
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নে গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র আস্তমা ও কামরূপদলং গ্রামবাসীর মধ্যে দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধ শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আস্তমা গ্রামের উত্তরে ও কামরূপদলং মাদ্রাসার পূর্বে পশ্চিম বন্দে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় আস্তমা গ্রামের পক্ষে গুরুতর আহত দু’জনকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া কামরূপদলং গ্রামের গুরুতর আহত তিনজনকে পাঠানো হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে। অন্যান্য আহতরা শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আস্তমা গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন- আক্তার হোসেন (৩০), দুলাল মিয়া (২০), জুয়েল মিয়া (৩০), শামসুজ্জামান (২৮), নাছির আলী (৫০), আবদুল জলিল (৩০), খাইরুল আমীন (২৬), এমরান হোসেন (২৮), সাদিক মিয়া (৪৫), নুরুজ্জামান (৩৫) ও সৌরভ হোসেন (২৬)। এছাড়াও এ গ্রামের পক্ষে আরো ১০/১৫ জন লোক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাৎক্ষণিক সময়ে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। আক্তার হোসেন ও দুলাল মিয়া গুরুতর আহত হওয়ায় তাদেরকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, কামরূপদলং গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন- বাতির আলী (৫৬), সুন্দর আলী (৭০), সুজন মিয়া (৩৫), কালাই মিয়া (২৭), মতিউর রহমান (৩২), শওকত আলী (২৭), নবী হোসেন (২২) ও শাফি আহমেদ (২৫)। তাদের পক্ষের আহত আরও ৭/৮ জনের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানাযায়নি। গুরুতর আহত বাতির আলী, সুন্দর আলী ও সুজন মিয়াকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে আস্তমা গ্রামের কৃষক বজলু মিয়ার গরু কামরূপদলং গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়ার জমির ধান খায়। এ বিষয় নিয়ে জমিতেই দুই কৃষকের মধ্যে বাকবিত-া ও মারামারি হয়। পরে এই ঘটনায় দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এ রবিবার সকালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আস্তমা গ্রামের পক্ষে আঙ্গুর মিয়া দাবি করেন, গরু অবুঝ প্রাণী। গরুকে কেউ বলে দেয় না যে, অমুকের জমিতে গিয়ে ধান খেয়ে আয়। গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে বজলু মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনকে মারধর করে জমির মালিক, কামরূপদলং গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়া। এতে আমাদের গ্রামের মধ্য উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় কামরূপদলং গ্রামের পক্ষে নুরুল ইসলাম ভাই, ইকবাল হোসেন ভাইসহ বেশ ক’জন এসেছিলেন ঘটনাটি সালিশ মিমাংসার মাধ্যমে শেষ করে দিতে। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছিলাম, গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে এর মিমাংসা হবে। কিন্তু রবিবার সকালে আবারো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
কামরূপদলং গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবারে একটি হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল। আমরা চেয়েছিলাম বিষয়টি গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে শেষ করে দেই। কিন্তু আস্তমা গ্রামবাসী বিচার না মেনে সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের গ্রামের দিকে আক্রমণ করে। পরে আর কোনো কিছুই কন্ট্রোলে থাকেনি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী বলেন, সংঘর্ষের খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কোনো আটক বা গ্রেফতার নেই। যদি কোনো পক্ষ মামলা করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।