
শহীদনূর আহমেদ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাখিমারা হাওরের কৃষক শাহাবুল। ক্ষেতের ৫ খানি জমির ধান পাকা থাকলেও শ্রমিক না পাওয়ায় বিপাকে এই চাষী।
কয়েক দিন যোগাযোগ করেও হারভেস্টার মেশিনের সিরিয়েল পাননি তিনি। হাজার টাকা মুজুরিতে কয়েকজন স্থানীয় শ্রমিক সংগ্রহ করলেও একদিন কাটার পর অন্যের জমিতে ধান কাটার চলে যাওয়ার কথা থাকায় জমির অবশিষ্ট ধান নিয়ে বিপাকে তিনি।
হাওরের ধান কাটার শ্রমিক সংকট নিয়ে এই চাষী জানান, আগের মতো লাইয়া (ধান কাটার শ্রমিক) আয় না। স্থানীয় পর্যায়ে শ্রমিক পাওয়া যায় না। যদিও পাওয়া যায় মুজুরি ও অন্যান্য খরচ দিয়ে মুনাফা থাকে না। চাষাবাদ করে ক্ষতি ছাড়া লাভের মুখ দেখেন না তিনি। কৃষক শাহাবুলের মতো শ্রমিক সংকটে রয়েছেন জেলার বিভিন্ন হাওরের এলাকার মাঝারি ও ক্ষুদ্র চাষীরা।
কৃষকরা জানিয়েছেন, বিগত বছরগুলোতে বৈশাখের এই সময়টাতে সুনামগঞ্জের বোরো ধান কাটতে সিলেট, কুমিল্লা, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসতেন ধান কাটার শ্রমিক। কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের কারণে ধীরে ধীরে কমে আসছে বহিরাগত শ্রমিকের আগমন। ধান কাটতে সরকারিভাবে হারভেস্টার মেশিন সরবরাহ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে জানান কৃষকরা।
তাছাড়া কদর্মাক্ত নিচু এলাকা ও বৃষ্টিবাদলে হারভেস্টার মেশিন উপযোগী না হওয়ায় ধান কাটতে শ্রমিকের উপর নির্ভর করতে হয় কৃষকদের। ফলে নির্দিষ্ট মওসুমে পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় জমির পাকা ধান নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকরা। এই অবস্থায় বৃষ্টি বা অকাল বন্যা দেখা দিলে ক্ষেতের পাকা ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
পাখিমারা হাওরের আরেক কৃষক আইনুল ইসলাম বলেন, আমার জমির ধান ক্ষেতে পেকে ‘আম’ হয়ে রইছে। দুইদিন ধরে হারভেস্টার মেশিনের কাছে যাচ্ছি। মেশিনওয়ালা সিরিয়াল দিতে পারছেনা। ধান কাটার শ্রমিকও পাচ্ছি না। এদিকে আবহাওয়ার অবস্থা ভালো না। প্রশাসন মাইকিং করছে ধান কাটতে। বৃষ্টিপাত হলে ভয়ের মধ্যে থাকি। ধান নিয়ে বড় সমস্যায় রয়েছি।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার শেয়ালমারা হাওরের চাষী রহিম মিয়া বলেন, প্যাক কাদার মধ্যে মেশিন দিয়ে ধান কাটা যায় না। যে জমিতে পানি রয়েছে সে জমিতে কোনোভাবেই মেশিন নামানো যায় না। তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাতে হয়। এখন আগের মতো শ্রমিক পাওয়া যায় না। পেলেও মুজুরি হাজার টাকা চায়। এক কেয়ার জমি কাটতে ২৫০০-৩০০০ হাজার টাকা খরচ পড়ে যায়। তারপর মাড়াই খরচ ও ট্রলি খরচ তো দিতেই হয়। পরে আর আমাদের কিছু থাকে না। কৃষি বিভাগ
সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য বছর সুনামগঞ্জে ৩০ থেকে ৪০ হাজার শ্রমিক ধান কাটতে আসলেও এ বছর শ্রমিক এসেছে মাত্র ৯ হাজার ৩০০জন। স্থানীয় পর্যায়ে ১ লাখ ৫৫ হাজার শ্রমিক থাকলেও তা অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলায় ধান কর্তনে ১০২০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ১১১টি রিপার মেশিন রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। শ্রমিক সংকট নিরসনে শ্রমিক সরবরাহের পাশাপাশি সহস্রাধিক শ্রমিক দিয়ে
হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটতে কৃষকদের সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ। তিনি বলেন, এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
ইতোমধ্যে সকল হাওরে ধান কাটছেন কৃষকরা। হাওরে শ্রমিক সংকট থাকলেও হারভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতিদিনই পাকা ধান কাটা হচ্ছে। ইতোমধ্যে হাওরে মোট আবাদকৃত ৫১% জমির ধান কর্তন হয়েগেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে নিচু এলাকার ধান শতভাগ কর্তনের আশা করছেন তিনি।
এবার সুনামগঞ্জ বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে। ফলন ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা চালের দিক দিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাখিমারা হাওরের কৃষক শাহাবুল। ক্ষেতের ৫ খানি জমির ধান পাকা থাকলেও শ্রমিক না পাওয়ায় বিপাকে এই চাষী।
কয়েক দিন যোগাযোগ করেও হারভেস্টার মেশিনের সিরিয়েল পাননি তিনি। হাজার টাকা মুজুরিতে কয়েকজন স্থানীয় শ্রমিক সংগ্রহ করলেও একদিন কাটার পর অন্যের জমিতে ধান কাটার চলে যাওয়ার কথা থাকায় জমির অবশিষ্ট ধান নিয়ে বিপাকে তিনি।
হাওরের ধান কাটার শ্রমিক সংকট নিয়ে এই চাষী জানান, আগের মতো লাইয়া (ধান কাটার শ্রমিক) আয় না। স্থানীয় পর্যায়ে শ্রমিক পাওয়া যায় না। যদিও পাওয়া যায় মুজুরি ও অন্যান্য খরচ দিয়ে মুনাফা থাকে না। চাষাবাদ করে ক্ষতি ছাড়া লাভের মুখ দেখেন না তিনি। কৃষক শাহাবুলের মতো শ্রমিক সংকটে রয়েছেন জেলার বিভিন্ন হাওরের এলাকার মাঝারি ও ক্ষুদ্র চাষীরা।
কৃষকরা জানিয়েছেন, বিগত বছরগুলোতে বৈশাখের এই সময়টাতে সুনামগঞ্জের বোরো ধান কাটতে সিলেট, কুমিল্লা, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসতেন ধান কাটার শ্রমিক। কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের কারণে ধীরে ধীরে কমে আসছে বহিরাগত শ্রমিকের আগমন। ধান কাটতে সরকারিভাবে হারভেস্টার মেশিন সরবরাহ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে জানান কৃষকরা।
তাছাড়া কদর্মাক্ত নিচু এলাকা ও বৃষ্টিবাদলে হারভেস্টার মেশিন উপযোগী না হওয়ায় ধান কাটতে শ্রমিকের উপর নির্ভর করতে হয় কৃষকদের। ফলে নির্দিষ্ট মওসুমে পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় জমির পাকা ধান নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকরা। এই অবস্থায় বৃষ্টি বা অকাল বন্যা দেখা দিলে ক্ষেতের পাকা ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
পাখিমারা হাওরের আরেক কৃষক আইনুল ইসলাম বলেন, আমার জমির ধান ক্ষেতে পেকে ‘আম’ হয়ে রইছে। দুইদিন ধরে হারভেস্টার মেশিনের কাছে যাচ্ছি। মেশিনওয়ালা সিরিয়াল দিতে পারছেনা। ধান কাটার শ্রমিকও পাচ্ছি না। এদিকে আবহাওয়ার অবস্থা ভালো না। প্রশাসন মাইকিং করছে ধান কাটতে। বৃষ্টিপাত হলে ভয়ের মধ্যে থাকি। ধান নিয়ে বড় সমস্যায় রয়েছি।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার শেয়ালমারা হাওরের চাষী রহিম মিয়া বলেন, প্যাক কাদার মধ্যে মেশিন দিয়ে ধান কাটা যায় না। যে জমিতে পানি রয়েছে সে জমিতে কোনোভাবেই মেশিন নামানো যায় না। তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাতে হয়। এখন আগের মতো শ্রমিক পাওয়া যায় না। পেলেও মুজুরি হাজার টাকা চায়। এক কেয়ার জমি কাটতে ২৫০০-৩০০০ হাজার টাকা খরচ পড়ে যায়। তারপর মাড়াই খরচ ও ট্রলি খরচ তো দিতেই হয়। পরে আর আমাদের কিছু থাকে না। কৃষি বিভাগ
সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য বছর সুনামগঞ্জে ৩০ থেকে ৪০ হাজার শ্রমিক ধান কাটতে আসলেও এ বছর শ্রমিক এসেছে মাত্র ৯ হাজার ৩০০জন। স্থানীয় পর্যায়ে ১ লাখ ৫৫ হাজার শ্রমিক থাকলেও তা অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলায় ধান কর্তনে ১০২০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ১১১টি রিপার মেশিন রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। শ্রমিক সংকট নিরসনে শ্রমিক সরবরাহের পাশাপাশি সহস্রাধিক শ্রমিক দিয়ে
হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটতে কৃষকদের সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ। তিনি বলেন, এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
ইতোমধ্যে সকল হাওরে ধান কাটছেন কৃষকরা। হাওরে শ্রমিক সংকট থাকলেও হারভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতিদিনই পাকা ধান কাটা হচ্ছে। ইতোমধ্যে হাওরে মোট আবাদকৃত ৫১% জমির ধান কর্তন হয়েগেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে নিচু এলাকার ধান শতভাগ কর্তনের আশা করছেন তিনি।
এবার সুনামগঞ্জ বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে। ফলন ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা চালের দিক দিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা।