
স্টাফ রিপোর্টার ::
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে সুনামগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সুনামগঞ্জ ঐতিহ্য জাদুঘর প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে আলফাত উদ্দিন স্কয়ারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট নূরুল আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ মাওলানা তোফায়েল আহমেদ খান। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অ্যাড. মুহাম্মদ শামস উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মোমতাজুল হাসান আবেদ, সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ আলী, সুনামগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমীর আব্দুস সাত্তার মামুন, ছাত্রশিবির জেলা সভাপতি মেহেদি হাসান তুহিন প্রমুখ।
সমাবেশে জেলা জামায়াতের উপাধ্যক্ষ মাওলানা তোফায়েল আহমেদ খান বলেন, দেশবাসী আশা করেছিল যে, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার এটিএম আজহারুল ইসলাম স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে মুক্তি লাভ করবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ৬ মাস ১০ দিন অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের বিচারিক কার্যক্রমসমূহ সারাবিশ্বে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত।
তিনি বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। এতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ন্যূনতম চিকিৎসা সেবাটুকুও দেয়া হয়নি। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১২ সালে তিনি জামিনে মুক্তি লাভ করার পর নিজ বাসায় অবস্থানকালে পুলিশ তার বাড়ি ঘেরাও করে রাখে।
মাওলানা তোফায়েল আহমেদ খান বলেন, আওয়ামী সরকার দলীয় লোকদের দ্বারা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো সাক্ষ্য প্রদান করে। একজন সাক্ষী আদালতে বলেছেন যে, তিনি ৭ কিলোমিটার দূর থেকে এবং অপর আরেক সাক্ষী বলেছেন যে, তিনি ৩ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনা দেখেছেন। সাক্ষীদের এই বক্তব্য অবাস্তব ও হাস্যকর। আরেকজন সাক্ষী নিজেকে আজহারুল ইসলামের ক্লাসমেট দাবি করে আদালতে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে তাকে এখনো আটক রাখায় জাতি বিস্মিত ও হতবাক। দেশবাসী স্বৈরাচারের কবল থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্তি চায়। অবিলম্বে আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান বক্তারা।
তোফায়েল আহমেদ খান বলেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপির অনেক নেতাকর্মীরা মুক্তি পেয়েছেন, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি লুৎফুজ্জামান বাবর মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু এখনো জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পাননি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তার দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।