
স্টাফ রিপোর্টার ::
তাহিরপুর উপজেলার বড়দল (দঃ) ইউনিয়নের হাফানিয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন শফিকুল ইসলাম শফিক (২৮) নামের এক পল্লী চিকিৎসক। হামলায় পল্লী চিকিৎসক ছাড়া আরও দুইজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গত বুধবার (৭ মে) রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যায় গুরুতর আহত শফিকুল ইসলাম শফিকের মা জাহেরা খাতুন বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। জাহেরা খাতুন উপজেলার লেদারবন্দ গ্রামের মৃত জুনাইদ মিয়ার স্ত্রী।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তার ছেলে শফিকুল ইসলাম শফিক লাকমা চক বাজারে ঔষধের ব্যবসা করেন। ঘটনার রাতে শফিক সাক্ষী হুমায়ূন মিয়াকে সাথে নিয়ে শরীফুল মিয়ার মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে হাফানিয়া গ্রামের জামে মসজিদের সামনে পৌঁছলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে খলিল মিয়া, অলি মিয়া ও আলাই মিয়া সহ ১৯ জন নামীয় এবং আরও ৪/৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি দেশিও অস্ত্র দা, রামদা, লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের পথরোধ করে। এসময় খলিল মিয়ার হুকুমে এনামুল মিয়া রামদা দিয়ে শফিকুলের মাথায় আঘাত করতে গেলে তিনি মাথা সরিয়ে ফেলায় আঘাতটি তার ঠোঁট ও থুতনিতে লাগে। এছাড়াও আলাই মিয়া রামদা দিয়ে শফিকুলের বাম কানের নিচে ঘাড়ে গুরুতর আঘাত করে। অন্যান্যরা শফিকুলকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। শফিকুলের চিৎকারে তার ভাই রফিক মিয়া ও চাচাতো ভাই ছালেক মিয়া এগিয়ে এলে হামলাকারীরা তাদেরকেও মারধর করে আহত করে। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের খুন করার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত শফিকুল ইসলাম শফিককে প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসক এবং পরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া অপর আহত দুজন রফিক মিয়া ও ছালেক মিয়া স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- পুরান খালাস গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে খলিল মিয়া (৫৫), অলি মিয়া (৫০), আলাই মিয়া (৪৮), খলিল মিয়ার ছেলে শহিকুল মিয়া (৩২), এনামুল মিয়া (৩০), শরীফুল মিয়া (২৮), রেখাতুল মিয়া (২৫), অলি মিয়ার ছেলে শফিকুল মিয়া (২৬), দীন ইসলাম (২৪), সিরাজুল মিয়া (২২), আজিজুল মিয়া (২০), ওহাব মিয়ার ছেলে আব্দুল মন্নাফ (৪০), দলু মিয়া (৩৫), অনু মিয়া (৩০), আলাই মিয়ার ছেলে, রতন মিয়া (২৪), নজির হোসেন (২২), হাফানিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আহাদ মিয়া (৬০), আহাদ মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৮), রমজান আলীর ছেলে নুর আলমসহ আরো ৪/৫ জন।
জাহেরা খাতুন জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তারা আমার ছেলেকে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমি চাই দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হোক।
এবিষয়ে তাহিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল কাদির জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ ঘটনা আহত পল্লী চিকিৎসকের মা জাহেরা খাতুন বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের তদন্ত চলমান আছে। তিনি বলেন, অভিযুক্তরা ঘটনার পরপরই পালিয়ে গেছে। তবে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।