
শহীদনূর আহমেদ ::
ছবিতে দেখা নদীটি সুনামগঞ্জের অন্যতম মরা সুরমা নদী। যা স্থানীয়দের কাছে পুরাতন সুরমা হিসেবে পরিচিত। প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই নদীটি জেলা সদরের সুরমা নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মিলিত হয়েছে দিরাই উপজেলার কালনী নদীর সাথে। এক সময়ের খরস্রোতা নদীটি এখন বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। উজান থেকে আসা পলিতে ভরাট হয়েগেছে নদীর তলদেশ। এক সময় যে নদীতে বড় বড় লঞ্চ চলাচল করতো, এখন সেই নদীর বিভিন্ন স্থানে ধান চাষ করেন কৃষকরা। ১২ মাস যে নদী পার হতে নৌকার প্রয়োজন হতো সেই নদীর বিভিন্ন স্থানে এখন হেটে পার হন স্থানীরা।
এই চিত্র শুধু মরা সুরমা’র নয়। জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, কালনী, যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাইসহ প্রায় সকল নদী ভরাটের কবলে পড়েছে। নদীর এমন চিত্র জানান দেয়- ভালো নেই নদী ও হাওরের জেলা সুনামগঞ্জ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলায় ছোটবড় মিলে নদ-নদী রয়েছে প্রায় ১০৬টি। রয়েছে কয়েক শত খাল। জেলার প্রায় সকল নদীই ভরাটের কবলে পড়লেও সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের তালিকায় ১৯টি নদী রয়েছে।
উজানের ঢলের সাথে আসা পলিতে ভরাট হয়েগেছে এসব নদীর তলদেশ। প্রতি বছরই পরিবর্তন হচ্ছে নদীর আকৃতি। পরিবেশবাদীদের মতে, নদী ভরাটের প্রধান কারণ হলো নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টির ফলে নদীর তলদেশে পলি সঞ্চিত হওয়া এবং বিভিন্ন প্রকারের দূষণ।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, হাওর অঞ্চলে অপরিকল্পিত বাঁধ ও অবকাঠামো নির্মাণ, নদী দখল, দূষণ ও নদী ব্যবস্থাপনা ও যথাযথ সংরক্ষণ না হওয়া নদী ভরাটের অন্যতম কারণ। ফলে শুষ্ক মওসুমে নদ-নদীতে নৌ চলাচল বাধাগ্রস্তসহ হাওরে জীবন-জীবিকায় দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রভাব। দেখা দিয়েছে কৃষি কাজে সেচের পানির সংকট। ব্যাহত হচ্ছে মাছের প্রজনন। ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে সুপেয় পানির সরবরাহ। বেড়েছে বন্যার প্রাদুর্ভাবসহ পরিবেশের বিপর্যয়। বর্ষা ও শুষ্ক মওসুমে নদীগুলো খনন করে নাব্যতা রক্ষা করা, পরিকল্পিত ও পরিবেশ উপযোগী বাঁধ ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করার পাশাপাশি নদী রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক দুলাল মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জে সকল নদ-নদী ভরাটের কবলে। যা হাওরবাসীর জন্য অশনি সংকেত। নদী ভরাটের ফলে সুনামগঞ্জে প্রতিবছর বন্যা ঝুঁকি রয়েছে। নদী ভরাটের স্থায়ী কুফল থেকে বাঁচতে এখনই মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর উৎপত্তিস্থল হতে শেষ মোহনা পর্যন্ত স্থায়ীভাবে পরিকল্পিত ড্রেজিং প্রয়োজন। নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। পাহাড় থেকে যে পলি আসে তা বের না হলে তা অন্যান্য নদীতে যাবে। বৃহৎ প্রকল্পের আওতায় নদী খনন প্রয়োজন। এছাড়া অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। নদী শাসন ও রক্ষণাবেক্ষণে যথাযথ আইন প্রয়োগ করা জরুরি।
এদিকে জেলার ভরাট হওয়া নদী খননের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। জেলার ভরাট হওয়ায় ১৯টি নদী খননের জন্য ২ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে প্রকল্পে টাকার পরিমাণ বেশি হওয়ায় অনুমোদনের ক্ষেত্রে আরও যাচাই-বাছাই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার। তিনি বলেন, নদী খননের একটি বড় প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করছি মাস দুয়েকের মধ্যে এটি অনুমোদন হয়ে যাবে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে খনন কাজ শুরু হবে।
ছবিতে দেখা নদীটি সুনামগঞ্জের অন্যতম মরা সুরমা নদী। যা স্থানীয়দের কাছে পুরাতন সুরমা হিসেবে পরিচিত। প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই নদীটি জেলা সদরের সুরমা নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মিলিত হয়েছে দিরাই উপজেলার কালনী নদীর সাথে। এক সময়ের খরস্রোতা নদীটি এখন বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। উজান থেকে আসা পলিতে ভরাট হয়েগেছে নদীর তলদেশ। এক সময় যে নদীতে বড় বড় লঞ্চ চলাচল করতো, এখন সেই নদীর বিভিন্ন স্থানে ধান চাষ করেন কৃষকরা। ১২ মাস যে নদী পার হতে নৌকার প্রয়োজন হতো সেই নদীর বিভিন্ন স্থানে এখন হেটে পার হন স্থানীরা।
এই চিত্র শুধু মরা সুরমা’র নয়। জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, কালনী, যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাইসহ প্রায় সকল নদী ভরাটের কবলে পড়েছে। নদীর এমন চিত্র জানান দেয়- ভালো নেই নদী ও হাওরের জেলা সুনামগঞ্জ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলায় ছোটবড় মিলে নদ-নদী রয়েছে প্রায় ১০৬টি। রয়েছে কয়েক শত খাল। জেলার প্রায় সকল নদীই ভরাটের কবলে পড়লেও সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের তালিকায় ১৯টি নদী রয়েছে।
উজানের ঢলের সাথে আসা পলিতে ভরাট হয়েগেছে এসব নদীর তলদেশ। প্রতি বছরই পরিবর্তন হচ্ছে নদীর আকৃতি। পরিবেশবাদীদের মতে, নদী ভরাটের প্রধান কারণ হলো নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টির ফলে নদীর তলদেশে পলি সঞ্চিত হওয়া এবং বিভিন্ন প্রকারের দূষণ।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, হাওর অঞ্চলে অপরিকল্পিত বাঁধ ও অবকাঠামো নির্মাণ, নদী দখল, দূষণ ও নদী ব্যবস্থাপনা ও যথাযথ সংরক্ষণ না হওয়া নদী ভরাটের অন্যতম কারণ। ফলে শুষ্ক মওসুমে নদ-নদীতে নৌ চলাচল বাধাগ্রস্তসহ হাওরে জীবন-জীবিকায় দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রভাব। দেখা দিয়েছে কৃষি কাজে সেচের পানির সংকট। ব্যাহত হচ্ছে মাছের প্রজনন। ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে সুপেয় পানির সরবরাহ। বেড়েছে বন্যার প্রাদুর্ভাবসহ পরিবেশের বিপর্যয়। বর্ষা ও শুষ্ক মওসুমে নদীগুলো খনন করে নাব্যতা রক্ষা করা, পরিকল্পিত ও পরিবেশ উপযোগী বাঁধ ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করার পাশাপাশি নদী রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক দুলাল মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জে সকল নদ-নদী ভরাটের কবলে। যা হাওরবাসীর জন্য অশনি সংকেত। নদী ভরাটের ফলে সুনামগঞ্জে প্রতিবছর বন্যা ঝুঁকি রয়েছে। নদী ভরাটের স্থায়ী কুফল থেকে বাঁচতে এখনই মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর উৎপত্তিস্থল হতে শেষ মোহনা পর্যন্ত স্থায়ীভাবে পরিকল্পিত ড্রেজিং প্রয়োজন। নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। পাহাড় থেকে যে পলি আসে তা বের না হলে তা অন্যান্য নদীতে যাবে। বৃহৎ প্রকল্পের আওতায় নদী খনন প্রয়োজন। এছাড়া অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। নদী শাসন ও রক্ষণাবেক্ষণে যথাযথ আইন প্রয়োগ করা জরুরি।
এদিকে জেলার ভরাট হওয়া নদী খননের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। জেলার ভরাট হওয়ায় ১৯টি নদী খননের জন্য ২ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে প্রকল্পে টাকার পরিমাণ বেশি হওয়ায় অনুমোদনের ক্ষেত্রে আরও যাচাই-বাছাই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার। তিনি বলেন, নদী খননের একটি বড় প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করছি মাস দুয়েকের মধ্যে এটি অনুমোদন হয়ে যাবে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে খনন কাজ শুরু হবে।