
শামস শামীম, পাগনার হাওর ঘুরে::
কানাইখালী নদী খননের নামে অন্তত ৪ বারে প্রায় ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দের লোপাটের তথ্য পাওয়া গেছে।
জামালগঞ্জ উপজেলার নয়মৌজা এলাকার বৃহত্তর পাগনার হাওর ও আশপাশের অন্তত ৪০টি গ্রামকে ঘিরে জড়িয়ে আছে কানাইখালী নদী।
একসময়ের খরস্রোতা কানাইখালি ভরাট হয়ে মরা নদীতে রূপ পেয়েছে। একাধিক স্থানে বাঁধ দিয়ে খুন করা হয়েছে নদীটি। এতে বদলে গেছে গতি প্রকৃতি। হাওরে তৈরি হয়েছে কৃত্রিম জলাববদ্ধতা। চারদিকে হাওর থাকায় বর্ষায় নদীটিতে থৈথৈ পানি থাকলেও শুকনো মওসুমে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়।
তখন গবাদিপশু ঘাস খায়, শিশু কিশোর খেলাধুলা করে। এই পরিস্থিতিতে নদী তীরবর্তী জনপদে জলবায়ু ঝুঁকিতেও আছেন জনপদের মানুষ।
সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে এই নদীটির কঙ্কালদশা লক্ষ করা গেছে। নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পাগনার হাওরের ঢালার অংশে এখন মওসুমে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেয়, ব্যাহত হয় চাষাবাদ।
পানি নিষ্কাশনেও সমস্যা হচ্ছে পাগনার হাওরের বিভিন্ন এলাকার। এদিকে বিভিন্ন সময়ে নদীটি খনন করার কথা বলা হলেও খনন না করেই বারবার লোপাট করা হয়েছে সরকারি বরাদ্দ।
একটি রেকর্ডে অন্তত চারবার খননের তথ্য পাওয়া গেছে। যেখানে বরাদ্দ ছিল অন্তত ৩০ কোটি টাকা।
খননের এই বরাদ্দের কোনও সুফল পাননি এলাকাবাসী। লোপাট হয়েছে অর্থ। এতে নদীটির অবস্থা দিন দিন আরো করুণ হচ্ছে।
সরেজমিনে গত ১৫ এপ্রিল উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর, দৌলতপুর, বিনাজুড়া গিয়ে দেখা যায় পুরো নদীটির বেশিরভাগই ভরাট। নদীর কোনও অংশে ঘাস খাচ্ছে গবাদিপশু। নদীতে রাখা নৌকাগুলো শুকনোতে বাধা আছে। কোথাও হাঁটুপানি। এই নদীটি এক সময় বৃহত্তর পাগনার হাওরে পতিত হয়ে নোয়াগাঁও খালের সঙ্গে মিশে সুরমা নদীতে যুক্ত ছিল বলেও জানান স্থানীয়রা। নোয়াগাঁও খালটিও কবেই মরে গেছে। এখন আর বর্ষায়ও নৌ যোগাযোগ নেই নোয়াগাঁও খাল দিয়ে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিএডিসিসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- নয়মৌজা এলাকার কানাইখালী নদী কেন্দ্রিক অন্তত ৪০টি গ্রামের মানুষের বসবাস। এই নদীকে ঘিরে চাষবাসও করেন কৃষক। হাওরের গ্রামের কৃষকের ফসল ও প্রকৃতি ও পরিবেশের কথা চিন্তা করে গুরুত্বপূর্ণ এই নদীটি খননের জন্য একাধিকার বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
তবে খনন না করেই পুরো বরাদ্দ বারবার লোপাট করা হয়েছে বলে সরেজমিন যাওয়ার পর জানান এলাকাবাসী। যার ফলে খননের কোনও সুফল পাননি তারা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন) সহ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই দশকে এই নদীটি একাধিকবার খনন করা হয়েছে। এর মধ্যে চারবার খননের বরাদ্দের একটি তথ্য পাওয়া গেছে।
সর্বশেষ ২০২৩ সালে ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ কিলোমিটার খনন করা হয়েছিল। তবে বাস্তবে কোথাও নদী খনন দেখতে পাননি এলাকাবাসী। খনন না করেই এই অর্থ লোপাট করা হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। ২০২১ সালে বিএডিসি এই খালের প্রায় চার কিলোমিটার খনন করেছিল বলে জানালেও বাস্তবে তখনো কোনও খনন হয়নি।
২০২২ সালেও পানি উন্নয়ন বোর্ড আলাদাভাবে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল কয়েকটি পয়েন্ট খনন করে দেওয়ার জন্য। এই বরাদ্দও পুরোটাই লোপাট হয়।
২০১৮ সালে ২ কোটি ৯ লক্ষ টাকায় আরো ৪ কিলোমিটার বিভিন্ন স্থানে খনন করার কথা বলা হলেও তখনও নকশা অনুযায়ী খনন হয়নি।
২০১৫ সালে এলজিইিডির হিলিপ এই নদীর আরো প্রায় চার কিলোমিটার খনন করেছিল বললেও এলাকাবাসী জানিয়েছেন তখনো কোনও খনন হয়নি। এভাবে গুরুত্বপূর্ণ নদীটি খননের নামে সরকারি বরাদ্দ লোপাট করা হয়েছে বারবার।
স্থানীয়রা জানান, ২০২৩ সালে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে ভুতিয়ারপুর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার খনন করার কথা ছিল। তখন পাগনার হাওরের লম্বাবিল, গজারিয়া ও ঢালিয়ার উৎসমুখ লামাপাগনা পর্যন্ত খনন হওয়ার কথা ছিল। সেখানে কোনও কাজই হয়নি।
নদী তীরের গ্রাম লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা রিপা আক্তার বলেন, আমরা ১২ মাস ছোটবেলায় কানাইখালী নদীতে সাঁতার কাটতাম। নৌকা চলতো নদী দিয়ে। এখন বর্ষায় কিছু পানি থাকলেও শুকনো মৌসুমে শুকিয়ে মাঠ হয়ে যায় নদীটি। আমাদের চেনা নদীটি মরে গেছে।
নদীতীরের গ্রাম কামারগাঁওয়ের কৃষক মমিন মিয়া বলেন, ছোটবেলায় দেখছি নদীটি অনেক গভীর। বড় বড় নৌকা চলতো। আর এখন গরু ঘাস খায়। আমরা সেচ কাজ, গৃহস্থালি কাজ, যোগাযোগ কাজ-কিছুই করতে পারছিনা। এই নদীটি গত ২০ বছরে অন্তত ৪-৫ বার খনন করা হয়েছে বললে তিনি অবাক হয়ে জানান, ‘আমরা কখনো খনন হতে দেখিনি’। খননের টাকা ‘পেটে ও পকেটে’ গেছে বলে দাবি করেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘একবারে দিরাই বিল তনি গজারিয়া-সুরমা পর্যন্ত ছিল কানাইখালী নদীটি। খুব মাছও ছিল। সংগ্রামের পর তনি ভরাট শুরু হয়। অনে পানির জন্য আমরার সমস্যা অয়, সেচ দিতে পারিনা। তিনি জানান, মওসুমে নদীটি পানি ধারণ করতে পারেনা। জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয় হাওর। পানি না থাকায় মাছ কীট পতঙ্গও মারা যাচ্ছে।
ছয়হারা গ্রামের কৃষক রথিন্দ্র তালুকদার বলেন, ছোট সময় দেখছি ফরিদপুর তনি ৫০০ মনি নৌকা লইয়া আইতো বেফারিরা। আবার নৌকা ভইরা ধান লইয়া যাইতো। অনে গরুর গোচর অইগিছে। আমরার চউকের সামনে নদীটা মরি গেছে। মাঝে মাঝে বালতিতে খনন অইছে-বলে মন্তব্য করেন এই কৃষক।
নয়মৌজা এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু তালুকদার বলেন, আমার চোখে এই নদীটি প্রমত্তা ছিল। সুরমা নদীর সঙ্গে সংযোগ ছিল। কিন্তু আমার জীবদ্দশাতেই নদীটিকে মরে যেতে দেখেছি। বিভিন্ন সময়ে খনন প্রকল্প নেওয়া হলেও কাজ না করেই বরাদ্দ নয়ছয় করা হয়েছে। নদীটির খনন কৃষকের কোন উপকারে আসেনি। নদী হারিয়ে যাওয়ায় জলবায়ু সংকট মোকাবেলা করতেও এখন আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, কানাইখালী নদীসহ কিছু নদী খাল খননে আমরা প্রকল্প তৈরি করে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এই প্রকল্প ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পর্যালোচনা করছেন। প্রকল্পটির অনুমোদন হলে আবারও এই নদীটি খনন করা হবে। এতে নদী পুরনো রূপে ফিরবে। কৃষিতেও নানামুখি উপকার মিলবে।
কানাইখালী নদী খননের নামে অন্তত ৪ বারে প্রায় ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দের লোপাটের তথ্য পাওয়া গেছে।
জামালগঞ্জ উপজেলার নয়মৌজা এলাকার বৃহত্তর পাগনার হাওর ও আশপাশের অন্তত ৪০টি গ্রামকে ঘিরে জড়িয়ে আছে কানাইখালী নদী।
একসময়ের খরস্রোতা কানাইখালি ভরাট হয়ে মরা নদীতে রূপ পেয়েছে। একাধিক স্থানে বাঁধ দিয়ে খুন করা হয়েছে নদীটি। এতে বদলে গেছে গতি প্রকৃতি। হাওরে তৈরি হয়েছে কৃত্রিম জলাববদ্ধতা। চারদিকে হাওর থাকায় বর্ষায় নদীটিতে থৈথৈ পানি থাকলেও শুকনো মওসুমে সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়।
তখন গবাদিপশু ঘাস খায়, শিশু কিশোর খেলাধুলা করে। এই পরিস্থিতিতে নদী তীরবর্তী জনপদে জলবায়ু ঝুঁকিতেও আছেন জনপদের মানুষ।
সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে এই নদীটির কঙ্কালদশা লক্ষ করা গেছে। নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পাগনার হাওরের ঢালার অংশে এখন মওসুমে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেয়, ব্যাহত হয় চাষাবাদ।
পানি নিষ্কাশনেও সমস্যা হচ্ছে পাগনার হাওরের বিভিন্ন এলাকার। এদিকে বিভিন্ন সময়ে নদীটি খনন করার কথা বলা হলেও খনন না করেই বারবার লোপাট করা হয়েছে সরকারি বরাদ্দ।
একটি রেকর্ডে অন্তত চারবার খননের তথ্য পাওয়া গেছে। যেখানে বরাদ্দ ছিল অন্তত ৩০ কোটি টাকা।
খননের এই বরাদ্দের কোনও সুফল পাননি এলাকাবাসী। লোপাট হয়েছে অর্থ। এতে নদীটির অবস্থা দিন দিন আরো করুণ হচ্ছে।
সরেজমিনে গত ১৫ এপ্রিল উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর, দৌলতপুর, বিনাজুড়া গিয়ে দেখা যায় পুরো নদীটির বেশিরভাগই ভরাট। নদীর কোনও অংশে ঘাস খাচ্ছে গবাদিপশু। নদীতে রাখা নৌকাগুলো শুকনোতে বাধা আছে। কোথাও হাঁটুপানি। এই নদীটি এক সময় বৃহত্তর পাগনার হাওরে পতিত হয়ে নোয়াগাঁও খালের সঙ্গে মিশে সুরমা নদীতে যুক্ত ছিল বলেও জানান স্থানীয়রা। নোয়াগাঁও খালটিও কবেই মরে গেছে। এখন আর বর্ষায়ও নৌ যোগাযোগ নেই নোয়াগাঁও খাল দিয়ে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিএডিসিসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- নয়মৌজা এলাকার কানাইখালী নদী কেন্দ্রিক অন্তত ৪০টি গ্রামের মানুষের বসবাস। এই নদীকে ঘিরে চাষবাসও করেন কৃষক। হাওরের গ্রামের কৃষকের ফসল ও প্রকৃতি ও পরিবেশের কথা চিন্তা করে গুরুত্বপূর্ণ এই নদীটি খননের জন্য একাধিকার বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
তবে খনন না করেই পুরো বরাদ্দ বারবার লোপাট করা হয়েছে বলে সরেজমিন যাওয়ার পর জানান এলাকাবাসী। যার ফলে খননের কোনও সুফল পাননি তারা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন) সহ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই দশকে এই নদীটি একাধিকবার খনন করা হয়েছে। এর মধ্যে চারবার খননের বরাদ্দের একটি তথ্য পাওয়া গেছে।
সর্বশেষ ২০২৩ সালে ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ কিলোমিটার খনন করা হয়েছিল। তবে বাস্তবে কোথাও নদী খনন দেখতে পাননি এলাকাবাসী। খনন না করেই এই অর্থ লোপাট করা হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। ২০২১ সালে বিএডিসি এই খালের প্রায় চার কিলোমিটার খনন করেছিল বলে জানালেও বাস্তবে তখনো কোনও খনন হয়নি।
২০২২ সালেও পানি উন্নয়ন বোর্ড আলাদাভাবে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল কয়েকটি পয়েন্ট খনন করে দেওয়ার জন্য। এই বরাদ্দও পুরোটাই লোপাট হয়।
২০১৮ সালে ২ কোটি ৯ লক্ষ টাকায় আরো ৪ কিলোমিটার বিভিন্ন স্থানে খনন করার কথা বলা হলেও তখনও নকশা অনুযায়ী খনন হয়নি।
২০১৫ সালে এলজিইিডির হিলিপ এই নদীর আরো প্রায় চার কিলোমিটার খনন করেছিল বললেও এলাকাবাসী জানিয়েছেন তখনো কোনও খনন হয়নি। এভাবে গুরুত্বপূর্ণ নদীটি খননের নামে সরকারি বরাদ্দ লোপাট করা হয়েছে বারবার।
স্থানীয়রা জানান, ২০২৩ সালে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে ভুতিয়ারপুর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার খনন করার কথা ছিল। তখন পাগনার হাওরের লম্বাবিল, গজারিয়া ও ঢালিয়ার উৎসমুখ লামাপাগনা পর্যন্ত খনন হওয়ার কথা ছিল। সেখানে কোনও কাজই হয়নি।
নদী তীরের গ্রাম লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা রিপা আক্তার বলেন, আমরা ১২ মাস ছোটবেলায় কানাইখালী নদীতে সাঁতার কাটতাম। নৌকা চলতো নদী দিয়ে। এখন বর্ষায় কিছু পানি থাকলেও শুকনো মৌসুমে শুকিয়ে মাঠ হয়ে যায় নদীটি। আমাদের চেনা নদীটি মরে গেছে।
নদীতীরের গ্রাম কামারগাঁওয়ের কৃষক মমিন মিয়া বলেন, ছোটবেলায় দেখছি নদীটি অনেক গভীর। বড় বড় নৌকা চলতো। আর এখন গরু ঘাস খায়। আমরা সেচ কাজ, গৃহস্থালি কাজ, যোগাযোগ কাজ-কিছুই করতে পারছিনা। এই নদীটি গত ২০ বছরে অন্তত ৪-৫ বার খনন করা হয়েছে বললে তিনি অবাক হয়ে জানান, ‘আমরা কখনো খনন হতে দেখিনি’। খননের টাকা ‘পেটে ও পকেটে’ গেছে বলে দাবি করেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘একবারে দিরাই বিল তনি গজারিয়া-সুরমা পর্যন্ত ছিল কানাইখালী নদীটি। খুব মাছও ছিল। সংগ্রামের পর তনি ভরাট শুরু হয়। অনে পানির জন্য আমরার সমস্যা অয়, সেচ দিতে পারিনা। তিনি জানান, মওসুমে নদীটি পানি ধারণ করতে পারেনা। জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয় হাওর। পানি না থাকায় মাছ কীট পতঙ্গও মারা যাচ্ছে।
ছয়হারা গ্রামের কৃষক রথিন্দ্র তালুকদার বলেন, ছোট সময় দেখছি ফরিদপুর তনি ৫০০ মনি নৌকা লইয়া আইতো বেফারিরা। আবার নৌকা ভইরা ধান লইয়া যাইতো। অনে গরুর গোচর অইগিছে। আমরার চউকের সামনে নদীটা মরি গেছে। মাঝে মাঝে বালতিতে খনন অইছে-বলে মন্তব্য করেন এই কৃষক।
নয়মৌজা এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু তালুকদার বলেন, আমার চোখে এই নদীটি প্রমত্তা ছিল। সুরমা নদীর সঙ্গে সংযোগ ছিল। কিন্তু আমার জীবদ্দশাতেই নদীটিকে মরে যেতে দেখেছি। বিভিন্ন সময়ে খনন প্রকল্প নেওয়া হলেও কাজ না করেই বরাদ্দ নয়ছয় করা হয়েছে। নদীটির খনন কৃষকের কোন উপকারে আসেনি। নদী হারিয়ে যাওয়ায় জলবায়ু সংকট মোকাবেলা করতেও এখন আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, কানাইখালী নদীসহ কিছু নদী খাল খননে আমরা প্রকল্প তৈরি করে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এই প্রকল্প ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পর্যালোচনা করছেন। প্রকল্পটির অনুমোদন হলে আবারও এই নদীটি খনন করা হবে। এতে নদী পুরনো রূপে ফিরবে। কৃষিতেও নানামুখি উপকার মিলবে।