গোলা ভরে ধান তুলে স্বস্তিতে কৃষক

আপলোড সময় : ০৮-০৫-২০২৫ ০১:১২:০৬ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৮-০৫-২০২৫ ০৯:০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলার বীরগাঁও গ্রামের তরুণ কৃষক মোশারফ। তাঁর পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস বোরো ফসল। এবার ফসল ভালো হওয়ায় স্বাচ্ছন্দ্য ফিরেছে মোশারফের পরিবারে।
মোশারফ জানান, এবার জমিতে যে ধান হয়েছে তা থেকে পরিবারের চাহিদা পূরণ করে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার ধান বিক্রি করতে পারবেন। ধান বিক্রির টাকা দিয়ে বর্ষায় বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ব্যবসার করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। তাই এবারের বোরো মওসুমকে সমৃদ্ধির বছর হিসেবে দেখছেন এই চাষী। অন্যান্য যেকোনো বারের চেয়ে চলতি বছরে বোরো ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষক মোশারফের মতো সুনামগঞ্জের কয়েক কৃষক লাখ পরিবারের মুখে ফুটেছে হাসি। যাঁরা ধারদেনা করে জমি চাষ করছিলেন ধানের বাম্পার ফলনে তাদের অনেকই ঋণ শোধ করতে করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। পরিবারের চাহিদা পূরণ করে উদ্বৃত্ত ধান বিক্রি করে ছেলে-মেয়ের বিয়েসহ পরিবারের নানা কাজ পরিচালনার করার প্রত্যাশা ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষীদের।
তাহিরপুর উপজেলার সুলেমানপুর গ্রামের বুনিয়াদী কৃষক মো. দিলোয়ার হোসেন চলতি মওসুমে ২২ কেয়ার জমি চাষাবাদ করেছিলেন। অনুকূল আবহাওয়ায় উচ্চ ফলনশীল ধানের ফলন ভালো হওয়ায় ফসল পেয়েছেন সাড়ে ৩০০ মণ। চাষাবাদসহ পরিবারের খরচ যোগানে লক্ষাধিক টাকার ঋণগ্রস্ত হলেও ফসল বিক্রি করে সকল দেনা পরিশোধ করেছেন এই চাষী। দিলোয়ার হোসেন বলেন, এবারের মতো বৈশাখ আর পাইনি। কোনো ধরনের বিপত্তি ছাড়াই ফসল গোলায় তুলতে পেরেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় দ্রুতই ধান কাটতে পেরেছি। আমি যে টাকা ঋণ করেছিলাম তা সব শোধ করে ফেলেছি। পরিবারের চাহিদা পূরণ করে আরও ধান বিক্রি করতে পারবো।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার রঙ্গারচর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামের কৃষক আমিন আলী বলেন, এবার সোনার বৈশাখ হয়েছে। আমরা কৃষক মানুষ যে ধান পাই, তা দিয়ে সারা বছর সংসার চালাই। এবার যে ধান পেয়েছি তা দিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও কিছু ধান বিক্রি করতে পারবো। অন্য বছরের চেয়ে এবছর ধানের দামও বাড়তি। সবদিকেই এবার কৃষকরা সুবিধা পেয়েছে বলে জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, এবার সুনামগঞ্জে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮০ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে ধানের ফলন ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, সুনামগঞ্জে যে ধান উৎপাদন হয় তা দিয়ে সারাদেশের ১৫ দিনের খাবারের সংস্থান করা সম্ভব। এখানকার ধান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকে। যা দেশের চালের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়ক। এবার সুনামগঞ্জে ধানে বাম্পার ফলন হওয়ায় এলাকার অর্থনীতি চাঙ্গা। যা সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।
এদিকে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক বৈরীতা ছাড়াই বোরো ফসল ঘরে তুলতে পারায় জেলাব্যাপী আনন্দ উদযাপনের পাশাপাশি মসজিদ-মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজনের কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। যার মাধ্যমে স্ব স্ব ধর্মের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com