
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। দুই প্রতিবেশী দেশের উদ্দেশে তিনি সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন, যেন পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে না হয়।
স্থানীয় সময় গত বৃহ¯পতিবার মধ্যরাতে জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষ থেকে এই বার্তা সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করেন তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। তিনি জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় উদ্ভূত এই সংকট নিয়ে জাতিসংঘ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে এবং মহাসচিব এ বিষয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
ডুজারিক বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়ার ফলে দুই দেশের সম্পর্ক দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব দুই পক্ষকেই উত্তেজনা প্রশমনে সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
মহাসচিব গুতেরেস বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যেকোনো দ্বন্দ্ব শান্তিপূর্ণ উপায়ে, অর্থবহ আলোচনা এবং পার¯পরিক স¤পৃক্ততার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করি, সেটিই হওয়া উচিত।
গত মঙ্গলবার ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামের বৈসারণ উপত্যকায় বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালের নাগরিক। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দায়ী করেছে।
এই হামলার পরদিন, গত বুধবার ভারত কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর মধ্যে ছিল পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভারতে প্রদত্ত সব ধরনের ভিসা বাতিল, দিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানি কূটনীতিকদের সংখ্যা কমিয়ে আনা, আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া এবং ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা।
জবাবে ইসলামাবাদও ভারতের বিরুদ্ধে সমানতালে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। পাকিস্তান ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে, ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কারের নির্দেশ দেয় এবং দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিত করে। পাশাপাশি ভারতের উড়োজাহাজের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমাও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এই পাল্টাপাল্টি সিদ্ধান্তে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা, সময়মতো এই উত্তেজনা প্রশমন করা না গেলে তা সীমিত সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে। জাতিসংঘ মহাসচিবের বিবৃতি, পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সংকট নিরসনে একটি সম্ভাব্য কূটনৈতিক উদ্যোগের ইঙ্গিত বহন করছে। খবর: আল-জাজিরা