অধিকার রক্ষার সংগ্রামে শহিদদের স্মৃতি তর্পণ করি ও বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই গত মঙ্গলবারের (২৭ আগস্ট ২০২৪) দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ শিরোনাম ছিল, ‘সরকার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষা করবে : ড. ইউনূস’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সমগ্র বাংলাদেশকে একটি পরিবার বলে উল্লেখ করেছেন এবং সরকারের দায়িত্ব হলো প্রতিটি নাগরিকের অধিকারের সুরক্ষা দেওয়া। আমরা প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যকে সমর্থন করি ও অভিনন্দন জানাই। নাগরিক অধিকার রক্ষার বিষয়টি আসলে খুব একটা সহজ কথা নয়। যে-কোনও রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিসরে মানুষের নানা নীতি ও অধিকার সমষ্টির মধ্যে মূলত বিশেষ পাঁচটি অধিকার মৌলিক অধিকার (অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা) হিসেবে স্বীকৃত হয়ে আসছে প্রাচীন পৃথিবীর সেই গ্রীস ও রোম সভ্যতার সময় থেকে। সমাজে সেগুলোর উদ্ভব ঘটেছে প্রাকৃতিক নিয়মের ধারা অবলম্বন করে এবং ক্রমে নাগরিক অধিকার রক্ষার বিষয়ের সঙ্গে সে-অধিকারগুলো সুরক্ষার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে জড়িয়ে গেছে। একদা সামন্ততন্ত্রের বিরুদ্ধে মানুষের মুক্তির সংগ্রামে এই মৌলিক অধিকারের প্রত্যয়গুলো ভাবাদর্শগত হাতিয়ারে পর্যবসিত হয়েছিল। কিন্তু মুনাফাভিত্তিক আর্থসামাজিক গঠনব্যবস্থার পরিসরে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত এই পাঁচটি মৌলিক অধিকারÑ বলতে গেলে সর্বাংশে বিঘ্নিত হয়। সেজন্য কোনও দেশে পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে জিইয়ে রেখে কিংবা বলা ভালো বিশেষ করে বিশ্বকে সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের নিগড়ে আটকে রেখে কোনও রাষ্ট্রের ভেতরে সামগ্রিকভাবে নাগরিক অধিকার রক্ষা কিংবা প্রতিষ্ঠা করা সত্যিকার অর্থেই একটি কঠিন রাজনীতিক অঙ্গিকারও। অতিসম্প্রতি বাংলাদেশের পরিসরে সংঘটিত এই অঙ্গিকার রক্ষার সংগ্রামে ‘বৈষম্যবিরোধী’ ছাত্রজনতার আন্দোলনের সংগ্রাম একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ সূচনা নিঃসন্দেহে এবং এই সংগ্রামে অনেকেই প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। আমরা তাঁদের স্মৃতি তর্পণ করি ও তাঁদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।