
২৬ এপ্রিল আন্তর্জাতিক মেধাসম্পদ দিবস। বিষয়টি আমাদের কাছে নতুন। আমাদের চোখের সামনে ঘটে চলেছে প্রতিদিন কত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যা আমরা দেখে দেখে অভ্যস্ত। অথচ মেধা যে একটি সম্পদ তা আমাদের ধারণার বাইরে। আজকের দিনে মেধা একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মেধা দিয়েই জয় করা হচ্ছে বিশ্ব। তাই মেধাকে লালন করা উচিত। ‘ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়েল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন (ডওচঙ) এর উদ্যোগে সারা বিশ্বের ১৮৪টি দেশে এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। জাতিসংঘে মেধা সংক্রান্ত একটি সংস্থা রয়েছে যারা মেধা নিয়ে কাজ করে। এই সংস্থাটিই ২০০১ সাল থেকে এই দিবসটির সূচনা করে। মেধাকে কিভাবে সংরক্ষণ ও এর বিকাশ করা যায় সে বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে। এক সময় আজকের দিনের মতো ভ্রমণ, যাতায়াত, যোগাযোগ তেমন সহজলভ্য ছিল না। তথ্যের আদান-প্রদান কঠিন ছিল। পৃথিবীর আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ সহজ ছিল না। এলাকার ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্প-সংস্কৃতি, সমাজ-অর্থনীতি এমন অনেক কিছুই জানতো না মানুষ। অথচ আজকের এ যুগে কত বৃদ্ধি পেয়েছে সুযোগ-সুবিধা। কত উন্নত হয়েছে তথ্য-প্রযুক্তি। একটি ছোট্ট ঘটনা কতো সহজে অল্প সময়ে পৌঁছে যাচ্ছে বিশ্বের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। এসবই মেধার উৎকর্ষতার ফসল। এ সবই সম্ভব হয়েছে মেধা সম্পদের সফল উদ্ভাবন ও প্রয়োজনের ফলে। দেখা গেছে যে, একমাত্র দারিদ্রতার কারণে বহু মানুষ তার প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েও কেউ কেউ তার অদম্য সাধনার ফলে মেধার সফলতা দেখাতে পারছে। আজকের দিনে তথ্য-প্রযুক্তির বাইরেও যত উন্নয়ন ও আবিষ্কার তা মেধার পরিচর্যারই ফসল। তাই মেধাকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করেছে ডওচঙ সংগঠন। সুনামগঞ্জের প্রাণপুরুষ আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ, তাঁর মৃত্যু ২৭ এপ্রিল ২০০৫ খ্রি.। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর এবং সাবেক সফল পররাষ্ট্র মন্ত্রী। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। তার প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা। এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা রইল। ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ভয়ংকর দিন। ১৯৯১ সালের এই দিনে চরম বিপর্যয়কারী সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের জেলা কক্সবাজার ও এর পার্শ্ববর্তী উপকূলীয় এলাকাসমূহের উপর দিয়ে বয়ে যায়। প্রচুর মানুষ, সম্পদ সেদিনের ঝড়ে বিনষ্ট হয়েছিল। অনেক পরিবার সেই ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ের নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। এই বেদনাবিধূর স্মৃতি কক্সবাজারবাসী আজও ভুলতে পারেনি। এখনও কক্সবাজারবাসী দিনটি পালন করে গভীর শ্রদ্ধার সাথে। এ লক্ষ্যে কক্সবাজারবাসী গঠন করেছে ‘কক্সবাজার ২৯ এপ্রিল স্মৃতি পরিষদ’। এই জলোচ্ছ্বাস ১৪/১৫ ফুট উচ্চতায় আসে। লোকজন দৌড়াতে থাকে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করে। এক হিসাবে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ সেদিন নিহত হয় যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও নারী। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর যারা বেঁচে গিয়েছিল তারা হয়ে পড়েছিল নিঃস্ব। ছনুয়া, গন্ডামারা, খানখানাবাদ, সরল, বাহারছড়া ও সাধনপুর এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঝড়ের গতিবেগ ছিল প্রায় ২০০ মাইল। বাঁশখালি উপজেলা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এই ঝড়ের তা-ব বিবেচনায় সরকার কর্তৃক ১৯৯৩ সালে ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে উপকূল রক্ষার জন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হলেও ব্যাপক দুর্নীতি ও কারচুপির ফলে বেড়িবাঁধ সঠিকভাবে হয়নি। ফলে তা প্রতি বছর মেরামত করা হচ্ছে। বেঁচে থাকা উপকূলের পরিবারগুলো তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নেয়। ২৯ এপ্রিল তাই কক্সবাজারবাসীর কাছে এক ভয়ংকর দিন। এখানে সাইক্লোন শেল্টার যা নির্মিত হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এখানে আরও সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা প্রয়োজন।