সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সব নাগরিকের মানবাধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি বলপূর্বক গুমের সংস্কৃতি বন্ধে গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে (ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈড়হাবহঃরড়হ ভড়ৎ ঃযব চৎড়ঃবপঃরড়হ ড়ভ অষষ চবৎংড়হং ভৎড়স ঊহভড়ৎপবফ উরংধঢ়ঢ়বধৎধহপব-ওঈচচঊউ) যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। বৃহ¯পতিবার (আগস্ট ২৯) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক সভায় গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে সই করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় উপদেষ্টারা করতালি দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়াকে ঐতিহাসিক হিসেবে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সব নাগরিকের সুরক্ষায় ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ৩২টি দেশ এটি অনুস্বাক্ষর করার পর ২০১০ সালে এ সনদের বাস্তবায়ন শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৫টি দেশ এ সনদে যুক্ত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৩০ আগস্ট) আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসের একদিন আগে বাংলাদেশও এতে যুক্ত হলো।
গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদের লক্ষ্য হলো- গুম বন্ধের পাশাপাশি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া। গত তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বহু মানুষ গুম ও নির্যাতনের শিকার হন। এ সময়ে গুম ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ব্যাপক সমালোচনা হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিত গোপন বন্দিশালা থেকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি মুক্ত হন। এখনো ১৫০ জনের বেশি মানুষের খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক নয় সনদের ৮টিতে সই করলেও এতদিন এ সনদে যুক্ত হয়নি। গত ১৫ বছর ধরে গুম বিরোধী সনদে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়ার তাগিদ ছিল। শেখ হাসিনা সরকার তার আমলে সে দাবি অগ্রাহ্য করে চলেছিল।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর দায়িত্ব নেওয়া ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ দেশের সকল নাগরিকের মানবাধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়। দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলে আসা গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে চায়। এ লক্ষ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হওয়ার তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেয় এবং কোনো রকম শর্ত ছাড়াই এ সনদে যুক্ত হয় বাংলাদেশ। এই সনদ সই করার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের জন্য সরকার বা এর যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে জাতিসংঘ।