
ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার একটি গ্রামে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর প্রকৃত বয়স গোপন করে জন্ম নিবন্ধন সনদে বয়স বেশি দেখিয়ে বুধবার (১৪ মে) রাতে বাল্যবিবাহের আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৎপরতায় এই কিশোরী বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা ওই কিশোরী স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ে দেওয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী ওই কিশোরীর জন্ম তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১। ওই কিশোরীকে বিবাহ দেওয়ার উদ্দেশ্যে তার পিতা-মাতার নাম ঠিক রেখে কিশোরীর নামের হেরফের করে গত ৪ মে নতুন একটি জন্মনিবন্ধন করা হয়। যাতে তার জন্ম তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১ জানুয়ারি ২০০৭। ওই কিশোরীর সঙ্গে পাশের মধ্যনগর উপজেলার একটি গ্রামের কুয়েত প্রবাসী এক যুবকের (২৫) সঙ্গে বুধবার ১৪ মে রাত নয়টার দিকে গোপনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা স¤পন্ন হওয়ার কথা ছিল। এই বাল্যবিবাহের খবরটি বুধবার বেলা দুইটার দিকে জানতে পারেন স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মী। ওই গণমাধ্যমকর্মী সঙ্গে সঙ্গে এই বাল্যবিবাহটি বন্ধ করার জন্য খবরটি মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)-কে জানান। ইউএনওর নির্দেশে ওইদিন বিকেল চারটার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওই কিশোরীর বাড়িতে যান। কিশোরীর মা প্রথমে ওই কর্মকর্তার কাছে বাল্যবিবাহের আয়োজনের কথা অস্বীকার করেন। এক পর্যায়ে নিজ মেয়ের বাল্যবিবাহের আয়োজনের প্রস্তুতির কথা স্বীকার করেন কিশোরীর মা। ওই ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা কিশোরীর মাকে বাল্যবিয়ের কুফল ও ১৮ বছরের নিচে কোনো মেয়েকে বিবাহ দেওয়া বেআইনি এবং বাল্যবিবাহ সংঘটিত হলে জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে এমনটি বুঝিয়ে বলার পর কিশোরীর মা তাঁর মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ দেবেন না বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন।
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনি রায় বলেন, যে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নবম শ্রেণিতে পড়–য়া ছাত্রীর বয়স বেশি দেখিয়ে এই জন্ম নিবন্ধনটি করা হয়েছে সেই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে শোকজ করা হবে। সবার সম্মিলতি প্রচেষ্টায় ওই ছাত্রীটির বাল্যবিবাহটি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। বাল্যবিবাহ বন্ধে উপজেলা প্রশাসন সব সময় তৎপর রয়েছে।