
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে এ ধরনের ফাজলামি বাদ দেন। কোন দিন কোন মাসে কোন বছরে নির্বাচন হবে তা নির্দিষ্ট করে বলেন।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পরিষদের উদ্যোগে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া নেতাকর্মীদের সন্ধানের দাবিতে এক যুব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বাংলাদেশে কী করবেন কী করবেন না, সেটা বড় কথা নয়। বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, এ সরকারের কাজ-কামে দেশবাসী উদ্বিগ্ন। তারা আসলে কী চায় তা বোঝা যায় না। বিএনপিকে ঠেকানোর জন্য, যাতে বিএনপি দেশের জনগণের সমর্থন আদায় করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে না পারে সেজন্য নির্বাচনকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। গত ১৫ বছর যারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে তাদের কোনো না কোনোভাবে রক্ষা করা হচ্ছে, ষড়যন্ত্র করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীসহ অসংখ্য নেতাকে শেখ হাসিনা গুম করেছে, খুন করেছে। তার জন্য শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি করছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বিচার করবেন কী করবেন না তা আমরা বুঝে গেছি। আট মাস হয়ে গেল এখনো বিচারের তেমন অগ্রগতি নেই। ইলিয়াস আলী শুধু বিএনপির নেতাই নয় তিনি একজন সংসদ সদস্য ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের যারা উপদেষ্টা আছেন তারা কেউ তার বাসায় যাননি। অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পাঁচ মাস পর আয়নাঘরে গেছিলেন। কিন্তু যারা গুম হয়েছে তাদের বাসায় যাননি কেন? গুম-খুনের বিচারের উদ্যোগ নেন। যারা লুটপাট করেছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনেন।
ফ্যাসিবাদ তাড়ানো বাংলাদেশের মানুষের ওয়ান-টুর ব্যাপার মন্তব্য করে কৃষক দলের সাবেক এ আহ্বায়ক বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের মানুষ তাড়িয়েছে। আবার যদি ফ্যাসিবাদের উদ্ভব হয় তাহলে সেই ফ্যাসিবাদ তাড়ানো বাংলাদেশের মানুষের ওয়ান-টুর ব্যাপার। সেটি মাথায় নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। আপনাকে (ইউনূস) ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেছি ফুলের মালা দিয়ে বিদায় জানাতে চাই। এটাই বিএনপির ইচ্ছা এখন পর্যন্ত।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী-সন্তানদের মনে যে কষ্ট, তা দুনিয়ার অন্য কেউ বুঝবে না। গুম হওয়া প্রতিটি পরিবারের একই অবস্থা। তারা সেই গুম হওয়া ব্যক্তির নামের আগে শহীদও লিখতে পারে না। আবার জীবিত আছে, সেটাও লিখতে পারে না। তাদের কবরও জিয়ারত করতে পারে না। এ রকম যন্ত্রণা পৃথিবীর মানুষের যেন না আসে। সে যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এই সরকারের ঢিলে তৎপরতার ওপর নির্ভর করে বসে থাকলে হবে না। এ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এর জন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নেতাদের প্রোগ্রামে আনতে হবে, তাদের দিয়ে বক্তব্য দেওয়াতে হবে।
যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, বর্তমানে প্রশাসনের ওপর দুটি জিনিস ভর করেছে। একটি হচ্ছে, কোনো রকমে অফিস টাইম কাজ করে বাসায় চলে যাওয়া। আরেকটি হচ্ছে, কোনো ফাইল এলে সেটা ধীরগতি করে ফাইলটা অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া। এই কাজগুলোর কারণে সবকিছু স্থবির হয়ে আছে।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে যুব সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আরিফা সুলতানা রুমা, গণতান্ত্রিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।