
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি ::
শান্তিগঞ্জে মাটিখেকোদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন থেকে উপজেলার তেহকিয়া গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও নদী তীরের মাটি অবৈধভাবে উত্তোলনকারী আতাউর রহমানসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাথারিয়া ইউনিয়নের তেহকিয়া গ্রামবাসীর উদ্যোগে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন পরবর্তী তেহকিয়া গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে অভিযুক্ত তেহকিয়া গ্রামের আতাউর রহমান ও তার সহযোগীদের অতি দ্রুত বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও নেতাই নদীর খননকৃত তীর ভরাটের জন্য শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
তেহকিয়া গ্রামবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন তেহকিয়া গ্রামের প্রবীণ মুরুব্বী সুলতান মিয়া। মানববন্ধন পরিচালনানা করেন প্রবীন মুরুব্বী মহর উদ্দিন।
মানববন্ধনে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন তেহকিয়া গ্রামের সুলতান আহমদ, ফখরুল ইসলাম, লুৎফুর রহমান, শামীম আহমদ, আবু তালিব, রিপন মিয়া, আব্দুল হামিদ, আজিজুর রহমান, বাবুল মিয়া, সফর আলী, মনু মিয়া, মানিক মিয়া, আব্দুল আহাদ, দিলোয়ার হোসেন, আব্দুল কাহার, খলিলুর রহমান, আব্দুল ওয়াহিদ, আল আমিন, আব্দুস শহিদ, ফয়জুর রহমান, সালেহ আহমদ, আব্দুর রজাক, নবীর মিয়া, হোসেন আহমদ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তেহকিয়া গ্রামের আতাউর ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে তেহকিয়া বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের পাশে বড় গর্ত খনন ও নেতাই নদী থেকে মাটি খনন করে অন্যত্র মাটি বিক্রি হয়েছে।এর প্রতিবাদে তেহকিয়া গ্রামবাসী গত ১৭ মার্চ তারিখে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এবং স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফজলে রাব্বানি চৌধুরী সরেজমিনে তেহকিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও নেতাই নদী পরিদর্শন করেন এবং অবৈধভাবে মাটি খননের সত্যতা পান। পরে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় আতাউর রহমানকে আটক করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে নগদ দুই লক্ষ টাকা জরিমানা প্রদান করেন।
পাশাপাশি সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতাউর রহমানকে ১৫ দিনের মধ্যে তেহকিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের পাশের জায়গা ও নেতাই নদীর খননকৃত জায়গা ভরাট করে দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। বক্তারা আরো বলেন, দীর্ঘ ১৫ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও তেহকিয়া গ্রামের আতাউর রহমান ও তার সহযোগীরা বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের পাশের জায়গা ও খননকৃত নেতাই নদীর তীর ভরাট না করে তেহকিয়া গ্রামবাসীকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। বক্তারা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্বারা অতি দ্রুত বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও খননকৃত নেতাই নদীর তীর ভরাট করে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা বলেন, তেহকিয়া গ্রামের অভিযুক্ত ৬ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং একজনকে আটক করে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে দুই লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। খননকৃত জায়গা ১৫ দিনের মধ্যে ভরাট করে দেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদেরকে নোটিশ করা হয়েছে। আরো ৩/৪ জনের নাম এসেছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। গ্রামবাসী পুনরায় আমাদেরকে অবহিত করেছেন। আমরা গ্রামবাসীকে নিয়ে মাটি ভরাট করার জন্য যা যা প্রয়োজন করবো। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।