার দাবি করছি। বোরো চাষে খরচ বেড়ে যাচ্ছে, লাভ কমে যাচ্ছে। ধান মাঠ থেকে খলায় আনার জন্য সড়ক নেই, ফলে কষ্ট বাড়ছে। হাওরের জন্য সড়ক ও কৃষি খাতে বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চাই। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রাজু আহমেদ বলেন, এবারের বাজেটটি ব্যতিক্রম। আমরা চাই হাওর উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণে একটি বাস্তবমুখী বাজেট হোক। অতীতে আওয়ামী লীগ বাজেটকে শুধু লুটপাটের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। আমরা সেই পুনরাবৃত্তি চাই না। তাহিরপুর উপজেলার জামায়াত নেতা আবিকুল ইসলাম বলেন, গত ১৭ বছর বাজেট ছিল লুটপাট নির্ভর। দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এবারের বাজেটে ভারসাম্য ও জনস্বার্থে প্রাধান্য থাকা উচিত। অনিয়ম থেকে মুক্ত থেকে যেন সময়োপযোগী বাজেট পেশ করা হয়। তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম বলেন, হাওরাঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনও অনেক পিছিয়ে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ, অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন। সাধারণ মানুষ চান- দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, উপজেলা ও জেলা সদরের সঙ্গে প্রত্যন্ত এলাকার সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন, কৃষি খাতে বীজ ও সারের দাম হ্রাস এবং হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক, ওষুধ ও জনবল বাড়িয়ে চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন। সবমিলিয়ে হাওরবাসীর দাবি- এই বাজেট যেন সত্যিকার অর্থেই জনকল্যাণে নিবেদিত হয় এবং নতুন সরকারের কার্যকর পদক্ষেপে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নত হয়। লেখক আকরাম উদ্দিন বলেন, হাওরের মানুষ চায়, বাজেট হোক হাওরবান্ধব। যেখানে হাওরের জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ রক্ষায় বিশেষ বরাদ্দ থাকবে, হাওরবাসীর জীবন ও জীবিকার সুরক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকবে, মৎস্যজীবীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে, নারী-পুরুষ সবার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানে প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসায় প্রযুক্তি-সমর্থিত সেবা নিশ্চিত করা হবে, কৃষকদের জন্য কৃষি ঋণ, সেচ ও সহায়তা খাতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ থাকবে, দেশি জাতের মাছ সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা থাকবে। এই ধরনের হাওরবান্ধব বাজেট শুধু হাওরের মানুষের অধিকারই নয়, জাতীয় অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্যও সময়ের দাবি। তাই আসন্ন বাজেটে অবহেলিত হাওরবাসীর স্বার্থরক্ষায় সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চাই আমরা।
হাওরাঞ্চলের মানুষ আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে ঘিরে বেশ কিছু প্রত্যাশা নিয়ে দিন গুনছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের বাজেট প্রণয়ন থেকে এবার ঘটেছে বড় এক পরিবর্তন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পতনের পর দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের অধীনেই প্রথমবারের মতো বাজেট ঘোষণা হতে যাচ্ছে এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে প্রস্তাবিত বাজেটে কী থাকছে এবং তা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে - তা নিয়ে সচেতন হাওরবাসীর মধ্যে রয়েছে গভীর আগ্রহ ও কৌতূহল। তবে হাওরবাসীর প্রত্যাশা- আসন্ন বাজেট হবে হাওরবান্ধব এবং হাওরাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য থাকবে বিশেষ বরাদ্দ। সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল শিক্ষা, সড়ক যোগাযোগ, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। ফলে এ অঞ্চলের মানুষ আগামী বাজেটে হাওরপাড়ের উন্নয়ন এবং জনগণের স্বার্থে কার্যকর পদক্ষেপ দেখার আশা করছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওরের কৃষক মিজান মিয়া বলেন, আমরা কৃষকেরা কৃষিজ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে দেখার দাবি করছি। বোরো চাষে খরচ বেড়ে যাচ্ছে, লাভ কমে যাচ্ছে। ধান মাঠ থেকে খলায় আনার জন্য সড়ক নেই, ফলে কষ্ট বাড়ছে। হাওরের জন্য সড়ক ও কৃষি খাতে বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চাই। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রাজু আহমেদ বলেন, এবারের বাজেটটি ব্যতিক্রম। আমরা চাই হাওর উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণে একটি বাস্তবমুখী বাজেট হোক। অতীতে আওয়ামী লীগ বাজেটকে শুধু লুটপাটের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। আমরা সেই পুনরাবৃত্তি চাই না। তাহিরপুর উপজেলার জামায়াত নেতা আবিকুল ইসলাম বলেন, গত ১৭ বছর বাজেট ছিল লুটপাট নির্ভর। দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এবারের বাজেটে ভারসাম্য ও জনস্বার্থে প্রাধান্য থাকা উচিত। অনিয়ম থেকে মুক্ত থেকে যেন সময়োপযোগী বাজেট পেশ করা হয়। তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম বলেন, হাওরাঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনও অনেক পিছিয়ে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ, অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন। সাধারণ মানুষ চান- দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, উপজেলা ও জেলা সদরের সঙ্গে প্রত্যন্ত এলাকার সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন, কৃষি খাতে বীজ ও সারের দাম হ্রাস এবং হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক, ওষুধ ও জনবল বাড়িয়ে চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন। সবমিলিয়ে হাওরবাসীর দাবি- এই বাজেট যেন সত্যিকার অর্থেই জনকল্যাণে নিবেদিত হয় এবং নতুন সরকারের কার্যকর পদক্ষেপে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নত হয়। লেখক আকরাম উদ্দিন বলেন, হাওরের মানুষ চায়, বাজেট হোক হাওরবান্ধব। যেখানে হাওরের জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ রক্ষায় বিশেষ বরাদ্দ থাকবে, হাওরবাসীর জীবন ও জীবিকার সুরক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকবে, মৎস্যজীবীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে, নারী-পুরুষ সবার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানে প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসায় প্রযুক্তি-সমর্থিত সেবা নিশ্চিত করা হবে, কৃষকদের জন্য কৃষি ঋণ, সেচ ও সহায়তা খাতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ থাকবে, দেশি জাতের মাছ সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা থাকবে। এই ধরনের হাওরবান্ধব বাজেট শুধু হাওরের মানুষের অধিকারই নয়, জাতীয় অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্যও সময়ের দাবি। তাই আসন্ন বাজেটে অবহেলিত হাওরবাসীর স্বার্থরক্ষায় সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চাই আমরা।