
স্টাফ রিপোর্টার ::
শাল্লার খ্যাতিমান বামপন্থী নেতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক রামানন্দ দাশ আর নেই। ১৩ এপ্রিল (রোববার) বেলা ১১টা ১১মিনিটে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০২ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণে ৬ মাস ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছেন। স্ত্রী ইতোপূর্বেই না ফেরার দেশে চলে গেছেন।
রামানন্দ দাশ ১৯২৩ সালে শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউপির নোয়াগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রামচন্দ্র দাশ। রামানন্দ দাশ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থাকাকালীন সময়েই বামপন্থী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রয়াত কমরেড বরুণ রায় ও জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাথেও ছিল তাঁর গভীর রাজনৈতিক সম্পর্ক। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধেও ছিল তাঁর অগ্রণী ভূমিকা। তিনি ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। সুনামধন্য এনজিও প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠালগ্নেও ছিল তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
আশির দশকে বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে গেছেন রামানন্দ দাশ। গ্রামের বিশিষ্ট সালিসি ব্যক্তিত্ব হিসেবেও রয়েছে তাঁর খ্যাতি। শেষ বয়সে দায়িত্ব পালন করেছেন শাল্লা উপজেলা উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও হাওর বাঁচাও আন্দোলনের উপদেষ্টা হিসেবেও। ২০২৩ সালে শাল্লা উপজেলা প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্যের সম্মাননা পান তিনি। রাজনীতি থেকে সাংস্কৃতিক জগতে ছিল তাঁর পদচারণা। পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে সব সময় সরব ছিলেন তিনি।
অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী এই গুণী মানুষটি চলে যাওয়ায় শোকাহত উপজেলাবাসী।
তাঁর ছেলে রুবেল চন্দ্র দাশ বলেন, আমার বাবা সারাজীবন মানুষের কল্যাণের কথাই চিন্তা করতেন। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। রবিবার বিকেলে গ্রামের শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য স¤পন্ন হয়েছে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস বলেন, রামানন্দ দাশ একজন সজ্জন মানুষ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে আমরা একজন অভিভাবক হারালাম। তিনি রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সমাজিকসহ দেশের নানা কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত ছিলেন। অনিয়ম, দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন রামানন্দ দাশ। তাঁর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।