
স্টাফ রিপোর্টার ::
প্রয়োজনীয় স্থানে ফসলরক্ষার জন্য প্রকল্প না দেয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওরের ফসল। এ নিয়ে স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন ব্রিজের পূর্বদিকের হাফ কিলোমিটার সড়কের প্রায় বিশ মিটার জায়গায় ভাঙা আছে। এই জায়গাটুকু অনেকটাই নিচু। এই অংশ দিয়ে দাঁড়াইন নদীর পানি হাওরে প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। মাত্র ২০ হাজার টাকার মাটি ভরাট করলে ওই ভাঙা অংশটি ভরাট করা যেত। এতে ছায়ার হাওরের ফসল ঝুঁকিমুক্ত থাকতো। তারা বলেন, পাহাড়ি ঢলে নদীতে পানির চাপ বাড়বে। ফলে শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন ব্রিজের পূর্বদিকের সড়কের নিচু অংশ দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করে অঘটন ঘটাতে পারে।
জানাযায়, দিরাই-শাল্লা সড়ক পুনঃনির্মাণের কাজ চলছে। বিশেষ করে ব্রিজ, কার্লভার্ট ও মাটি কাটার কাজ চলমান রয়েছে। শাল্লা উপজেলার সুখলাইন পর্যন্ত মাটির কাজ অনেকটাই শেষের পথে। যদিও দিরাই উপজেলা ও শাল্লা উপজেলার কিছু কিছু অংশ বাকি আছে। মাটির কাজ সমাপ্ত করতেই আরও এক বছর সময় লাগতে পারে। স্থানীয়রা জানান পাউবো’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ধারণা করেছিলেন, সড়কের ওই অংশটি সড়ক বিভাগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উঁচু করে দিবে। কাজেই এখানে প্রকল্প দেয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু হল উল্টোটা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই অংশে মাটি ভরাট করেনি। এ অবস্থায় শাল্লা সদর সংলগ্ন বলা ভালো পাউবো’র নাকের ডগায়ও নেই ছায়ার হাওরের সুরক্ষা।
স্থানীয়রা জানান, ওই অংশটুকু ২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছরও বর্ষার ঢেউয়ে ভেঙে (আর.এল) এর অনেকটা নিচু অবস্থানে রয়েছে। এনিয়ে কোনও তোড়জোড় নেই পাউবোর। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, নদীতে পানি বাড়লেই এদিক দিয়ে পানি ঢুকবে ছায়ার হাওরে।
এ ব্যাপারে হাওর বাঁচাও আন্দোলন উপজেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস বলেন, দাঁড়াইন নদী এমনিতেই ভরাট হয়ে আছে। এদিকে যদি সড়ক বিভাগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাটি না ভরাট করে তাহলে তো বিপদ ঘরের কাছে। এই জায়গাটি ভেঙে অনেকটা নিচু হয়ে গেছে। নদীতে পানির চাপ আসলে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ জায়গাটি সামাল দিতে পারবে না। সরকার কোটি কোটি টাকা দিয়েছে ফসল রক্ষা করার জন্য। কিন্তু পাউবো নাকের ডগায় কেন ঝুঁকি রেখে দিল? এখানে পানির চাপ ধরে রাখার জন্য দ্রুত কিছু একটা করতে হবে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে।
১২ মার্চ এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা এসও রিপন আলী এ প্রতিবেদকের কাছে পাল্টা জানতে চান- সড়ক বিভাগ কি এদিকে মাটি কাটবে না? তখন এ প্রতিবেদক বলেন, সম্ভবত না। তখন তিনি দায়সারা যুক্তি দেখান। এসও রিপন আলী বলেন, পানি চাপ দিলে উপরে বস্তা দিতে পানি আটকাবো। পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করে এই ঝুঁকি না নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করেন এ প্রতিবেদকও। সাথে সাথেই সার্ভে কাজে যুক্ত তার সহকর্মীদের ফোন করেন তিনি। তখন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের অংশটুকু মেপে আসতে বলেন পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী রিপন আলী।