
গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়েছে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে লোকেরা বিভিন্ন সংঘর্ষে অর্থাৎ দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও আধিপত্যের লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ছেন। মসজিদের মাইক প্রধানত আজান দেওয়ার জন্যে ব্যবহৃত হয় এবং মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় বার্তা কিংবা মৃত্যুসংবাদ প্রচারের জন্যও ব্যবহার হয়ে থাকে। এর বাইরে সামাজিক-রাজনীতিক কোনও কাজে মসজিদের মাইক ব্যবহারের প্রয়োচলন (প্রয়োজন+প্রচলন) নেই।
একাত্তরের যুদ্ধের সময় পাক হানাদারদের আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেতে মসজিদের মাইকে সতর্কবার্তা প্রচার করা হয়েছে, এ দেশের ইতিহাসে এমন উদাহরণ আছে। উদাহরণ আছে ডাকাতদের আক্রমণের বিষয়ে লোকজনকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য সমজিদের মাইকের ব্যবহারের।
জনহিতৈষণা সম্পন্ন করার মতো কাজগুলো পুরোপুরি ধর্মীয় কাজ না হলেও এসব ক্ষেত্রে মসজিদের মাইকের ব্যবহার মানবিকতার স্বার্থে মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু মসজিদের মাইক ব্যবহার করে সংঘর্ষে জড়ানোর মতো মানবতাবিরোধী কাজ কারাকে মেনে নেওয়ার কোনও যুক্তি থাকতে পারে না। অথচ আমাদের দেশে তাই হচ্ছে, সেটাকে প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। দেশের আলেম-উলামাদের কর্তৃক এভাবে মানবতাবিরোধী কাজে মসজিদের মাইক ব্যবহারকে প্রতিরোধ করার পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
গত বুধবারের (৫ মার্চ ২০২৫) দৈনিক সমকালের ১ম পৃষ্ঠায় মুদ্রিত একটি সংবাদপ্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, “গণপিটুনিতে দু’জনকে হত্যা নেপথ্যে আধিপত্যের লড়াই”। এই সংঘর্ষের আগে মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত পড়ার বার্তা প্রচার করা হয়েছিল। ৯ম পৃষ্ঠায় আরেকটি সংবাদপ্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, “মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৩৫”।
জাগতিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সংঘর্ষ কিংবা আধিপত্যের হানাহানি আগেও ছিল, এখনও আছে এবং বোধ করি থাকবে, জগতে যতোদিন পর্যন্ত সম্পদের উপর ব্যক্তিমালিকনা থাকবে। সেটা নিরসনের জন্যে মানুষ শেষ পর্যন্ত কোন পথোপায় অবলম্ব করবে সে আলোচনার অবতারণা আপাতত এখানে করছি না, এখানে এবংবিধ সমাজের পক্ষে অহিতকর কাজে (আসলে অপকর্ম) মাইকের ব্যবহার না করার জন্য জনসমাজের প্রতি আহ্বান রাখছি এবং প্রশাসন যেনো সমজিদের মাইক কেবল ধর্মীয় ও ক্ষেত্রবিশেষে জনহিতকর কাজে ব্যবহার করা হয় তা নিশ্চিতকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, এই দাবি পেশ করছি।