সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জাসদের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাকে আটকের পর নিউমার্কেট থানার এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পরিবার নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গত বৃহ¯পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে জিয়াউর হক নামে এক আইনজীবী এ মামলাটি করেন। ইতিমধ্যে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক গ্রেপ্তার হয়ে কারাগার হেফাজতে রয়েছেন।
জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট ১৪ দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা। সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনাসহ সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নামে বেশ কয়েকটি হত্যা মামলা হয়েছে। ১৪ দল নেতা ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নামেও মামলা হয়েছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে পরপর তিনবারের সংসদ সদস্য হন।
হাসানুল হক ইনু পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় (পূপাপ্রকাবি) বর্তমান বুয়েট থেকে বিএসসি ইন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে বর্তমান বুয়েট তৎকালীন পূপাপ্রকাবি ছাত্রলীগের সাধারণ স¤পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তিনি ভারতের তান্দুয়াতে স্থাপিত বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সের (বিএলএফ) প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ক্যাম্পপ্রধান ও প্রশিক্ষক হিসেবে গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন।
হাসানুল হক ইনু ১৯৭২ সালে জাতীয় কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ স¤পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৩১ অক্টোবর ১৯৭২ সালে গঠিত জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ও ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ সালের অভ্যুত্থানে গণবাহিনীর উপপ্রধান ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবু তাহেরের সহকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করেন।
১৯৮৬ সালে জাসদের সাধারণ স¤পাদক ও ২০০২ সালে দলটির সভাপতি নির্বাচিত হন। তবে এর মধ্যে দলটি একাধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট গঠনে ভূমিকা রাখেন। ২০০৮ সালে কুষ্টিয়া-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন একই আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করলেও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন ইনু।
হাসনুল ইক ইনুর স্ত্রী আফরোজা হক রীনা একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ছিলেন। এছাড়া তিনি নারী জোটের আহ্বায়ক এবং জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি।