দেশের অভ্যন্তরে ও উজানে ভারতের সেভেন সিস্টার রাজ্যগুলোতে অতিভারী বৃষ্টিপাত আরও ছয়দিন হতে পারে। ফলে দেশের অভ্যন্তরে বন্যা পরিস্থিতির আরও বিস্তার লাভ করতে পারে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অফিস এবং বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় পানি কমিশন বলছে, অতি বৃষ্টিতে মহুরী নদীর পানি গত ৪১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়েছে। এছাড়া গোমতীর পানিও বিপৎসীমার এক মিটারের মতো ওপরে ওঠে গেছে।
এদিকে বাংলাদেশের পানির উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, গোমতী ও ফেনী নদীর পানি গত আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। মহুরী নদীর পানিও বিপৎসীমার ওপরে।
এ অবস্থায়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে। বাড়তে পারে বন্যা কবলিত এলাকা।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, বর্তমানে সাতটি নদীর পানি ১০ স্টেশনে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারার পানি সুনামগঞ্জের মারকুলীতে ও শেরপুর-সিলেটে, মনু নদীর পানি মনু রেল ব্রিজ ও মৌলভীবাজারে, ধলায়ের পানি কমলগঞ্জে, খোয়াই
নদীর পানি হবিগঞ্জের বাল্লায়, হবিগঞ্জে, মুহুরীর পানি ফেনীর পরশুরামে, ফেনী নদীর পানি চট্টগ্রামের রামগড়ে ও হালদার পানি চট্টগ্রামের নারায়ণহাটের বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব এলাকার নি¤œাঞ্চল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে। এতে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, লঘুচাপের কারণে আসাম, মিজোরাম, অরুনাচল, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মনিপুর ও নাগাল্যান্ডে আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে ত্রিপুরায় বৃষ্টিপাত একদিন পর কিছুটা কমতে পারে।
এদিকে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, আগামী তিনদিন দেশের সব বিভাগে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমতে পারে। বর্ধিত পাঁচদিনে বৃষ্টিপাত আরও কমে বাড়তে পারে তাপমাত্রা।
আগস্টের শুরুতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তৎকালীন পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেছিলেন, এ মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। তবে মৌসুমি ভারী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকার কতিপয় স্থানে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
একদিনে মেঘালয়ে ৩০৩ মিলিমিটার, আগরতলায় ১৮২ মিলিমিটার, আসামে ৬০ মিলিমিটার, মিজোরামে ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এদিকে দেশের অভ্যন্তরে ফেনীতে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩১২ মিলিমিটার। এছাড়া মাইজদীকোর্টে ১৪৪ মিলিমিটার, নেত্রকোনায় ১৬০ মিলিমিটার, মৌলভীবাজারে ১৭৫ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জে ১৩০ মিলিমিটার, নারায়ণহাটে ১৫৬ মিলিমিটার, ময়মনসিংহে ১০৬ মিলিমিটার ও চাঁদপুরে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।