
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকশিল্পী সুষমা দাশ আর নেই। গত বুধবার বিকেলে সিলেট নগরের হাওলাদারপাড়ার নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। চার ছেলে, দুই মেয়েসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।
সুষমা দাশের মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে বিকেলে ও সন্ধ্যায় নগরের হাওলাদারপাড়ার বাসায় ভিড় করেন অনুরাগীরা।
পরিবারসূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন এই শিল্পী। ১৩ মার্চ থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যান তিনি। এরপর অবস্থার অবনতি হলে বাসাতেই রাখা হয়েছিল।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী সুষমা দাশ গান করেছেন বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিম, বাউল দুর্বিন শাহ, বাউল আলী হোসেন সরকার, বাউল কামাল পাশাসহ বাংলাদেশের প্রবীণ শিল্পীদের সঙ্গে।
লোকসংগীতে অবদানের জন্য ২০১৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন সুষমা দাশ। এ ছাড়া অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন লোকসংগীতের এই সাধক শিল্পী।
সুষমা দাশ ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার পেরুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন প্রখ্যাত লোককবি রসিকলাল দাশ এবং মাতা লোককবি দিব্যময়ী দাশ। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সুষমা দাশ ছিলেন বড়। তাঁর ছোট ভাই একুশে পদকপ্রাপ্ত পন্ডিত রামকানাই দাশ ছিলেন শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী। এছাড়া পরিবারের অনেক সদস্যই সংগীতের সঙ্গে জীবনযাপন করছেন।
১৩৫২ বাংলা মোতাবেক ১৯৪৫ সালে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার চাকুয়া গ্রামের প্রাণনাথ দাশের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সুষমা দাশ। সংগীতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি। রবীন্দ্রপদক ২০১৯, কলকাতা বাউল ফকির উৎসব সম্মাননা ১৪১৭ বাংলা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সম্মাননা, লালন শাহ ফাউন্ডেশন সম্মাননা, জেলা শিল্পকলা একাডেমি গুণীজন সম্মাননা ২০১৫, বাংলাদেশ বেতার গুণীজন সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।