
গত শনিবার (২৫ জানুয়ারি ২০২৫) পত্রিকান্তরে (দৈনিক মানবজমিন) এক সংবাদপ্রতিবেদনে একজন প্রবাসীর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, এখন যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতন্ত্র, মানুষের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে জনগণকে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। অন্য একজন বলেছেন, তাঁর পার্টি সবসময় জনগণের মৌলিক অধিকার, বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ। দেশ ও জাতির স্বার্থে পতিত অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া নানাবিধ জঞ্জাল মোকাবিলা করে গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করতে হবে।
আমরা তাঁদের সঙ্গে একমত পোষণ করছি। তাঁরা যা বলেছেন দেশের সাধারণ মানুষ তাই চান এবং চেয়ে আসছেন ১৯৭১-এর পর থেকেই, তার আগে পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক আমলে কী চাইতেন তার কথা বলছি না। কিন্তু বিশেষ পরিতাপের বিষয় যে, কোনও সরকারের আমলেই জনগণের এইসব প্রত্যাশা পূরণ হয় নি, বরং প্রতিনিয়ত ক্ষুণœ হয়েছে এবং এখন সে-গুলোকে বিগত সরকারের রেখে যাওয়া জঞ্জাল বলা হচ্ছে।
অভিজ্ঞমহলের ধারণা, এইসব জঞ্জাল উড়ে এসে জুড়ে বসেনি। তার একটি আর্থসামাজিক-রাজনীতিক ব্যবস্থাগত কারণ আছে। আর সেই সুনির্দিষ্ট ঐতিহাসিক কারণটিকে উৎখাত করা না গেলে জঞ্জাল বাড়তেই থাকবে এবং যাঁরাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসুন না কেন তাঁরা এই জঞ্জাল সৃষ্টি করার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েই আসবেন এবং জঞ্জাল তৈরি করতেই থাকবেন। আপাতত বিদ্যমান রাজনীতির নিয়মনীতি এটাই প্রতিপন্ন করছে।
যদি তাঁরা ক্ষমতায় গিয়ে এই জঞ্জাল তৈরি করতে না চান তবে তাঁদেরকে মুক্তবাজার অর্থনীতিকে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রয়োগ না করার রাজনীতিক কর্মসূচি ঘোষণা করে ক্ষমতায় আসবে হবে এবং কার্যক্ষেত্রে মুনাফানির্ভর মুক্তবাজার অর্থনীতি পরিহার করতে হবে। কারণ এই অর্থনীতি মানুষ কর্তৃক মানুষকে শোষণ করার বদমায়েসী চালু রাখে এবং ইতোমধ্যে কথিত জঞ্জাল তৈরিতে কসুর করে না। তাই ক্ষমতায় গিয়ে মুক্তবাজার অর্থনীতিকে বর্জন করতে না পারলে আওয়ামী লীগসহ বিগত সকল সরকারের মতোই অবস্থা হবে ভাবী ক্ষমতাসীন সকল সরকারের এবং অনিবার্য বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও অভ্যুত্থানের জন্যে অপেক্ষায় থাকতে হবে।