মোহাম্মদ আব্দুল হক
আমাদের সমাজের মানুষের নানান রকম পরিচয়। এর-ই মাঝে পাই কেউ কেউ মহান পরিচয়ের শিক্ষক। ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ সাঃ আজীবন সকলের কাছে মহামানব শিক্ষক। সক্রেটিস, জালালুদ্দিন রুমি, শেখ সাদি মানুষের কাছে আজীবন শিক্ষক। শিক্ষকদের স¤পর্কে আমার একটা মূল্যায়ন পূর্বের কোনো লেখায় উল্লেখ করেছি- ‘একজন চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তিনি তা। একজন শিক্ষক আজীবন শিক্ষক। একজন কবি কিংবা লেখক যুগে যুগে কবি ও লেখক।
একেকজন মানুষের জীবনে শিক্ষকের গুরুত্ব অধিক। এই-যে আমি আমার জীবনও বিভিন্ন পরিবেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে একেকজন শিক্ষকের দ্বারা প্রভাবিত। এরমধ্যে কেউ কেউ পারিবারিক পরিবেশে পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অনেকেই আছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা-গুরু শিক্ষা-গুর্বী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষক-শিক্ষিকা। আমার পারিবারিক পরিবেশে আমার পিতা হাজী মো. আব্দুল আজিজ তালুকদার আমাকে একটি বাক্যের দ্বারা বই পড়ায় আগ্রহী করে তুলেছিলেন- “প্রতিদিন বিকালে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে যাও, মাঝে মাঝে পাবলিক লাইব্রেরিতে যাইয়ো।” একদিন আমাকে বলেছিলেন- “তুমি যেহেতু লিখতে পারো, পূর্ব পুরুষদের নাম লিখে রাখো।”
আমি আমার পিতার নিকট থেকে জেনে পূর্ব পুরুষদের নাম লিখে রেখেছিলাম এবং সেই থেকে আমি লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়তে মনোযোগী হয়েছিলাম। আমি জানি না এরচেয়ে বড়ো কি স¤পদ একজন পিতা তার সন্তানকে দিতে পারেন! আর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাওয়া শিক্ষকদের অনেকের মাঝে অন্যতম ড. শফিউদ্দিন আহমদ, রবীন্দ্র নারায়ণ তালুকদার, অজয় চক্রবর্তী বেণু, মু. আব্দুর রহিম, মো. আব্দুর রউফ, প্রফেসর মহিবুর রহমান স্যার। এছাড়াও রয়েছেন আমার বহু সতীর্থ স্বজন। আমাদের সমাজের লেখকেরাও শিক্ষক, যদি তাঁরা তাঁদের লেখায় সমাজ সচেতনতা ও মানবতার বিষয় তুলে ধরতে পারেন এবং অন্ধকার থেকে আলোর পথের সন্ধান দিতে পারেন। আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। এই নিবন্ধে আমি আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক জনাব মো. আব্দুর রউফ স্যারকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে তাঁর জীবনের কিছুটা উপস্থাপন করার আকুলতা অনুভব করছি।
শিক্ষক শব্দের সাথে শিক্ষা ও জ্ঞান ওতোপ্রোতোভাবেই জড়িয়ে থাকে। শিক্ষা ও জ্ঞান বিষয়ে আমি প্রাথমিক স্তরে যে প্রাথমিক ধারণা অর্জন করেছি তার সাথে আমার পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মো. আব্দুর রউফ স্যারের নাম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয়। একজন শিক্ষকের বড়ো অবদান হলো তিনি তাঁর ছাত্রদেরকে জীবনের মূল্যবোধ শিক্ষা দিয়ে থাকেন। স্যারের দেয়া বিভিন্ন সময়ের শিক্ষা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান দ্বারা আমি ‘শিক্ষা, জ্ঞানার্জন ও সার্থকতাৎ প্রবন্ধে লিখতে পেরেছি- “মূলত আমরা যেসব পদ্ধতিতে বা ধারাবাহিক যে প্রক্রিয়ায় কোনোকিছু জানতে পারি বা আয়ত্বে আনতে সক্ষম হই তা-ই হলো শিক্ষা। আবার বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে যা শিখা হয় অথবা নানান প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বিষয়ে যে দক্ষতা অর্জিত হয় তা-ই হলো জ্ঞান।”
মো. আব্দুর রউফ স্যার চলনে ও কথা বলায় যা শিখিয়েছেন, তা থেকেই আমি বলতে পারি- “শিক্ষা মানুষকে অধিকার সচেতন করে।” আমি স্যারকে দেখেছি সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে। দেহের গড়নে স্যারকে সহজেই বুঝা যেতো স্যার সুস্থ শরীরে যথেষ্ট শক্ত সমর্থ ছিলেন। আমি সরাসরি দেখেছি তিনি পোশাক সচেতন একজন অনুকরণীয় বড়ো মাপের মানুষ ছিলেন। স্যার অধিক সময়ে সাদা রঙের পোশাক পরিধান করতেন। স্যার যখন কথা বলতেন, মনে হতো তাঁর উপস্থাপনায় তিনি আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তা নিয়েই বলতেন। তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেন। স্যার মো. আব্দুর রউফ শুধু চাকরির শিক্ষক ছিলেন না, স্যারের ভিতরে ছিলো শিক্ষানুরাগী এক মননশীল মানুষ। তাঁর সন্তানদের মধ্যে স্যারের এই গুণের প্রভাব লক্ষ করা যায়।
মো. আব্দুর রউফ স্যারের স্ত্রী ‘রতœগর্ভা মা’ এওয়ার্ডপ্রাপ্ত মোছা. জাহানারা রউফ, আমার আপন চাচাতো বোন। আত্মীয়তার সূত্রে মো. আব্দুর রউফ স্যার আমার ভগ্নিপতি হলেও স্যারের ব্যক্তিত্বের কাছে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াকালীন কখনও তাঁকে স্যার ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারতাম না। এমনকি স্যারের জীবদ্দশায় স্কুলের বাইরেও এমনকি সামাজিক বা পারিবারিক কোনো উৎসবেও কোনোদিন স্যার ছাড়া অন্য কোনো সম্বোধন করিনি।
একটা কথা স্মরণীয়, সময়টা ২০১৪ খ্রীষ্টিয় সালের অক্টোবর মাস। স্যার একদিন অনেকের মধ্যে থেকে আমাকে ডেকে বলেন- “মোহাম্মদ আব্দুল হক, এইদিকে আসো। আমার শ্বশুরকে (আমার বাবার কথা) আল্লাহ তায়ালা অনেক সন্তান দিছেন এবং তিনি সারাজীবন চেষ্টা করেছেন, শুধু রঙঢঙ করে আর দশটা পরিবারের মানুষের মতো জীবন যাপন না-করে, তোমরা লেখাপড়া করে সমাজে বিভিন্নভাবে সম্মানজনক জায়গায় পৌঁছো।... আল্লাহ আমাকেও এগারোটা সন্তান দিছেন। আমি জীবনে আর কিছু করতে না-পারলেও আমার ছেলেমেয়েদের সকলকে পড়াশোনা করিয়েছি। আমার সন্তানদের সকলেই গ্র্যাজুয়েট। আল্লাহর দরবারে অনেক শুকরিয়া।
আসলে মো. আব্দুর রউফ স্যারের শিক্ষক জীবনের সফলতা স্বল্প পরিসরের এক নিবন্ধে এবং শুধু একজনের লেখায় খুব সামান্য তুলে ধরতে পারা যাবে। একজন শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর মো. আব্দুর রউফ স্যারকে বিশদভাবে সকলের কাছে উপস্থাপন করার জন্য অনেকের লেখা নিয়ে একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
মো. আব্দুর রউফ বাংলাদেশের ঈশান কোণের সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার উজানীগাঁও গ্রামে পিতা মো. মোমিন আলী ও মাতা মোছা. আস্তুরা বিবি’র ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৫ খ্রীষ্টিয় সালের ৯ জানুয়ারি।
সংক্ষেপে স্যারের শিক্ষা ও শিক্ষকতা জীবন :
উজানীগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে ম্যাট্রিক (এসএসসি) পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ¯œাতক ডিগ্রী পাস করেন। স্বাধীন বাংলাদেশ হওয়ার অনেক আগেই তিনি ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি তৎকালীন পাইগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ খ্রীষ্টিয় সাল পর্যন্ত পাইগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ও জয়কলস উজানীগাঁও রশিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ১৯৬৯ খ্রীষ্টিয় সালে তিনি সরকারি চাকরিতে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন এবং ১৯৯৯ খ্রীষ্টিয় সাল পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। মাঝে কিছুদিন জকিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। তিনি পদোন্নতি পেয়ে ১৯৯৮ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদে আসীন হন। এখানেই শেষ নয়, তিনি পরবর্তীতে সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও পদোন্নতি পেয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দক্ষতার প্রমাণ দিয়ে ২০০২ খ্রীষ্টিয় সালে চাকরি জীবন থেকে অবসরে যান। এছাড়াও তিনি শিক্ষা সংক্রান্ত ও ধর্মীয় বিষয় সংক্রান্ত বিভিন্ন কমিটির সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন। সরকারি চাকরির অবসরে যাওয়ার পরে রাজনীতি সচেতন হিসেবে তাঁর এলাকায় সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। তাঁর জীবনের এক বড়ো গৌরবের অধ্যায় হচ্ছে, তিনি ১৯৭১ খ্রীষ্টিয় সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বপক্ষে জোরালো ভূমিকা রেখেছেন এবং সেজন্যে পাকিস্তানি হানাদার ও ও তাদের দোসররা তাঁর বাড়িতে হামলা করে ও লুটপাট চালায়।
তাঁর সন্তানদের সম্পর্কে কিছুটা লেখা দরকার। তাঁর সন্তানরা সকলেই শিক্ষিত ও সমাজে বিভিন্ন স্তরে প্রতিষ্ঠিত। পর্যায়ক্রমে তাঁর বড়ো ছেলে মো. আজিজুর রউফ বিপ্লব সুনামগঞ্জ জেলা জজকোর্টে একজন আইনজীবী হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন এবং আচরণে খুবই ভদ্রলোক।
দ্বিতীয় মো. মাসুদুর রউফ পল্লব একজন অধ্যক্ষ হিসেবে আব্দুল মজিদ কলেজ, সুনামগঞ্জ জেলার একটি কলেজে কর্মরত আছেন, তৃতীয় মো. মাহমুদুর রউফ দুর্লভ এম কম পাস করে একজন সফল ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা, মো. মিজানুর রউফ সুলব মাস্টার্স ডিগ্রী পাস করে বিভাগীয় শহর সিলেটে একটি প্রাইভেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, মো. মাহবুবুর রউফ নয়ন যেমন চঞ্চল তেমনি মেধাবী, এইটুকু জীবনে তাকে বহু রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে দেখেছি, তার এ-পর্যন্ত ভদ্র আচরণ তাকে সকল স্থানে গ্রহণযোগ্য হতে সাহায্য করেছে, ইংলিশ সাহিত্য নিয়ে মাস্টার্স পাস করে সিলেটের একটি কলেজে (মইন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজে) শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত এবং বর্তমানে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যে আছেন, মো. মতিউর রউফ চয়ন ট্রাস্ট ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেবে সুনামগঞ্জে এবং মো. মিছবাউর রউফ জীবন ট্রাস্ট ব্যাংকে সুনামগঞ্জে কর্মরত।
আজীবন শিক্ষক মোঃ আব্দুর রউফ স্যারের মেয়েরাও শিক্ষায় এগিয়ে আছেন। তাঁর দুই মেয়ে মোছা. পারভীন ফেরদৌসী লুসি ও মোছা. শারমিন ফেরদৌসী ইতি হাইস্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে আছেন এবং মোছা. নাসরিন ফেরদৌসী ডেইজি ও মোছা. নাজনীন ফেরদৌসী নাইসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। এরমধ্যে মোছা. নাজনীন ফেরদৌসী নাইসি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।
একজন শিক্ষকের পরিবার হিসেবে মো. আব্দুর রউফ স্যারের উল্লেখিত পারিবারিক কাঠামো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে যেকোনো মননশীল মানুষ বুঝতে পারবেন- এটি একটি শিক্ষিত পরিবার। এ থেকে আমরা আশাবাদী এমন পরিবার হবে আমাদের সমাজের সুন্দর পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সম্ভাব্য অনুস্মরণীয় ও অনুকরণীয়। সব মিলিয়ে মো. আব্দুর রউফ স্যার এলাকার গৌরব সন্তান, তিনি সুনামগঞ্জ জেলার বরেণ্য শিক্ষক।
ধর্মীয় শিক্ষায় এবং বৈজ্ঞানিকভাবে এটা প্রমাণিত যে- মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বা সকল সৃষ্টির সেরা। মানুষের এই সেরা হয়ে উঠার সহায়ক হচ্ছে শিক্ষা ও জ্ঞানার্জন। আর শিক্ষা ও জ্ঞানার্জনে একেকজন শিক্ষকের ভূমিকা সর্বাগ্রে স্বীকার করতে হয়। সেদিক থেকে অনেক অনেক মানুষকে পেয়েছি যারা মো. আব্দুর রউফ স্যারের গড়া। আমরা জানি, পড়াশোনা বা পড়ালেখার মূল উদ্দেশ্য হলো, শোনা, জানা এবং জ্ঞান চর্চা দ্বারা জ্ঞান অর্জন করা। জীবনকে সুন্দর করে সাজাতে এবং সম্মিলিতভাবে সকলে সুন্দর জীবন উপভোগ করতে প্রয়োজন অধিক অধিক পরিমাণে জ্ঞান সমৃদ্ধ মানুষের সমাজ। অথচ, এখনও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মাথায় ছাত্র জীবনের শুরুতেই এমন কতোগুলো বাক্য চাপিয়ে দেয়া হয় যা চূড়ান্ত পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে জ্ঞান চর্চার দিকে আকৃষ্ট না-করে কেবলই পরীক্ষায় পাস করার নেশায় আসক্ত করে। মনে মনে লক্ষ্য স্থির হয়ে যায় একেকটি শ্রেণির পরীক্ষা পাস করে যেনতেন প্রকারে একটা চাকরি নিয়ে প্রচুর টাকা স¤পদের মালিক হয়ে যাওয়া। সেদিক থেকে মো. আব্দুর রউফ স্যারের শিক্ষা কৌশল অনুকরণীয়। তাঁর পড়ানোর উদ্দেশ্য থাকতো শিক্ষার্থীদেরকে জ্ঞানার্জনের দিকে মনোযোগী করা।
শুধুমাত্র সঠিক পথে জ্ঞানচর্চায় মনোনিবেশ করতে না-পারার কারণে জ্ঞান-বিজ্ঞানে অনেক এগিয়ে যাওয়া একবিংশ শতাব্দীতেও মানুষ মেকি আনন্দ ও মেকি অহংকার নিয়ে অধিক রংতামাশা করে।
মেকি ও মিথ্যা মোহে অধিক মজে থাকা অন্ধকারে পড়ে থাকার সামিল। এভাবে কোনো মানুষ কোনো পরিবার বা কোনো সমাজ আলোকিত হতে পারে না। মানুষ তখনই সঠিক আলোয় আলোকিত হতে পারে যখন আসল শিক্ষা পেয়ে জ্ঞানার্জন দ্বারা অন্ধকার দূর করতে পারে। সেজন্যে প্রথমে প্রয়োজন প্রত্যেকে সঠিক শিক্ষকের দেয়া জ্ঞান চর্চা করে নিজেকে আলোকিত করা। আমার এই নিবন্ধের আলোচ্য আজীবন শিক্ষক মোঃ আব্দুর রউফ স্যার ২০২৪ খ্রীষ্টিয় সালের ৯ নভেম্বর প্রায় আশি বছরের ইহকালের জীবন যাপন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি সামাজিক ন্যায় বিচারক ও ধর্মপরায়ণ ছিলেন। বরেণ্য ব্যক্তিত্ব মো. আব্দুর রউফ স্যার তাঁর একান্ত আপন পরিবার ও শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিয়ে গেছেন।
[লেখক : মোহাম্মদ আব্দুল হক, কলামিস্ট ও কথাসাহিত্যিক]