
স্টাফ রিপোর্টার ::
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত পাকা ধান কাটার জন্য কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পাকা দ্রুত ধান কাটার অনুরোধ করেন তিনি।
এসময় জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৮ এপ্রিল থেকে সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে হাওরে আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে। এর কারণে যেটা হবে কৃষকদের পাকা ধান ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। তাই কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সুনামগঞ্জ ও উজানে চলতি মাসের শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এমন অবস্থায় ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত ডিসি, ইউএনও এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ কৃষি অফিসের সব কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলতে ৮০-৯০ শতাংশ ধান পেকে গেলে কৃষকদের ধান কাটার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ১৮ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সুনামগঞ্জ ও উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এরকম পরিস্থিতি তৈরি হলে কৃষকরা যেন দ্রুত ধান কাটতে পারেন সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরকম বৃষ্টিপাতে ফসলরক্ষা বাঁধের কিছু না হলেও হাওরে জলাবদ্ধতা তৈরি হলে পানি নিষ্কাশনে অসুবিধা হবে। তাই ৮০ থেকে ৯০ ভাগ পেকে যাওয়া ধান দ্রুততম সময়ের মধ্যে কেটে ফেলতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের অধীনে কর্মরত সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের ধান কাটা মৌসুমে কোনও ছুটি দেওয়া হবে না। ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করতে অনুরোধ করেছি। ছাত্ররা তালিকা দিয়েছেন কোন উপজেলায় কারা সমন্বয় করবেন। কোনও কৃষক শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে না পারলে আমাদের জানান, আমরা ইউনিয়ন ভিত্তিক ছাত্র প্রতিনিধিদের দিয়ে ধান কাটার ব্যবস্থা করবো। এ ছাড়াও ধান কাটায় অসুবিধা হলে প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ সহযোগিতা করবে।
সংবাদ সম্মেলনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, ১৮ তারিখ থেকে আগামী ৭ দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে, হাওরের নিচু এলাকা নিমজ্জিত হতে পারে। এই আশঙ্কা থেকে কৃষকের পাকা ধান কেটে ফেলতে বলা হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটি বাতিল করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ বলেন, ইতোমধ্যে ১৫০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন হাওরের ধান কর্তন করছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৩ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন ধান কৃষকের গোলায় উঠবে, যার বাজার মূল্য ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। কৃষি বিভাগও প্রজ্ঞাপন জারি করে সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করেছে।